ভুল ও নিয়তি

অন্যান্য বিবিধ সাহিত্য

মুস্তাফিজুর রহমান : অশ্রুর নোনাজল অনেকের একমাত্র অবলম্বন, যা নিত্য বিসর্জন দিয়ে নিয়তি ও ভুলের কাফফারা দিতে হয়। নিয়তি আর ভুলের সমীকরণ মেলাতে গিয়ে কেউবা নিজ কর্মকে, কেউবা ভাগ্যের পরিহাস হিসেবে গণ্য করে নেয়। উভয় দুর্দশার পরিহাসেই অশ্রুসিক্ত হয় কিন্তু একটা স্বীয় সৃষ্ট অন্যটা বিধাতা সৃষ্ট। এই ক্ষেত্রে স্বীয় সৃষ্টির দায়ে নিজকে ধিক্কার দিয়ে ভুলের দায়মুক্তি পাওয়া গেলেও নিয়তির দায় কে নিবে?


বিজ্ঞাপন

প্রতিটি মানুষ প্যারালাল ফেট নিয়ে জন্মায় না এটাই সত্য। কিন্তু কেন? অর্থবিত্ত, অবয়ব, যোগ্যতা, নেতৃত্ব, জনপ্রিয়তা ও ভালবাসা অর্জনের ক্ষেত্রেও বৈষম্য দৃশ্যমাণ। হাড়ভাংগা পরিশ্রম ও বিরামহীন সাধনা করে চাইলেও অন্যের সমপর্যায়ে যাওয়ার সুযোগ থাকেনা। তাহলে পরিশ্রম ও সাধনাও কি মনুষ্য ভেদে সংরক্ষিত!

চমৎকার এই ধরাকে বসবাস উপযোগী করার প্রত্যয়ে মানুষের মাঝে প্রতিটি ক্ষেত্রে বৈষম্য দৃশ্যমাণ। ভারসাম্য বলতে যে শব্দটি রয়েছে এটার নিয়ন্ত্রক একমাত্র বিধাতা, যিনি মানুষকে মানুষের দাস বানিয়ে ও সাব অর্ডিনেট করে মানুষ ও মনুষ্যত্বর ভারসাম্য রক্ষার লাটাই নিজের হাতে রেখেছেন। এটার অর্থ হলো কেউ একজন অদৃশ্য নিয়ন্ত্রক আছেন, যিনি মানুষের ফেলে দেওয়া নর্দমার ময়লা পরিস্কার করার জন্য অন্য একজন মানুষকেই দায়িত্ব দিয়েছেন। এটার ব্যত্যয় ঘটলে পৃথিবী আবর্জনায় ভরে যেত এবং মানুষ সেই ভাগাড়ের ময়লার দুর্গন্ধে বেচে থাকার অভিলাষ থেকে দ্রুত পরোপারে যাওয়ার জন্যই আগ্রহী হতো।

সুন্দর ও বাসযোগ্য পৃথিবী চলমান রাখার স্বার্থে আমি মানুষ হয়েও অন্যের জুতোর ময়লা পরিস্কার করতে নিযুক্ত একজন দাস। দাস হিসেবে অন্যের জীবনমান সুন্দর থেকে সুন্দরতম হিসেবে নিশ্চিত করার জন্য সুপিরিয়রের যোগ্যতা থেকেও আমার অবদান অধিক বলেই গন্য। আমি সুপিরিয়রের মতোই রক্তমাংস ও শারিরীক অংগসমূহের অধিকারী কিন্তু উভয়ই যে যার অবস্থান ও দায়িত্বে সফল মানুষ হিসেবেই গন্য। সুতরাং ভুলের জন্য অনুশোচনা না করে সংশোধনের প্রত্যয়ে এগিয়ে যান এবং নিয়তির দেওয়া পেশাকে সম্মান করুন। চোখের নোনাজলের বিসর্জন কখনো ভাগ্য বদলানোর হাতিয়ার হতে পারেনা বরং এটা জীবনের জন্য অভিশাপ ব্যাতিত অন্যকিছু নয়।