জাতীয় প্রেসক্লাবে গনপিটুনির শিকার ভূয়া সাংবাদিক কামাল

অপরাধ এইমাত্র জাতীয় ঢাকা রাজধানী

আজকের দেশ রিপোর্ট : শনিবার জাতীয় প্রসক্লাবে দৈনিক ভোরের পাতার সাংবাদিক পরিচয়ে দানকারী কামাল হোসেন নামে এক ভূয়া সাংবাদিক গণপিটুনির শিকার হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ৭ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাচনে বিজয়ীদের অভিষেক অনুষ্ঠান চলাকালে ঢাকা সংবাদিক ইউনিনের সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্যের সাথে বেয়াদবী করে কথিত এই সাংবাদিক পরিচয় দানকারী কামাল। বেয়াদবীর এক পর্যায়ে কামাল আবু জাফর সূর্যকে বলে, সাংবাদিক ইউনিয়নের অফিসে কি আপনার। কামালের এই বক্তব্যে উপস্থিত সাংবাদিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে এক পর্যায়ে কামালের পরিচয় জানতে চায়। তখন সে, নিজেকে ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ভোরের পাতা পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দেয়। সাংবাদিকরা তার পরিচয়পত্র ও ভিজিটিং কার্ড দেখতে চাইলে কামাল কোনরকম পরিচয়পত্র বা ভিজিটিং কার্ড দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করে। এমতস্থায় উপস্থিত সাংবাদিকরা কামালকে উপর্যোপরি উত্তম-মাধ্যম দিয়ে প্রেসক্লাব থেকে বের করে দেয়। খবর নিয়ে জানা যায় ভোরের পাতার সাংবাদিক পরিচয় দানকারী ভূয়া সাংবাদিক কামাল নিজেকে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নবনির্বচিত সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদের কাছের লোক বলে ভিন্ন মহলে পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি শুরু করেছে। কামালের চাঁদাবাজি ক্ষেত্র হল বিএসটিআই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সকল সংস্থা সমূহ এর মধ্যে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর উল্লেখযোগ্য। ঔষধ প্রশাসনের এক শ্রেণীর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি সিন্ডিকেট অধিদপ্তরের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারি ও সাধারণ নিরিহ গোছের ঔষধ কোম্পানি মালিকদের হয়রানী করছে। কামাল ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তার কক্ষে গিয়ে বিভিন্ন কোম্পানীর গুরুত্বপূর্ণ নথি দেখে ঐ সব কোম্পানীকে হয়রানি করে। এছাড়া কামাল মহাখালী স্বাস্থ্য ইনিষ্টিটিউটের ভেতরে নিপসম এর মাঠে স্থানীয় মাদকাশক্তদের নিয়ে একটি গ্রুপ তৈরী করেছে। কোন ঔষধ কোম্পানীর মালিক কামালের অবৈধ চাহিদা পূরণ না করলে কামাল মাদাকাশক্ত ওই স্থানীয় গ্রুপকে দিয়ে ঔষধ প্রশাসনে যাওয়া আসার পথে কোম্পানীর মালিকদের ধরে নিয়ে স্বর্বস্ব কেড়ে নেয়। অনেক সময় কোম্পানীর মালিকদের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ছাদে নিয়ে তাদের স্বর্বস্ব কেড়ে নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এই সব অভিযোগের বিষয়ে ঔষধ অধিপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) সফিকুল ইসলাম অবগত হওয়ার পর তিনি কামালকে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেন। তার বদলির পর কামাল ঔষধ অধিপ্তরের কয়েকজন দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তার ছত্রছায়ায় আবারো ঔষধ প্রশাসনে প্রবেশ করে বিভিন্ন রকম অপকর্ম করছে। কামাল একদিকে ঔষধ অধিদপ্তরে চাঁদাবাজি করছে, অন্যদিকে ঔষধ অধিপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর মালিকদের নিকট পাচার করে অবৈধ সুবিধা নিচ্ছে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গার ওয়েষ্ট ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু) এবং ঢাকার শেড ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু) এবং ঢাকা অরগানিক ফার্মা (ইউনানি) উল্লেখযোগ্য। এ সব কোম্পানীর মালিকরা কামালকে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা দিয়ে লালন পালন করছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তারাও কামালের মাধ্যে চাঁদাবাজি করছে বলে নামা প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগি ঔষধ কোম্পানীর মালিকরা জানিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কতিপয় কর্মচারি জানায় কামাল তাদেরকেও বিভিন্ন রকমের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়। প্রশাসনের বেশ কয়জন কর্মকর্তার সাথে কামালের সক্ষ্যতা থাকায় তারা প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। এই বিষয়ে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নবনির্বাচিত সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি আজকের দেশকে বলেন, কামাল নামে কাউকে তিনি চিনেন না বা তার সাথে পরিচয় নাই। তবে প্রেসক্লাবের গন্ডোগোলের বিষয়টি তিনি শুনেছেন এবং বিষয়টি দুঃখজনক বলে তিনি জানান। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ড. কাজী এরতেজা হাসানের বক্তব্য জানতে ভোরের পাতার অফিসের ৮১৮৯১৪১ এবং ৮১৮৯১৪২ নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে আব্দুল হাকিম ও আব্দুল জাব্বার নামে দুই জন বলেন কামাল নামের কাউকে তারা চিনেন না। ড. এরতেজা হাসানের মোবাইল নাম্বার ও তাদের কাছে নাই তারা সম্পাদকের ব্যক্তিগত সহকারী আশিকুর রহমানের মোবাইল নাম্বার দিয়ে তার সাথে কথা বলতে বলেন। আশিকুর রহমানের মোবাইলে(০১৩১৬০৩৭৫৭৮) কথা বললে তিনি ও কামালকে চিনেন না বলে জানান এবং ড. এরতেজা হাসানের নাম্বার চাইলে তিনি তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে অন্য মাধ্যেমে ড. এরতেজা হাসানের নাম্বার সংগ্রহ করে তার (০১৭১১৫৮২৭০৮) নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে ভোরের পাতার সম্পাদক মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য প্রকাশিত হলো না। এই বিষয়ে ঔষধ প্রশাসান অধিপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) রুহুল আমিনের বক্তব্য জানতে তার মোবইলে (০১৭৭৭৯৭১৪০৪) যোগাযোগ কারা হলে তিনিও মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য প্রকাশ করা গেলো না। স্বঘোষিত সাংবাদিক কামালের বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে (০১৭১৫৪২১২২০) যোগাযোগ করা হলে মোবইল বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য প্রকাশিত হল না।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *