বিশেষ প্রতিবেদক : জামালপুরে ভ্যানচালক স্কুলপড়ুয়া চতুর্থ শ্রেণি শিক্ষার্থী স্বপ্নার পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দায়িত্ব নেওয়ার পরই তার পরিবারে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি, বুকভরা আশার আলো। বুধবার সকালে শুরু হয়েছে স্বপ্নার পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রী দেওয়া ঘর নির্মাণের কাজ। স্বপ্নার প্রতি প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার পর পাল্টে যাওয়া পরিবারের সুখের দৃশ্য দেখতে এলাকার মানুষ ভিড় করছেন তাদের আঙিনায়।
জামালপুর সদর উপজেলার নাকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তাহাজত স্বপ্না ভ্যান চালিয়ে বাবার ওষুধের টাকা সংগ্রহে করে। এমন একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসে। তিনি বিষয়টি জেলা প্রশাসককে তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশ পেয়ে জেলা প্রশাসক মো. এনামুল হক নাকাটি গ্রামের সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গু শরিফুল ইসলাম ভাসানীর বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে তার বাবা-মার সঙ্গে কথা বলেন। এ বিষয়ে মঙ্গলবার একটি রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানোর পর স্বপ্নার পরিবারের সব দায়িত্ব গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
সকালে জেলা প্রশাসক এনামুল হক, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াছমিন শরিফুলের নতুন ঘর নির্মাণের কাজ উদ্বোধন করেন। পরে পঙ্গু শরিফুল ইসলামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আনা হয়।
পাঁচ বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় ভাসানীর ডান পা ভেঙে যায়। তাকে প্রথমে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পঙ্গু হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করেও তার পা ঠিক হয়নি। এ চিকিৎসা করতে প্রায় ৭ লাখ টাকা খরচ হয়েছে তাদের। এতে তার সহায়সম্পদ যা ছিল সবই শেষ হয়ে যায়। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বিছানায় পড়ে আছেন স্বপ্নার বাবা।
এদিকে ভাসানীর ওষুধ কিনতে প্রতিদিন ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা খরচ হয়। বাবার ওষুধের টাকার জন্য স্বপ্না ভ্যান চালানো শুরু করে। ওষুধের টাকা রোজগার ছাড়াও সংসারের হাল ধরে সে।
প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা পেয়ে ভীষণ খুশি তারা। প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করেন তারা। বলেন, তিনি যেন ভালো থাকেন।
জেলা প্রশাসক এনামুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্নার পরিবারের সব দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। বাবার চিকিৎসা, তাদের নতুন ঘর নির্মাণসহ কর্মসংস্থানের নির্দেশ দিয়েছেন। তার বাবাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।