ধামাচাপা দিতে মরিয়া সমাজসেবা কর্মকর্তা

সারাদেশ

নড়াইলে বয়স্ক ও বিধবা ভাতার কার্ডে অনিয়ম

মো:রফিকুল ইসলাম, নড়াইল: নড়াইলের কালিয়া উপজেলার মাউলি ইউনিয়নে বয়স্ক-বিধবা ভাতার তালিকা তৈরিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এসব অভিযোগ ধামাচাপা দিতে মরিয়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রফিকুল নিজেই।
অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রথমেই গণমাধ্যম কর্মীদের ছাপ জানিয়ে দেন, উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের অনুমোতি ছাড়া কোন বক্তব্য দিতে পারবনা।
কালিয়া উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নের মধ্যে মাত্র ১ টি ইউনিয়নের ভাতা ভোগীদের নামের তালিকা চাইলে সমাজসেবা কর্মকর্তা রফিকুল বলেন,আমার দপ্তরে বয়স্ক,বিধবা এমনকি প্রতিবন্ধি ভাতা ভোগীদের তালিকা থাকে না।
এসব তালিকা থাকে ইউনিয়ন সমাজকর্মীদের কাছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে,উপজেলা সমাজসেবা দপ্তরের ইউনিয়ন সমাজকর্মী হারুনর রশিদ ও ইউপি সদস্য সুজল ঠাকুর অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে নির্ধারিত বয়স না হলেও বয়স্ক ভাতার কার্ড তৈরি করে দিয়েছে।
এমনকি স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় কয়েকজন মহিলার নামে বিধবা ভাতার কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে এসব ভাতার কার্ড ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে সচ্ছল পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়।
ফলে এলাকার প্রকৃত অসহায় হতদরিদ্র মানুষ প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
উপজেলার মহাজন উত্তর পাড়া গ্রামের মো. আলী মাহামুদ বলেন, বিগত ৪ বছর ধরে মেম্বার চেয়ারম্যানদের হাতে পায়ে ধরেও বয়স্ক ভাতার কার্ড করাতে পারিনি।
পরে মহিলা মেম্বার শাহীনা আক্তার ঝর্ণাকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে ভাতার কার্ডটি করিয়েছি।
তবে টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে মহিলা মেম্বার ঝর্ণা বলেন,আমি আলী মাহামুদসহ অনেককেই ভাতার কার্ড করে দিয়েছি।
কাহারো কাছ থেকে টাকা নেই নাই,খোঁজ নিয়ে জানা যায়,ওই ইউনিয়নে নিখিল সাহার ছেলে নৃপেন সাহা মহাজন বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী।
তিনি বলেন,আমার বয়স ৪৫-৪৬ বছর হতে পারে। আমার বাড়ির লোক তার পরিচিত লোক দিয়ে আমার নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দিয়েছে।
একই বাজারের আরেক ব্যবসায়ী অজিৎ কুমার দাসের ছেলে খোকন দাস।
৬৫ বছর বয়স না হতেই বিশেষ ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে একবছর পূর্বেই হাতিয়ে নিয়েছেন বয়স্ক ভাতার কার্ডটি।
ইতিমধ্যে দুইবার টাকাও উত্তোলন করেছেন বলে জানান খোকন দাস।
দক্ষিণ মহাজন গ্রামের প্রভূ বিশ্বাসের স্ত্রী গুরুদাসী বিশ্বাস। স্বামী এখনও বেঁচে আছেন।
কিন্তু কর্তাব্যক্তিদের দায়িত্বের অবহেলায় অর্থের বিনিময়ে বিধবা ভাতার কার্ড করেছেন।
টাকাও উত্তোলন করেছেন দুই বার,এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি ১২ হাজার টাকা দিয়ে কার্ডটি করেছি।
গুচ্ছ গ্রামের বাসিন্দা মমতাজ বেগম বলেন, সুজল মেম্বারকে ভাতার কার্ড বাবদ ৬ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু আমার কার্ড হয় নি। অন্য একজন ৮হাজার টাকা দিয়ে সেই কার্ড সুজল মেম্বারের কাছ থেকে করেছে।


বিজ্ঞাপন