নিজস্ব প্রতিনিধি (সিলেট) : এবার গভীর রাতে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ঘুসের টাকার বান্ডিল খাতা কলমে হিসাব কাে বুঝে নিলেন পুলিশের এক গুণধর এএসআই। অভিযুক্ত এএসআই আব্দুল জব্বার সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে দায়িত্বরত রয়েছেন টু-আইসি পদে।

তিনি সম্প্রতি গভীর রাতে খনিজ বালি চুরিকান্ডে সহযোগিতার আয়, চিনি, বিড়ি, মাদক কারবারিদের নিকট থেকে কালেকশান করা কয়েক লাখ টাকা থানার তদন্ত কেন্দ্র’র ইনচার্জ,থানার ওসির পক্ষে বান্ডিল গুলো খাতা কলমে হিসেব করে গুণে গুণে জমা রাখেন উপজেলার উওর বড়দল ইউনিয়নের চন্দ্রপুর গ্রামের মৃত হোসেন সিকদারের ছেলে মাদক কারবারি,পুলিশের চিহ্নিত দালাল কথিত সোর্স দাবিদার,নারী কারবারি বুলবুল সিকদার ওরফে ফিটিং বুলবুলের নিকট থেকে।

অবশ্য মঙ্গলবার-বুধবার দু’দফায় জানতে চাইলে সম্প্রতি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে বসে ঘুসের টাকার বান্ডিল গুলে বুঝে নেয়ার বিষয়টি জানা নেই জানিয়ে থানার বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রর ইনচার্জ আবুল কালাম চৌধুরী, টুআইসি এএসআই আব্দুল জব্বার নিজেরাও স্বীকার করেন, বুলবুলকে মোটরসাইকেল চালক হিসাবে দৈনিক বেতনে তারা বিভিন্ন কাজে বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে থাকেন।

