ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় এ বছর নতুন বইয়ের গন্ধ পাই নাই প্রায় ২০ হাজার শিশু-কিশোর শিক্ষার্থী। সোমবার উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে পাঠ্য বই ছাড়াই কাশ করছে শিশু ও কিশোররা। বছর ঘুরে নতুন শ্রেনীতে উঠেও নতুন বই প্রাপ্তীর আনন্দ বঞ্চিত শিশুরা ক্রাশে বসে শুধু শিক্ষকের মুখ থেকে পাঠ নিয়ে চলেছেন। কিন্তু নতুন বইয়ের অভাবে এ বছর এখনো বাড়ীতে অধ্যায়ন করার কোনো সুযোগ হয়নি শিক্ষার্থীদের।
ফলে স্কুলে বই ছাড়া উৎসব বিমূখ পাঠদান উপজেলার শিশু-কিশোরদের মধ্যে অনাগ্রহতা দেখা দিয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলায় রয়েছে ১৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি দাখিল মাদ্রাসা ও ৫৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
এছাড়া উপজেলার আরও ১০টি কেজি স্কুলের শিক্ষার্থী মিলে প্রায় ২০ হাজার শিশু-কিশোর শিক্ষার্থী এখনো হাতে পাই নাই কোনো নতুন বই। এদের মধ্যে উপজেলার প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় ১২ হাজার ১০৮ সেট নতুন বই দরকার, মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রায় ৬ হাজার ৯১০ সেট বই এবং মাদ্রাসা পর্য়ায়ে আরও প্রায় ৫শ’ সেট বই সহ মোট প্রায় ২০ হাজার সেট নতুন বইয়ের অভাবে ঝিঁমিয়ে পড়েছে উপজেলার মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা ব্যাবস্থা।
সেমাবার দুপুর ১২টায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে গিয়ে দেথা যায়, শিক্ষা অফিসার স্কুল ভিজিটে গেছেন। তবে সহকারী শিক্ষা অফিসার জামাল হোসেন জানান, “এ বছর এখনো উপজেলায় কোনো নতুন বই আসেনি। গতকাল আমরা প্রেসে কথা বলেছি, আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কিছু বই আসতে পারে”।
একই সময় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে খোজ নিলে উক্ত অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মোহাম্মদ ইয়াহিয়া জানান, “ গতকাল শুধুমাত্র সপ্তম ও দশম শ্রেনীর বাংলা, ইংরেজী ও গণিত এই তিন বিষয়ের বই এসেছে কিন্ত বিতরন হয় নাই। অন্য কোনো শ্রেনীর বই এ বছর এখনো আসে নাই”।
উপজেলা সদরে বি.এস. ডাঙ্গী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বই ছাড়াই কাশের শিশুদের পাঠদান দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকরা মুখে মুখে কোমলমতি শিশুদের মৌলিক শিক্ষা দিয়ে চলেছেন। উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিরিন সুলতানান জানান, “এ বছর এখানো আমরা কোনো বই পাই নাই তবুও রীতিমত আমরা কাশ চালিয়ে যাচ্ছি”।
এ সময় বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক মোঃ ইব্রাহিম খলিল বলেন, “ আমাদের আবার বই লাগেনি, আমরা নিজেরাইতো এক একটা বই”। আর দ্বিতীয় শ্রেনীর এক শিশু শিক্ষার্থী ঋষিতা খানম জানায়, “ নতুন বই না হলে স্কুলে আসা আনন্দ লাগে না। তাই স্কুলে কম যাই”।