# অপকর্মের দায়ে ইতোপূর্বে আটক হলেও অদৃশ্য কারণে ছেড়ে দেয় পুলিশ # কামালের উপদেষ্টা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান একাধিক হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার হলে বিভিন্ন মহলে কামালে দৌড়ঝাঁপ #
নিজস্ব প্রতিনিধি (বাগেরহাট) : বাগের হাট জেলার কচুয়া উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কামালের উপদেষ্টা মেহেদি হাসান বাবু গ্রেফতার হলেও ঠিকাদার কামাল ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছেন। ইতোপূর্বে কচুয়া থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেও অদৃশ্য কারণে আবার ছাড়া পেয়ে যান। তার ছেলের বিরুদ্ধেও মাদক কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
বিএনপির সুবিধাভোগি একটি অংশ কামালের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে তার অপকর্ম আড়াল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। যে কারণে দলের নিবেদিত কর্মীরা হতাশ। কামালের উপদেষ্টা আওয়ামীলীগ মনোনিত সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মেহেদি হাসান বাবুর আশির্বাদপুষ্ট হয়ে অঢেল সম্পদের মালিক বনে যাওয়া কামাল আবার বিএনপি তে ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। কামাল আটক না হওয়ায় দলের ভেতরে অস্বস্তি বাড়ছে। সাবেক নির্বাচিত চেয়ারম্যন বাবুর ছত্রছাঁয়ায় অতিবেপরোয়া হয়ে উঠেন ঠিকাদার কামাল।
বৈষম্যবিরোধি ছাত্র আন্দোলনে ৫ অগাস্টের পর স্থানীয়দদের তোপের মুখে পড়েন তিনি। বাবু সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান পলাতক থাকালে কামালের ঝামেলা সামাল দিতে বাগের হাট যুবমহিলা দলের নেত্রী সাহিদা আক্তারের নের্তৃত্বে বিএনপির প্রভাব খাটিয়ে অর্থ কামানোর ধান্দায় আবারও সক্রীয় হয় হাইব্রিড কামাল। আবার বিএনপিতে যোগ দিতে প্রচুর আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ সাহিদার বিরুদ্ধ। রব , কবির , পলাশ মাছের ঘের দখল করলে কৌশলে পলাশ হত্যার কলকাঠি নাড়ছেন কামাল। আবার কেউ কেউ ধারণা করছেন পলাশ হত্যায় কামালই মাস্টার মাইন্ড।
জানা গেছে বাগের হাট জেলার হতদরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা কামাল সরদার। তার পিতা ছিলেন একজন দিনমজুর। কামাল শ্রমিকের কাজ করলেও আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলে ঘুরে যায় ভাগ্যের চাকা। তবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগের তকমা লাগিয়ে মাহফুজ চেয়ারম্যানকে ব্যবহার করে বাগেরহাট জেলার পুলিশ লাইনে খাদ্য সমগ্রী সরবরাহের ঠিকাদারি কাজ করে আসছেন।
খাদ্য সমগ্রীর তালিকায় চাল ,ডাল , চিনি , আটা , ভোজ্যতেল , ও জ্বালানিকাঠ রয়েছে। ওই জেলায় একাধিক ঠিকাদার থাকলেও অযৌক্তিক কারণে ১৬ বছর যাবত একই ব্যক্তি পুলিশ লাইনে ঠিকাদারি করে আসছেন। এছাড়া কুমার গড়িয়া সরকারি জমি দখল করে তিনটি মাছের ঘের করেছিলেন কামাল সরদার। গত ৫ অগাস্ট বৈষম্যবিরোধি কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকার পতন হলে স্থানীয়দের নজরে আসলে তোপের মুখে পড়েন কামাল ঠিকাদার।
পরে উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সাবেক সেনা সদস্য আব্দুল রব ও ওয়ার্ড সভাপতি ও কবিরের নের্তৃত্বে পলাশ ওই ঘের দখল করেন। এতে কামাল সরদার ক্ষুব্ধ হয়ে কৌশলে গত ২৯ অক্টোবর রাতে পলাশ কে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে। তবে ওই হত্যায় কামালের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছে সুশীল সমাজের একটি অংশ। হত্যায় জড়িত আসামীদের বাঁচাতে কামাল সরদার মোটা অংকের আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। তবে শুধু টাকা দেননি তিনি আবার বি এনপিতে যোগ দেওয়ার কথাও রযেছে । কামালের অপকর্ম ঢাকতে এবং ঠিকাদারি করতে বিএনপির টিকিট পাওয়া জরুরি হওয়ায় পলাশ হত্যার মাস্টার মাইন্ড।
