এসির মাধ্যমেও ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাস!

এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন রাজধানী স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৬ হাজার ১৯৫ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬শ জনে। এছাড়া এই ভাইরাসে আক্রান্ত ৬০ হাজার ১৯০ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। বিশ্বব্যাপী ১০৩টি দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে।
তবে করোনাভাইরাসের উৎস কী, কার মাধ্যমে ছড়িয়েছে- এসব এখনও অজানা। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় গবেষকরা। আসেনি কোনও ওষুধ বা প্রতিষেধকও। এর মধ্যেই পাওয়া গেল নতুন এক আতঙ্কের খবর। শুধু মানুষের সংস্পর্শেই নয়, এয়ারকন্ডিশনের (এসি) বাতাসের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে করোনাভাইরাস।
শুক্রবার আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে এই সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, নভেল করোনাভাইরাসকে যতটা সংক্রামক ভাবা হচ্ছিল, এটি তারচেয়েও ভয়াবহ। শুধু করোনা আক্রান্তদের স্পর্শ করলে বা তাদের হাঁচি-কাশি, মুখের লালা থেকে নয়, প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে এসির মধ্য দিয়েও।
সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে করোনা আক্রান্ত তিন রোগীর ব্যবহৃত রুমগুলো পরীক্ষা করেন দেশটির ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিজেসের বিশেষজ্ঞরা। এসময় এক রোগীর রুমের এয়ার ডাক্ট-এ করোনাভাইরাসের নমুনা পান তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের পারডু ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জেমস জি ডয়ার বলেন, এধরনের ব্যবস্থায় সাধারণত পাঁচ হাজার ন্যানোমিটারের চেয়ে ক্ষুদ্র কণাগুলো আটকায় না। নভেল করোনাভাইরাসের প্রকৃত আকার এখনও নিশ্চিত নয়। তবে একই গোত্রের সার্স ভাইরাসের আকার রেকর্ড করা হয়েছিল ১২০ ন্যানোমিটার। সেক্ষেত্রে, এনসিওভি-১৯’র আকারও তেমনই হবে, যা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় আটকাবে না।
তার মতে, এসির মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে প্রমোদতরী ও বিমানগুলো। যদিও ইতিহাদ এয়ারলাইন্স দাবি করেছে, তাদের বিমানগুলোর শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা হাসপাতালের মতোই অত্যাধুনিক। এটি যেকোনও ভাইরাস ফিল্টার করতে সক্ষম।
এদিকে, এসির মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার খবরে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো বন্দরে আটকা পড়া গ্র্যান্ড প্রিন্সেস প্রমোদতরী নিয়ে। জাহাজটির ২১ আরোহীর শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন প্রায় সাড়ে তিন হাজার যাত্রী-ক্রু। এটিকে অবাণিজ্যিক কোনও বন্দরে নিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রেখে সবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবে মার্কিন প্রশাসন। এর আগ পর্যন্ত সব যাত্রীকে নিজ নিজ কেবিনে থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এর আগে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে আটকা পড়েছিল ব্রিটিশ প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেস। সেখানে দুই সপ্তাহের বেশি আটকা (কোয়ারেন্টাইন) ছিলেন অন্তত ৩ হাজার ৭০০ আরোহী। এ পর্যন্ত জাহাজটির সাত শতাধিক যাত্রী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন ছয়জন। এবার গ্র্যান্ড প্রিন্সেসেরও অনেকটা একই পরিণতি হতে চলছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *