নিজস্ব প্রতিনিধি (সিলেট) : সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ওমর ফারুক ও তেলিখাল ইউনিয়নের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মুর্শেদা আক্তারের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক ও মামলার হয়রানির শিকার বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের একমাত্র সন্তান, বিএনপির অঙ্গসংগঠন জিসাসের কর্মী শরীফ আহমদ আগুন বর্তমানে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় কারাগারে রয়েছেন।

বিএনপি নেতা ওমর ফারুক অভিযোগ করে বলেন, “আমি ও আমার পরিবার শহীদ জিয়া ও বেগম খালেদা জিয়ার আদর্শের ভিত্তিতে রাজনীতি করছি। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে আমাদের ওপর দমন-পীড়ন, মামলা-হামলা চলছেই। শুধু বিএনপির রাজনীতি করাই আমাদের অপরাধ। এখন আমার একমাত্র ছেলেকেও মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠানো হয়েছে।”

জানা যায়, কোম্পানীগঞ্জের টুকের বাজার এলাকায় একটি দোকানের মালিকানা নিয়ে শরীফ আহমদ আগুন ও তার প্রতিপক্ষ শরীফ উদ্দিনের পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। স্থানীয়ভাবে বিএনপি নেতা ও মানবাধিকারকর্মী ওমর ফারুক এবং সদ্য প্রয়াত সালিশকারক সফর মিয়ার মধ্যস্থতায় বিষয়টি একপর্যায়ে মীমাংসা হলেও পরে পুনরায় বিরোধ দেখা দেয়।
অভিযোগ রয়েছে, শরীফ উদ্দিন তার পিতা, পল্লী চিকিৎসক ফরিদ উদ্দিনকে দোকান সংক্রান্ত বিরোধে মারধর ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় ফরিদ উদ্দিন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতা চান, যার পরিপ্রেক্ষিতে ওমর ফারুক ও তার বেয়াই শের তরিকুল ইসলাম সহায়তার হাত বাড়ান। এতে শরীফ উদ্দিন ও তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন ক্ষিপ্ত হন এবং ওমর ফারুককে একাধিকবার প্রাণনাশের হুমকি দেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর সিলেট আদালত পাড়ায় ওমর ফারুকের ওপর হামলার চেষ্টা করেন শরীফ উদ্দিন। আইনজীবী ও উপস্থিত ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপে তিনি প্রাণে রক্ষা পান। পরে শরীফ উদ্দিন ১৩ জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং- ৫৩/জিআর নং- ৫৩৪)।
এই মামলায় অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ওমর ফারুকের আত্মীয় শের তরিকুল ইসলামকে র্যাব গ্রেপ্তার করে। মামলার অন্যতম আসামি শরীফ আহমদ আগুনসহ অন্যান্য আসামিরা ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সালে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত শরীফ আহমদ আগুনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।
ওমর ফারুক দাবি করেন, “আমার ছেলে সম্পূর্ণ নির্দোষ। শুধুমাত্র বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আমি তার মুক্তির জন্য সর্বাত্মক লড়াই চালিয়ে যাব।”
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতা জানান, ওমর ফারুক দলের দুঃসময়ে নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন এবং তার পুরো পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তবে মামলার বাদী শরীফ উদ্দিন নিজেও বিতর্কিত ব্যক্তি, যিনি তার বাবাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ফরিদ উদ্দিন তার ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে জনসাধারণের সহায়তা চেয়েছিলেন। যেহেতু মামলাটি আদালতে বিচারাধীন, তাই আইন অনুযায়ী সুষ্ঠু বিচার হবে বলে তারা মনে করেন।