হত্যার আগে সন্ধ্যার পরে কামালের ঘের দখলের ভাগের টাকা দেওয়ার কথা বলে ঘরথেকে ডেকে এনেছিল পলাশকে। এই মামলার হুকুম দাতা খুনি কামালের নাম ধরাছোঁয়ার বাইরে গোপন রয়েছে। কীভাবে একই ব্যক্তি নিয়মিত খাদ্য সরবরাহ করে নানা প্রশ্নের সম্মূখীন হন কামাল। তবে জনগণ ক্ষুব্ধ হলেও সকল বাধা উপেক্ষা করে নিজ অবস্থানে সক্রীয় থাকেন কামাল। সাম্প্রতিক জিরো থেকে হিরো কামাল এখন টপ অফ দা সিকরেট পরিনত হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের দাবি মোটা অংকের টাকা খরচ করে স্থানীয়দের ম্যানেজ করে দ্রুত ঝামেলা মিটিযে ফেলেন কামাল। আবার সাম্প্রতিক সময়ে কিছু আইটেম কমলেও চাল. ডাল , ও জ্বালানি সাপ্লাই অব্যহত রেখেছেন। তবে বিগত ১৬ বছরে ঠিকাদারি করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।
তার শ্ক্ষিাগত যোগ্যতা দ্বিতীয় শ্রেণির গন্ডি পেরুলেও সোস্যাল ইসলামি ব্যাংকিংয়ের (এসআইবিএল) এজেন্ট লাইসেন্স করেন। চন্দ্রপাড়া থেকে কচুয়া সড়কে বাদাল বাজারে নিজের ভবনে ব্যাকিং কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। সাড়ে পাঁচ একর জমির ওপর চন্দ্রপাড়ায় একটি মাছের ঘের এবং সাইনবোর্ড টু কচুয়া সড়কে দোবাড়িয়ায় একবিঘা জমির ওপর নির্মিত কাঠ কাটার সামিল নির্মাণ করেছেন। এছাড়াও নামে বেনামে এফডিয়ারসহ একাধিক মাছের ঘের ব্যাংকডিপোজিট ও অন্যন্য সম্পদের মালিক বনে গেছেন।
বর্তমান ঠিকাদার কামালের সম্পদের বাজার মূল প্রায ৫০ কোটি টাকা। নবজাগরণ পত্রিকার অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে। কামালের সকল সম্পদের নির্দিষ্ট ঠিকানা ফুটেজসহ প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে। তবে পলাশ হত্যায় জড়িত থাকার ঘটনার আদ্যোপান্ত আসতেছে পরবর্তী সংখ্যায়। যথাযত সময় প্রকাশ করা হবে চোখ রাখুন নবজাগরণ অনলাইন ও পত্রিকার পেইজে পরবর্তী সংখ্যায়।
এ দিকে ২০০৫ সালে কামাল সরদার তিনশত টাকা দৈনিক হাজিরায় অন্যের খামারে শ্রমিকের কাজ করতেন। তার বাবা মানিক সরদার ছিলেন একজন দিন মজুর চন্দ্রপাড়ায় পৈত্রিক ভিটেবাড়িতে স্বপরিবারে বসবাস করতেন। ইতোপূর্বে মারা গেছেন। ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলে কোনো এক অদৃশ্য শক্তির ইশারায দিন মজুর কামাল পেয়ে যান সুশৃঙ্খল পুলিশ বাহিনীর খাদ্য সরবরাহের ঠিকাদারি লাইসেন্স। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়না।
শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও ঠিকাদারিসহ সোস্যাল ইসলামি ব্যাংকিং এজেন্ট লাইসেন্স করেন। শুরু হয় আধিপত্যের পালাবদল। ন্যূণতম শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকায় ঠিকাদারিসহ বিভিন্ন কাজের লাইসেন্স পাওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তবে এ লাইসেন্স পাওয়ায় রাজনৈতিক নেতাসহ বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপারের হাত রয়েছে বলে ধারনা করছেন সংশ্লিষ্টজনরা।
এসব অনিয়ম এবং শ্রমিক থেকে ঠিকাদার কীভাবে সম্ভব জানতে চাইলে কামাল সরদার গণমাধ্যম’ কে বলেন, আমি কখনো দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না তবে টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ নিয়েছি। বাগের হাট জেলায় একাধিক ঠিকাদার থাকতে আপনি প্রতিবছর কীভাবে টেন্ডারে একাই কাজ বাগিয়ে নিলেন,এমন প্রশ্নের কোনো সদোত্তর না দিয়ে , আমার কাজ আছে আমি একটু ব্যস্ত বলে ফোন কেটে দেন। আমার ওপর বিএনপির লোক ক্ষিপ্ত হলে আমি তাদেরকে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে ঝামেলা মিটাইছি। পরে ফোন দিলে এবিষয় বক্তব্য দিবেনা বলে জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় দুই বাসিন্দা প্রতিবেদক”কে বলেন , কামাল লেখাপড়া জানেন না তবে প্রতিবছর কাজ পাওয়ার বিষয়টি এলাকায় চাউর হলে তোপের মুখে পড়েন কামাল। আবার স্থানীয়ভাবে টাকা পয়সা খরচ করে ঝামেলা মিটিয়ে ফেলেছেন। তবে বাগের হাট জেলার একাধিক ব্যক্তিকে দিয়ে নিউজ না করার জন্য অনুরোধ করেন।