বিশেষ প্রতিবেদক : প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অধীনে প্রায় ২১ কোটি টাকার মেডিসিন/যন্ত্রপাতি ক্রয়ের টেন্ডার নিয়ে ৩ কর্মকর্তা ও ১ নেতার বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট কারসাজির অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগি ঠিকাদার ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা এ বিষয়ে মতস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার পদক্ষেপ কামনা করেছেন।

একাধিক সুত্রে জানাগেছে, ড.আবু সুফিয়ান মহাপরিচালকের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অধীনে প্রায় ২১ কোটি টাকার মেডিসিন/যন্ত্রপাতি ক্রয়ের টেন্ডার আহ্ববান এবং মুল্যায়ন কমিটির সুপারিশ মোতাবেক নোয়া প্রদান করা হয়। উক্ত টাকার কোন ভাগ না পেয়ে মহাপরিচালক ড. আবু সুফিয়ান মন্ত্রনালয়ের আওয়ামীপন্থী ভারপ্রাপ্ত সচিবকে ভুল বুঝিয়ে একটা বেনামী অভিযোগ করিয়ে অবৈধ ও অনিয়ম এর মাধ্যমে মিথ্যা তথা দিয়ে উক্ত দরপত্র বাতিল করেন।

এমন কি কনট্রাক্ট এ্যাওয়ার্ড না হলেও কনট্রাক্ট এ্যাওয়ার্ড বলে ইজিপিতে মিথ্যা তথ্য আপলোড করে পূর্বের ঠিকাদারদের পিজি অবমুক্ত করিয়েছে সুচতুর ডিজি। এ বিষযে ঐ সময়ের পরিচালক ঔষধাগার আমিনুল ইসলাম বাদল সিপিটিইউকে মতামত প্রদানের জন্য বিগত ২১/০১/২৫ ইং তারিখে পত্র দিলেও ড. সুফিয়ান সে পত্রের জবাবের অপেক্ষা না করেই নুতন ভাবে দরপত্র আহ্ববান করান। তাকে সহযোগিতা করেন অধিদপ্তরের নন- ক্যডার ভেটেরিনারি সার্জন কথিত বিএনপি নেতা ডা: কবির আহম্মদ ও পরিচালক ডা: শাহিনুর ইসলাম।
ডা: কবির আহম্মদ সাবেক ধর্ম সচিব মো: নুরুল ইসলামের (সাবেক ছাত্রলীগ ক্যাডার) ভগ্নিপতি। এই ডা: কবির স্ত্রী ও ভাইয়ের প্রভাবে বিগত ১৫ বসর নারায়ণগঞ্জে জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে একই পদে চাকুরী এবং ব্যবসা পরিচালনা করেছেন। ডা: কবির ৫ই আগষ্টের পর অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে প্রভাব খাটিয়ে অধিদপ্তরের উৎপাদন শাখার ৬ষ্ট গ্রেডের সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব নিয়েছেন।
বর্তমানে ডা: কবির নারায়নগঞ্জ জেলা পশু হাসপাতালের ভেটেরিনারি সার্জন এবং অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালকের পদের দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যদিকে মেসার্স এসকে ট্রেডার্স এর মালিক হয়ে ঠিকাদারী ব্যবসাও করছেন। বিষয়টি মন্ত্রনালয় এর উপদেষ্টাকে লিখিত ভাবে জানানোর পরেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেন নি। এ দিকে সুচতুর দূর্নীতিবাজ মহাপরিচালক ড. আবু সুফিয়ান তার নিজের স্বার্থে ডা: কবিরকে ব্যবহার করছেন।
অন্যদিকে কৃষিবিদের ডা: সোহেল রানার সহযোগিতায় ডা : কবির , ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক মিসেস ফরিদা ইয়াসমিন এবং তার স্বামী একমি ওষুধ কোম্পানীর একজন পরিচালক মো: আফতাব আহম্মদ বুলু ভারপ্রাপ্ত ডিজি ড. আবু সুফিয়নের সহযোগিতায় এমনভাবে মেডিসিনের লট/ প্যাকেজ করেছেন যেখানে একমি-কোম্পানীই ৮০% কার্যদেশ পাবে।
আরো মজার ব্যাপার হলো: কাজ ভাগাভাগির জন্য একমি কোম্পানী সরাসরি দরপত্রে অংশ নিচ্ছে আবার কিছু কিছু আইটেমের জন্য ডা: সোহেল রানার এবং ডা: কবিরের প্রতিষ্ঠান মেসার্স এসকে ট্রেডার্সকে এনওসি দিয়েছেন যাতে ডা: কবির ও ডা: সোহেল রানার প্রতিষ্ঠান কাজ পায়।
সুত্র মতে এ সকল কিছুর নায়ক ভারপ্রাপ্ত ডিজি ড. আবু সুফিয়ান , পরিচালক, ঢাকা বিভাগ মিসেস ফরিদা ইয়াসমিন এবং ডিজির সকল অপকর্মের ভাগিদার কথিত বিএনপি নেতা ডা: কবির উদ্দীন । ডা: কবির ও তার এসোসিয়েটসদের কারণে বিএনপিপন্থী কর্মকতারা অধিদপ্তরে ইমেজ সংকটে পড়েছেন বলেও অনেকে আক্ষেপ করে বলেছেন।
অধিদপ্তরের প্রায় সকল কর্মকতা/ঠিকাদারের জিজ্ঞাসা একজন ৯ম গ্রেডের নন ক্যাডার ভিএসকে কিভাবে মন্ত্রনালয় এর অনুমোদন ছাড়া ৬ষ্ট গ্রেডের পদের দায়িত্ব প্রদান করা হলো ? একজন সরকারী কর্মকতা হয়ে কিভাবে তিনি ঠিকাদারি ব্যবসা করতে পারেন?
এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড.আবু সুফিয়ানকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, দরপত্র নিয়ে ঠিকাদাররা অভিযোগ করায় কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। তবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বেশ কয়েকজন ঠিকাদার ও কর্মকর্তা,কর্মচারিরা দুদক ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন