সরকারের গচ্চা যাবে ২১ কোটি টাকা  :  প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে ১০০ কোটি টাকার এফএমডি ভ্যাকসিন ক্রয়ে ভয়ংকর অনিয়ম!

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অধীনে পিপিআর ভ্যআকসিন ও এফএমডি ব্যাকসিন ক্রয় প্রকল্পের আওতায় এ বছর ৯৯.৬০ কোটি টাকার ভ্যাকসিন ক্রয়ের জন্য দরপত্র আহব্বান করা হয়। ১ম বার লেনদেনে বনিবনা না হওয়ায় এবং ডিজি/ পিজির নিজস্ব ঠিকাদারের কাগজপত্র সঠিক না থাকায় রি-টেন্ডার করা হয়।


বিজ্ঞাপন

২য় বার ৭ টি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নেয় কিন্তু সমন্বয়ক তাবাসুম ওএমসি নামক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কাজ করে এবং নিম্ন দরদাতা জেনটেক কে কাজ দিতে নিষেধ করে। ঐ বারে জেনটেক কে বাদ দিলে ওএমসি ই কাজটি পেত। কিন্তু ওএমসি নামক প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র সঠিক না থাকায় আবার রিটেন্ডার করা হয়।
৩য় বার টেন্ডারে ৩টি দরপত্র জমা পড়ে। জেনটেক প্রদত্ত দর ৭৬.৩৫ (নিম্ন) । ওএমসি প্রদত্ত দর ৯৬.৯৭ (২য়)। রেনেটা প্রদত্ত দর ৯৭.১৪ (৩য়)।


বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য গতবার ৭ টি দরপত্রের মধো ৩ টি প্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ পড়ে যায়। অপর ৪ টির মধো জেনটেক প্রদত্ত দর ছিল -৭৯.২৫ (১ম) , ওএমসি প্রদত্ত দর ছিল ৮২.৫০ (২য়) রেনেটা প্রদত্ত দর ছিল- ৯৭.১৪ (৩য়)। কিন্তু এবার জেনটেক প্রদত্ত দর ৭৬.৩৫ যা গতবারের চেয়ে-.২.৯০ কোটি কম। ওএমসি এর প্রদত্ত দর- ৯৬.৯৭ যা গতবারের চেয়ে-১৪.৪৭ কোটি বেশী। রেনেটার প্রদত্ত দর গতবারের মত ৯৭.১৪।

এখানে লক্ষনীয় ওএমসি প্রদত্ত দর একই ভ্যকসিন, একই পরিমান একই দেশের কিন্তু ১৪.৪৭ কোটি টাকা বেশী। অন্যদিকে জেনটেক একই ভ্যকসিন ২.৯০ কোটি কম। কিন্তু কর্তৃপক্ষ নিন্ম দরদাতার ভ্যকসিন না নিয়ে ওএমসি এর নিকট হতে সর্বনিম্ন দরদাতা অপেক্ষা প্রায় ২১ কোটি টাকা বেশী মূল্যে আর্জেন্টিনার তৈরী ভ্যকসিন ( যা এদেশে রেজিষ্ট্রেশনপ্রাপ্ত নয়) নেয়ার প্রক্রিয়া শেষ করতে যাচ্ছে । কথিত মহিলা সমন্বয়ক তাবাবসুমকে খুশী করতে মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা নাকি ওএমসি নামক আওয়ামী সমার্থক প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ার জন্য পিডিকে মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন বলে সুত্রটি নিশ্চিত করেছে এবং পিডি ওমর জোতি চাকমা প্রকারান্তরে স্বীকার করেছেন।

এ বিষয়ে গতবারে দরপত্রে অংশ গ্রহনকারী টেকনো ড্রাগ নামক প্রতিষ্ঠানের এমডি জালাল আহম্মদ জানান, তাকে আলোচ্য দরপত্রে অংশ গ্রহন না করার জন্য সমন্বয়কদের এবং পিডির পক্ষ হতে নিশেধ করায় তিনি আলোচ্য দরপত্রে অংশ গ্রহন করেননি।

মন্ত্রণালয়ের এবং অধিদপ্তরের একাধিক উর্দ্ধতন কর্মকতা আরো জানান, গতবারের দরপত্রে ওএমসি ৮২.৫০ কোটি টাকা দর প্রদান করে ২য় সর্বনিম্ন দরদাতা হলেও কাগজপত্র সঠিক না থাকায় রেসপনসিভ হতে পারেনি কিন্তু সেই একই প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের এবং সমন্বয়কের পরামর্শে ১৪.৪৭ কোটি টাকা বেশী দর দিয়ে দরপত্র দাখিল করেছে।

অতিরিক্ত এই টাকা সমন্বয়ক ও মন্ত্রনালয়, ডিজি ও পিডি ভাগাভাগি করে নিবেন এবং গতবারের অকৃতকার্য্য কারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওএমসিকেই কাজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে দরপত্র মুল্যায়ন কমিটির ও কারিগরী মুল্যায়ন কমিটির প্রভাবশালী একজন কর্মকতা জানিয়েছেন ।

তিনি আরো জানান, সর্বনিম্ন দর প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স জেনটেক ইন্টারন্যশানাল নামক প্রতিষ্ঠানের কাগজ পত্র সঠিক থাকলেও তাকে নন রেসপনসিভ করার লক্ষ্যে পিডি অহেতুক বিভিন্ন ব্যাখ্যা চেয়ে পত্র দিয়ে হয়রানী করছেন যা ওএমসির নিকট জানতে চাওয়া হচ্ছে না। এছাড়া দরপত্রের বিধি ভংগ করে রিটেন্ডারে ওএমসি গতবারে যে কারনে নন রেসপনসিভ হয়েছিল সে শর্ত বাদ দিয়ে দরপত্র সিডিউল বিক্রি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে পিডি ওমর জোতি চাকমার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে অনিয়ম সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, রি-টেন্ডারে শর্ত বা সেপসিফিক্শন পরিবর্তন করা যাবে না এমন কোন তথ্য আমার জানা নেই । ওএমসি গতবারের চেয়ে ১৫ কোটি টাকা বেশী দরে দরপত্র জমা দেয়ার বিষয়ে তিনি জানান, এটা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের নিজস্ব বিষয়। গতবারে সমন্বয়ক তাবাবসুম আওয়ামীপন্থী একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ না দেয়ার বিষয়ে তদ্বির করলেও অন্য কোন প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ার জন্য কিছু বলেনি বলে পিডি জানান ।

ওএমসিকে কাজ দেয়ার বিষয়ে কোন চাপ আছে কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, চাপ/ তদবিরতো থাকতেই পারে তবে তিনি কারোর নাম বলেন নি। পিডি তাঁর সাথে অফিসে যেয়ে কথা বলার জন্য অনুরোধ করেন। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার পদক্ষেপ কামনা করেছেন বৈষম্য বিরোধী সচেতন মহল।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *