এসিটি’র চাকরি স্থায়ীকরণ আন্দোলন স্থগিত

এইমাত্র জাতীয় রাজধানী শিক্ষাঙ্গন

নিজস্ব প্রতিবেদক : সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি অ্যান্ড অ্যাকসেস এনহান্সমেন্ট প্রজেক্ট (সেকায়েপ) প্রকল্পের মেয়াদ শেষে সেকায়েপভুক্ত ৫,২০০ জন অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষকদের (এসিটি) চাকরি স্থায়ীকরণ/পরিবর্তী প্রোগ্রামে বিনাশর্তে অন্তর্ভুক্তি করার দাবীতে চলমান অবস্থান কর্মসূচির ১৩তম দিনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে এসিটি’দের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষামন্ত্রী, উপমন্ত্রী, শিক্ষা সচিব, প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর (এসইডিপি) বরাবরে স্মারক লিপি প্রদান করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা সচিবেব একান্ত সচিব, উপ-সচিব ও প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর (এসইডিপি) এসিটিদের মৌখিক জানান যে, “সেকায়েপভুক্ত ৫২০০ জন এসিটিদের এসইডিপি প্রোগ্রামে অন্তর্ভূক্তি করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রেরণ করা হয়েছে।” উল্লেখ থাকে যে, চলমান কর্মসূচিতে এসিটিদের অনেক সদস্য অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে এবং স্বাসকষ্ট জনিত রোগে ভুগছেন। বর্তমানে এসিটিরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ইতিবাচক মৌখিক আশ্বাসে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো করোনা ভাইরাস মোকাবেলার জন্য সার্বিক দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশ অতিরিক্ত শ্রেণি-শিক্ষক (এসিটি) ঐক্য পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটি আপাতত অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করেছেন এবং এসিটিরা বলেন যেহেতু আমাদের দাবী বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দপ্তরে পৌঁছিয়েছে, সেহেতু আশাকরি মানবতার মা জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এসিটিরা আরও বলেন এটা আমাদের নায্য দাবী। পরবর্তী সময়ে এসইডিপি প্রোগ্রামে অন্তর্ভূক্তির জন্য আগামী ৩১ মার্চ, ২০২০ ইং তারিখের মধ্যে যদি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, তাহলে এপ্রিল, ২০২০ ইং তারিখের প্রথম সাপ্তাহেই আরো কঠোর অবস্থান কর্মসূচি ঘোষনা করা হবে।


বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য যে, প্রকল্পের মেয়াদ শেষে এসিটিদের স্ব স্ব কর্মস্থলে থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় মৌখিক আশ্বাস ও বিভিন্ন সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এসিটিদের স্থায়ীকরণ বা এসইডিপিতে অন্তর্ভূক্তি করণের জন্য উদ্যোগ নিলেও গত ২৬ মাসে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। এদিকে এসিটিরা ২৬ মাসে বিনা বেতনে পাঠদান করে অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছেন। শিক্ষামন্ত্রণালয় ভাবছে অভিজ্ঞ এসিটিদের বাদ দিয়ে নতুন করে এসইডিপি প্রোগ্রামে ১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দিতে। উল্লেখ্য, প্রকল্পের মেয়াদ শেষে গত ২০১৮ সালের আগষ্ট মাসে মাউশি কর্তৃক এসিটিদের তালিকা নেয়া হয় এমপিওভুক্তির প্রস্তাবনার জন্য। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে এসিটিদের স¦ স্ব কর্মস্থলে এমপিওভুক্তি/এসইডিপিতে অন্তর্ভুক্তি ও বকেয়া বেতন প্রদানের জন্য আন্ত:মন্ত্রণাল কমিটি গঠনের মাধ্যমে চাকরি স্থায়ীকরণ/এসইডিপিতে অর্ন্তভুক্তির সুপারিশ করা হয় যা আজও বাস্তবায়িত হয়নি।

২০১৫ সালে মাধ্যমিক পর্যায়ে বিষয়ভিত্তিক মানসম্মত শিক্ষককের অনুপস্থিতির কারণে শিক্ষাবান্ধব সরকার সেকায়েপ প্রকল্পের মাধ্যমে সারা দেশে ৫২০০ জন মেধাবী স্নাতক ও স্নাতকত্তোরধারীদের বিষয়ভিত্তিক (ইংরেজি,গণিত ও বিজ্ঞান) অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষক (এসিটি) হিসেবে ৩ বছর মেয়াদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করেন যাদের মডেল শিক্ষক বলা হয়। নিয়োগটি চুক্তিভিত্তিক হলেও এসিটি ম্যানুয়াল অনুযায়ী ও মাধ্যমিক পর্যায়ে পাশের হার বৃদ্ধি ও বিষয়ভিত্তিক মান বৃদ্ধির সাথে ঝড়ে পড়া রোধ, নিয়মিত ক্লাসের বাইরে ৩ বিষয়ে ৩৭,২০,০৯৪ টি অতিরিক্ত ক্লাস (সূত্র: ব্যানবেইস-২০১৮) নেয়ার ফলে কোচিং বাণিজ্য হ্রাসের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য চাকরি স্থায়ীকরণ হওয়ার কথা। গত ২৬ মাসে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বিধায় অধিকাংশ এসিটির সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স শেষ। এবং প্রকল্পের মেয়াদ শেষে এসিটি কর্তৃক নিয়মিত কøাসের বাইরে অতিরিক্ত ক্লাস না হওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সেকায়েপভুক্ত প্রতিষ্ঠান তথা দারিদ্র ও পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের উপর।

গত ১২ মার্চ; বৃহস্পতিবার এসিটি ঐক্য পরিষদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বরাবর স্মারকলীপি প্রদান করা হয়। এসিটিদের দাবি, এসিটি ম্যানুয়ালের ৩৬ নং ধারা, অভিজ্ঞতা, বয়স ও মানবিক দিক বিবেচনা করে ২৬ মাসের বকেয়া বেতন প্রদান সহ দ্রুত চাকরি স্থায়ীকরণ বা বিনাশর্তে এসইডিপি প্রোগ্রামে অন্তর্ভুক্তির জন্য মহান স্বাধীনতার মাসে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

চলমান কর্মসূচিতে সর্বমোট অসুস্থের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৩০ জন, বর্তমানে তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উক্ত কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সারা দেশ থেকে আসা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, বিভাগীয় প্রতিনিধি ও জেলা প্রতিনিধিরা।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *