আহমেদ হৃদয় : করোনা টেস্ট দুর্নীতি নিয়ে বেশ আলোচনার সৃষ্টি করেছিলেন ডা. সাবরিনা ও মোহাম্মদ সাহেদ। এবার আরো একটি নতুন ইস্যু নিয়ে আবারো আলোচনায় তারা। ডা. সাবরিনার একটি জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও তিনি আরেকটি জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেছেন। বিষয়টি বেশ কয়েকদিন আগেই নজরে আসে ইসি’র। তার দুইটি এনআডি থাকায় গত রোববার রাজধানীর বাড্ডা থানায় গুলশান থানা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ মমিন মিয়া নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ২০১০ সালের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইনের ১৪ ও ১৫ ধারায় এ মামলাটি করা হয়েছে। এদিকে করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতির ঘটনায় জেকেজি’র চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা ও তার স্বামী জেকেজি’র প্রধান নির্বাহী আরিফুল হকের বিচার চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সূত্র থেকে জানা যায়, ডা. সাবরিনার দুইটি এনআইডি রয়েছে। এবং দুটি এনআইডি কার্ডে তার দই স্বামীর নাম উল্লেখ করা আছে। একটি এনআইডিতে যা বয়স আছে তার থেকে কম বয়স দেখানো হয়েছে আরেকটি এনআইডিতে। এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আমাদের কাছে তথ্য চেয়েছে। আমরা খুব দ্রুত এ ব্যাপারে দুদকের কাছে তথ্য হস্তান্তর করবো।
সূত্র আরো বলছে, ডা. সাবরিনা প্রথমে ভোটার হন সাবরীনা শারমিন হোসেন নাম দিয়ে। ২০১৬ সালে দ্বিতীয়বার ভোটার হন। এর একটিতে জন্মতারিখ ১৯৭৮ সালের ২ ডিসেম্বর। অন্যটিতে ১৯৮৩ সালের ২ ডিসেম্বর। দুটি আইডিতে বয়সের ফারাক পাঁচ বছর। তার এনআইডি কার্ডের একটিতে স্বামীর নাম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে আর. এইচ. হক। দ্বিতীয়টিতে স্বামীর নাম ব্যবহার করা হয়েছে আরিফুল চৌধুরী। একটিতে বাবার নাম সৈয়দ মুশাররফ হোসেন ও মায়ের নাম কিশোয়ার জেসমীন। অপরটিতে মা-বাবার নাম সৈয়দ মুশাররফ হুসেন ও জেসমিন হুসেন দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, সাবরিনার দুই এনআইডিতে দুই ঠিকানা ব্যবহার করা হয়ছে। একটিতে ঠিকানা দেয়া হয়েছে মোহাম্মদপুরের পিসিকালচার হাউজিং সোসাইটি, অন্যটিতে ঠিকানা দেয়া হয়েছে বাড্ডা এলাকার প্রগতি সরণির আনোয়ার ল্যান্ডমার্ক।
দুদক এ বিষয়ে তদন্ত করবে কি না জানতে চাইলে ইসির এক কর্মকর্তা সকালের সময়কে বলেন, দুদক আমাদের কাছে সাবরিনার দুই এনআইডি কার্ডের ব্যাপারে তথ্য চেয়েছে। কিন্তু দুদক এ বিষয়ে তদন্ত করবে কি না তা আমরা এখনো নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না।
অন্যদিকে ইসি সূত্র থেকে আরো জানা যায়, রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদের এনআইডি স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। তিনি নিজের নাম সংশোধন করে ‘সাহেদ করিম’ থেকে ‘মোহাম্মদ সাহেদ’ হয়ে যান।
ইসি সূত্র বলছে, সাহেদ মিথ্যা তথ্য দিয়ে তার নাম সংশোধন করেছেন। এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাহেদের নাম সংশোধন করার ব্যাপারে তদন্ত চলছে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের উর্ধত্বন এক কর্মকর্তা সকালের সময়কে বলেন, ডা. সাবরিনা তার একটি জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও তার তথ্য গোপন করে তিনি আরেকটি জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেছেন। নাগরিক হিসেবে এটি একটি জঘন্য কাজ। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দুদকও আমাদের কাছে তথ্য চেয়েছে। দুদক বিষয়টি খতিয়ে দেখতে চায়। আমরা দুদককে এ ব্যাপারে সহযোগিতা করবো। এবং আইনিভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এ বিষয়ে বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি বলেন, ডা. সাবরিনার দুইটি এনআইডি রয়েছে বিষয়টি সত্য। প্রথম জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য গোপন করে দ্বিতীয় জাতীয় পরিচয়পত্র করার অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা আরো খতিয়ে দেখছি।