সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি নাজমুল হক।
বিশেষ প্রতিবেদক : ইজারা বিহিনী ধোপাজান চলতি নদীতে খনিজ বালি পাথর লুপাট ও চুরিতে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে।সুনামগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।মঙ্গলবার সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জাকির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মঙ্গলবার পুলিশ হেডকোয়াটার্সের দায়িত্বশীল সুত্র জানায়, ইজারাবিহিন সীমান্ত নদী ধোপাজান চলতি নদীতে বালি লুপাট ও চুরিতে সহযোগিতা এবং অনৈতিকভাবে আর্থিক সুবিধা নিয়ে বালু বোঝাই ইঞ্জিন চালিত বাল্ক হেড , নৌকা ছেড়ে দেওয়া, লুপাটে, চুরিতে উৎসাহিত করার দায়ে ইতোমধ্যে জেলার চার পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এমন অভিযোগ উঠায় ও প্রাথমিক ভাবে জড়িত থাকার প্রমাণ সাপেক্ষে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের( ডিবি)’র ওসি আমিনুল ইসলামকে পুলিশ হেডকোয়াটার্সের নির্দেশে পার্বত্য অঞ্চলে এপিবিএন’এ বদলি করা হয়।
এছাড়া সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার ধোপাজান নদীতে দায়িত্ব পালনে অবহেলার জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এসআই ওয়াসিম ও সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসি (তদন্ত) ওয়ালি আশরাফকে দুর্গম থানা শাল্লায় বদলির আদেশ প্রদান করেন। একই কান্ডে এসআই রাব্বির বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।
ওই চার পুলিশ অফিসার সহ জড়িত অন্যান্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে দায়িত্ব পালনকারী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম শুক্রবার অভিযুক্তদের কাছ থেকে লিখিত বক্তব্য নিয়েছন।
প্রসঙ্গত, গেল টানা কয়েকদিন ধরে কয়েকদিন স্থানীয়, আঞ্চলিক ও একাধিক জাতীয় দৈনিকে ধোপাজান চলতি নদীতে খনিজ বালি পাথর লুপাট ও চুরির প্রসঙ্গে এবং পুলিশের সম্পৃক্ততা নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
ওখানে সরেজমিনে যাওয়া গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে বালু লুপাটে ও চুরিতে থাকারা এসআই রাব্বি ও ওসি তদন্ত ওয়ালি আশরাফসহ ডিবি পুলিশকে বালি বোঝাই বাল্কহেড,নৌকা ধোপাজান চলতি নদীর নৌপথ অতিক্রম করার পুর্বেই মুঠোফোনে কল করে কন্ট্রাক্ট করতেন, বাল্কহেড, নৌকার নাম, মাঝি, সুকানীর নাম এবং ফোন নম্বর পাঠাতেন সেসব তথ্যও জানিয়েছেন। তারা এটিও জানিয়েছেন, বালু-পাথর বোঝাই বাল্কহেড বা নৌকা চলতি নদীর মুখ পাড় হয়ে যাবার পর সংশ্লিষ্ট পুলিশের টাকা শহরে গিয়ে নগদে পরিশোধ করতেন। শহরের লঞ্চঘাটে কিংবা থানার আশপাশে গিয়ে বাল্কহেড বা নৌকা প্রতি হারে হিসেব করে টাকা দিয়ে আসতেন বলেও জানিয়েছেন বালু লুটেরা ও চোর চক্রের সদস্যরা। যা একাধিক গণমাধ্যমের প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে এসব অপকর্মে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি নাজমুল হক চালকের আসনে থেকে বালি লুট চুরি কান্ডে নিয়মিত ঘুসের বড় অংকের ভাগ পেতেন।
মঙ্গলবার তদন্ত কার্যক্রমের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বললেন, তদন্তকাজ চলমান রয়েছে, তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার পর অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের ব্যাপারে পুলিশের উধ্বর্তন অফিসারগণ কি ধরণের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করেন তা পরে জানানো হবে।