এম এ এইচ শাহীন (কোম্পানীগঞ্জ) : সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে ধলাই সেতুর নিচ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন থামছে না। প্রতিদিন শতাধিক বারকি নৌকার মাধ্যমে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছেন কারবারিরা। সেতুর নিচ এবং দুই পাশে ৫০ থেকে ২০০ গজের মধ্যে বালু উত্তোলনের ফলে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে সেতুটি। সরেজমিন ধলাই সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সেতুর দুই পাশে এবং নিচ থেকে অবাধে বালু উত্তোলন চলছে। বারকি নৌকায় করে বালু তুলে নদীর পাড়ে স্তূপ করে রাখা হয়।
পরে ট্রাক্টরে করে নেওয়া হয় পাশ্ববর্তী বিভিন্ন সাইটে। সেখানে পেলোডারের মাধ্যমে হাইড্রোলিক ট্রাকে লোড দিয়ে বালু বিক্রি করা হয়। স্থানীয়রা জানান, গত দেড়-দুই মাস ধরে এই অবৈধ কারবার চলছে। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা দায়সারা গোছের দুয়েকটি অভিযান দিয়েছেন। ফলে কারবারিরা বেপরোয়া হয়ে গেছে।
নির্বিঘ্নে বালু উত্তোলন চলছেই। ফলে সেতুটি ঝুঁকিতে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত ৫ নভেম্বর ধলাই ব্রীজের নিচ থেকে বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধের জন্য কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন রুস্তমপুর গ্রামের মোঃ ফয়জুল হক।
অভিযোগে তিনি জড়িতদের অনেকের নাম উল্লেখ করেন। কিন্তু অজানা কারণে পরবর্তীতে অভিযোগের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বর্তমানে প্রায় প্রতিদিন স্থানীয়দের অনেকেই ফেসবুকে নিজ নিজ আইডিতে ব্রীজ রক্ষার স্বার্থে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন এবং প্রতিবাদ করছেন। ১৪ ডিসেম্বর Md Sadok Ali ফেসবুক আইডিতে স্থানীয় একজন ৫৭ সেকেন্ডের একটি Reel ভিডিও শেয়ার করেন। ভিডিওতে তিনি সকাল বেলা ব্রীজের নিচ থেকে অসংখ্য বারকি নৌকার মাধ্যমে বালু-পাথর উত্তোলনের দৃশ্য দেখান এবং প্রতিবাদ করেন।
গত ১৬ ডিসেম্বর বিকাল ৫ টায় Ahmed Suhel নামের আইডিতে স্থানীয় আরেকজন ৪ মিনিট ১৮ সেকেন্ডের একটি লাইভ ভিডিও শেয়ার করেন। লাইভে তিনি কালাসাদেক বিজিবি পোস্টের কাছেই ব্রীজের নিচ থেকে বালু উত্তোলনের দৃশ্য দেখান এবং প্রতিবাদ করেন। জানা গেছে, ব্রীজের কাছে এবং নদীর পাড়ে বাড়ি ও জমির দখল থাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ বালু ব্যবসা করছেন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী অনুসারী ফরিদ মিয়া, আনোয়ার, আব্দুল্লাহ, কালা মিয়া, ডিবল, দুলু মিয়া ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির ভাতিজা বিলাল মিয়া।
এ ছাড়াও বালু ব্যবসার জন্য তারা একাধিক সাইট ভাড়া দিয়ে হাইড্রোলিক ট্রাক প্রতি ১ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করছেন।অদৃশ্য কারণে এসব কথিত জমির মালিক ও বেপরোয়া বালুখেকো সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে না যথাযথ আইনি পদক্ষেপ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান জানান, কয়েকজন (বালু তুলতে) নামছে জানতে পেরেছি। সংবাদ পেয়ে আমরা লোক পাঠিয়েছি। গ্যাপ পেয়ে তারা এসব করতেছে। এ রকম হলে আমরা আগের মত হার্ড লাইনে অভিযান পরিচালনা করবো। কিন্তু রাস্ট্রীয় সম্পদ বালু ও পাথর খেকোরা দীর্ঘদিন যাবত বালু ও পাথর লুট করেই চলেছে।