ফরিদপুর প্রতিনিধি : বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে ফরিদপুর জেলাজুড়ে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। গত দুদিনের টানা বৃষ্টিতে জেলা শহরের বেশির ভাগ এলাকার সড়কে পানি উঠেছে।জলাবদ্ধতার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ম আয়ের মানুষ।এছাড়া ফরিদপুর সদর, সদরপুর ও চরভদ্রাসনের চরাঞ্চলের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
গত শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হওয়া এই বৃষ্টিপাত আরও দু-একদিন চলবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
বৃষ্টির কারণে শ্রমজীবী মানুষরা অসহায় হয়ে পড়েছে।বিশেষ করে দৈনন্দিন উপার্জনের ওপর নির্ভরশীল দরিদ্র পরিবারগুলো নিদারুন কষ্টে পড়েছেন। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে আমন ধানের ক্ষেত।
পানিতে ভেসে গেছে বেশ কিছু মাছের ঘের, পুকুর ও ফসলি জমি। নিমজ্জিত হয়েছে চরাঞ্চলের অসংখ্য ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট।
এছাড়া অপরিকল্পিত মৎস্যঘের ও পানি অপসারণের তেমন কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় জেলা শহরের মানুষের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর। তাদের অভিযোগ দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও পানি নিষ্কাশনের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি পৌরসভা।
জলবদ্ধতায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় গ্রামাঞ্চলে নৌকা ও ডোঙায় করে চলাচল করতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। নর্দমা আর বৃষ্টির পানিতে একাকার হয়ে গেছে লোকালয়। ঘরের ভেতরে প্রবেশ করেছে নোংরা পানি। ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। বিশুদ্ধ পানির সংকট আর বিভিন্ন রোগ বালাইয়ে বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে বেশ কিছু এলাকা। বেড়েছে সাপ ও পোকা মাকড়ের উৎপাত।
সাইফুল ইসলাম নামে এক পথচারী বলেন, ‘দুদিনের লাগাতার বৃষ্টিতে জেলা শহরের প্রায় সবগুলো সড়ক পানিতে প্লাবিত হয়েছে। শহরে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই এভাবে তলিয়ে যায়। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। ’
জেলা শহরের গুহলক্ষ্মীপুর এলাকার রিকশা চালক ছুরাপ খাঁ বলেন, ‘দুদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে। খুবই অসহায় হয়ে পড়েছি। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে রিকশা নিয়ে সড়কে নেমেছি। রাস্তাগুলো গর্ত হয়ে গেছে, পানিতে পাকা সড়কে গর্ত দেখা যায় না। লোকজন নেই, তারপরও দুই চারজন যাত্রী পাচ্ছি। তাদের বহন করে যে টাকা ভাড়া পাচ্ছি তা দিয়েই সংসার চালাতে হবে। ’
ফরিদপুর জেলা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্ন চাপের ফলে এ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে দু-একদিনের মধ্যে এর কিছুটা উন্নতি হতে পারে।