গেল ০১ এপ্রিল ওই বিতর্কিত বুলবুলের ৭ থেকে ৮ মাসের ঘুস বাণিজ্য’র ভাগের আয়, চাঁদাবাজি চোরাচালানের আয়ে তৈরী করা টাইলস ফিটিংস নতুন বাড়ি উদ্ভোধনী দাওয়াতে মধ্যাহ্ ভোজে গিয়ে ভুরিভোজ করেন বুলবুলের অপরাধ, অপকর্ম’র সারথী ওই তদন্দ্র কেন্দ্রের ঘুস বাণিজ্যের সুবিধাভোগী দুই পুলিশ অফিসার। এ নিয়েও এলাকায় চলছে মোখরোচক আলোচনা সমালোচনা।
অভিযোগ রয়েছে গেল ঈদুল ফিতরের ফিতরের দিন/দুয়েক পুর্বে জাদুকাটা নদীতে নিয়মিত খনিজ বালি পাথর চুরি করানো, পাড় কাটার এক মূল হোতার নিকট থেকে ঈদ বোনাস হিসাবে পুলিশের জন্য ১০টি নতুন পাঞ্জাবী কেনার জন্য বুলবুল ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। বুলবুলের মোবাইল ফোনে গেল এক মাসের একটি কল লিস্ট গণমাধ্যমের নিকট সংরক্ষিত রয়েছে।
গেল এক মাসে ১৫১ পাতার ওই কল লিষ্টে শুধু মাত্র হাজার ফোন কল রয়েছে, সীমান্ত নদী জাদুকাটার এপার ওপার লাউরগড়, ঢালার পাড়, ছড়ারপাড়, বিন্নাকুলি, ঘাগটিয়া,বড়টেক, গড়কাটি, ঘাগড়া, পাঠানপাড়া, রাজারজারগাঁও সহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা নদীর খনিজ বালি পাথর চুরি,বালি পাথর কোয়ারিরতদের, মাটি বিক্রেতা, ভারতীয় মাদক, বিড়ি, কয়লা,গবাদিপশু (গরু-মহিষ) গাঁজা, ইয়াবা চিনি, ফুসকা,কসমেটিকস, মসলা, বাসমতি চাল, ফলমুল,জুতা, গোল কাঠ কারবারি ও এলাকার পলিথিন কারবারিদের মুঠোফোনে।
উপজেলার চন্দপুর গ্রামের বুলবুলের নিকট জানতে চাইলে সে বলে আমাকে তদন্দ্র কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ৬ ’শ টাকা করে বেতন দেয় আইসি (আবুল কালাম স্যার), টু আইসি- জব্বার স্যার।
সম্প্রতি গভীর রাতে তদন্দ্র কেন্দ্রের ব্যারাকের ভেতর এএসআই জব্বারের চেয়ার টেবিলে বসে বুলবুল গুণে গুণে টাকার বান্ডিল তুলে দেয় এএসআই জব্বারের হাতে। জব্বার তখন খাটিয়ার উপর খালি ঘায়ে বসা,গুণে বুঝে বিচানার নিচে টাকার বান্ডিল রাখছিলেন, আবার খাতা বের করে কিছু লিখে রাখেন। সেই রাতে টাকার বান্ডিল গুলো কোথা থেকে আনা বা ওই টাকার উৎস কি? এসব বিষয় জানতে চাইলে এড়িয়ে গিয়ে বুলবুল বলেন, আমার ভুল হয়ে গেছে।
অভিযোগ রয়েছে, সীমান্ত নদী জাদুকাটা খনিজ বালি পাথর চুরিকান্ডে সহযোগিতা, সীমান্ত চোরাচালান মামলা- গ্রেফতার বাণিজ্যের আড়ালে দু’হাতে টাকা কামোনোর মেশিন কৌশলী এএসআই আব্দুল জব্বার প্রত্যাহারকৃত পুলিশ হেডকোয়ার্টারে রিপোর্টকৃত এসপি আ.ফ.ম আনোয়ার হোসেন খানকে মোটা অংকের ঘুস দিয়ে ১ মাস ৮দিনের মাথায় জেলার জামালগঞ্জ থানা থেকে বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত্র কেন্দ্রে পোষ্টিং বাগিয়ে নেন। একই পথ অনুসরণ করেন থানা থেকে সীমান্ত চোরাচালান প্রবণ টেকেরঘাট অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই আবুল কালাম চৌধুরী।
এরপর তিনি মোটা অংকের বখরা দিয়ে দ্রত পোষ্টিং নেন আলোচিত অপরাধ প্রবণ বালি পাথর রুটের হাট খ্যাত জাদুকাটা নদী কেন্দ্রীক সীমান্ত চোরাচালান প্রবণ এলাকা বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে। তাদেরকে থানার বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে পোষ্টিং করিয়ে আনার পেছনে তদবীর করেন এসপি আনোয়ারের ঘুসের হাটের ওই ছয় অন্যতম তাহিরপুর থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন নিজে।
তদন্ত কেন্দ্র’র সামনে সাইনবোর্ড পেছনে রেখে ঘুসের টাকায় পাঞ্জাবী কিনে পরিধান করে সোর্স বুলবুলকে পাশে রেখে গ্রপ ছবি তুলেন তদন্দ্র কেন্দ্রর দুই অফিসার সহ কয়েকজন কনষ্টেবল। এমন ছবি সামাজিক যোগোযাগ মাধ্যমে ফেসবুকে পোষ্ট করা হলে গোটা পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন নানা শ্রেশি পেশার মানুষজন।
পুলিশের নামে চাঁদা আদায়কারি, মাদক কারবারি সহ নানা অপরাধ, চোরাচালান, অপকান্ডে বিতর্কিত বুলবুলের সংগৃহিত পাঞ্জাবী পরিধান করে তার সাথে পুলিশ অফিসার হিসাবে অন্য পুলিশ সদস্যদের সাথে নিয়ে খোদ পুলিশ তদন্ত্র কেন্দ্রর সামনেই ফটোসেশন করে পুলিশ বাহিনীর উপর বুলবুলের প্রভাব বিস্তারের জানান দেয়া হল কি না ?
এমন বিতর্কিত লোকের বাড়িতে দায়িত্বশীল পুলিশ অফিসার হিসাবে নতুন বাড়ি উদ্ভোধনের নামে ভুরিভোজ করার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে থানার তদন্ত কেন্দ্রর ইনচার্জ এসআই আবুল কালাম চৌধুরী বলেন,আমরা কোথায় দাওয়াত খাব না খাব সেটাও বলতে হবে নাকি? যা খুশী লেখেন, কি আর বলব, লেখলে কিছু হয়না, চ্যানেল থাকলে সবই ম্যানেজ করা যায়।