মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার
নিজস্ব প্রতিনিধি : গত ৩১/১০/২০২০ খ্রিঃ তারিখঃ১৭:৩০ ঘটিকায় বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশন ভবনে এসোসিয়েশনের সভাপতি বি এম ফরমান আলীর সভাপতিত্বে এক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসোসিয়েশনের সদস্যদের মধ্যে পুলিশে বর্তমান বলবৎ নিয়োগ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা হয়। বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমানে ৩ পর্যায়ে নিয়োগ দান করা হয়ে থাকে, ১) কনস্টেবল পদে ২) সাব-ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্ট পদে এবং ৩) এএসপি পদে।
কনস্টেবল পদে যোগদান করার পর সাধারনতঃ একজন কনস্টেবল নায়েক/এএসআই, এসআই/টিএসআই, ইন্সপেক্টর ও এএসপি পদে পদোন্নতি পেয়ে থাকেন। বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত এএসপি গণ সহজেই সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, পুলিশ সুপার, অতিঃ ডিআইজি বা ডিআইজি পদে পদোন্নতি পেয়ে থাকেন। কনস্টেবল ও এএসপি পদে নিয়োগ প্রাপ্তরা কমপক্ষে সমগ্র কর্ম জীবনে ৪/৫ টি পদোন্নতি লাভ করে থাকেন। অপরদিকে, যথেষ্ঠ যোগ্যতাসম্পন্ন সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত সাব-ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্টগণ সমগ্র কর্মজীবনে একটি মাত্র পদোন্নতি পেয়ে ইন্সপেক্টর হয়ে থাকেন এবং বেশীরভাগ ইন্সপেক্টরগণ ঐ পদ থেকেই অবসরে চলে যান। প্রতি বছর ইন্সপেক্টর হতে কিছু পদোন্নতি পেয়ে এএসপি হলেও এ পদোন্নতির হার খুবই সামান্য। বিষয়টি সদয় বিবেচনা পূর্বক ইন্সপেক্টরদের হতাশা দুর করার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ কর্তৃক ডিএসপি পদ সৃজন করার বিশেষ উদ্যেগ গ্রহণ করা হয়েছে।এই মহান উদ্যেগকে বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হয়, কিন্তু মহোদয় উহা কোনো বাস্তব সমাধান নয়, বাস্তব সমাধান হলো সমন্বয়। বর্তমানে প্রয়োজনীয় চাহিদার মাত্র ৩৩ শতাংশ হারে ইন্সপেক্টর হতে এএসপি পদে এনক্যাডারমেন্ট হয়ে থাকে এবং অবশিষ্ঠাংশ সরাসরি বিসিএস-এর মাধ্যমে এএসপি পদে নিয়োগ দান করা হয়। ইহাতে দুই ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয় । ইন্সপেক্টর হতে এএসপি কম সংখ্যক হারে পদোন্নতি পায়। অন্যদিকে বিসিএস হতে এএসপি পদে বেশী সংখ্যক নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও উচ্চতর স্তরে পদসংখ্যা সীমিত হওয়ায় তাঁদের যথাসময়ে পদোন্নতি হয়না । বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশনের সদস্যগণ বিশ্বাস ও আশা করেন যে, বিসিএস-এর মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত এএসপিগণের ন্যুনতম ডিআইজি বা এ্যাডিশনাল আইজিপি হওয়া উচিত। ইহা বাস্তবায়ন করতে হলে প্রতি বছর ৩০-৩৫ জন এএসপি বিসিএস-এর মাধ্যমে নিয়োগ দান করা যৌক্তিক। অনুরুপভাবে, যারা সাব-ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্ট পদে যোগদান করেন তাদের ন্যুনতম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হওয়া উচিত।
বর্তমান বাংলাদেশ পুলিশে ৬,৮৬৯ টি ইন্সপেক্টরের পদের মঞ্জুরী রয়েছে। যার মধ্য হতে সামগ্রিক চাহিদার ৩৩% কোটায় বলবৎ ইন্সপেক্টরের ৫% হারেও এএসপি পদে পদোন্নতি লাভ করা সম্ভব নয়। যার জন্য ৩০/৩২ বছর কর্মকাল পার হওয়ার পরও অধিকাংশ ইন্সপেক্টরগণ এএসপি পদে পদোন্নতি লাভ করতে পারছেন না। এএসপি পদের সংখ্যা বৃদ্ধি করলেও এ সমস্যা দীর্ঘস্থায়ীভাবে সমাধান করা সম্ভব নয়। ইহার একমাত্র বাস্তব সমাধান হলো বিভাগীয় ৩৩% কোটাকে ৬৭% বা এর অধিক হারে উন্নীত করা। ইহাতে প্রতি বছর অধিক সংখ্যক হারে (কমপক্ষে ২০০) ইন্সপেক্টরের এএসপি হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং বিভাগীয় এএসপিদের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সার্বিক দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। অপরদিকে বিসিএস-এ নিয়োগ সীমিত হয়ে আসলে তাঁদের যথাসময়ে পদোন্নতি প্রাপ্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে, কাঙ্খিত সময়ে পদোন্নতি পাবেন । মাঠ পর্যায়ে এএসপি বা তদুর্ধ পদের শুন্যতা বা ঘাটতি থাকবে না। অন্যদিকে সাব-ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্ট পদে নিয়োগপ্রাপ্তরাও পদোন্নতি অভাবে হতাশায় পড়বে না। পদোন্নতি পাওয়ার সুযোগের প্রত্যাশায় অফিসারগণ পেশাদারিত্বের প্রতি বেশী যত্নশীল হবেন। প্রকারন্তরে, দূর্নীতিমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে আপনার নিয়ন্ত্রণাধীনে একটি দক্ষ যুগোপযোগী পুলিশ বাহিনী গড়ে উঠবে মর্মে বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশেনের বিভিন্ন মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞ অফিসারগণ এ মনোভাব ব্যক্ত করে তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আপনার নিকট এ প্রস্তাবনা উপস্থাপনের জন্য বিনীত অনুরোধ জানান।
বিধায়, বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বর্তমান বলবৎ এএসপি পদে রিক্রুটমেন্ট রুল পরিবর্তন করে বিভাগীয় ফিডার পদ হতে ৬৭% বা এর অধিক হারে পদোন্নতি প্রদানের জন্য হার উন্নীত করনের বিষয়টি সু-বিবেচনার জন্য পেশ করা হলো।