ধর্মীয় সমন্বয় বাঙালি সংস্কৃতির মুখ্য উপাদান গুণীজন বক্তৃতায় ইতিহাসবিদ আব্দুল মোমিন চৌধুরী

জাতীয়

বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে সহিংসতা সহাবস্থান ও সমন্বয় বাংলা ধর্মীয় সামাজিক সংস্কৃতি আগত সকল ধর্ম কেই বাংলা নিজের রাজ্য পূর্ব মানসিকতা দিয়ে সিক্ত করেছিল । আর সেই মানসিকতায় প্রাধান্য লাভ করেছিল মানবতা ও সাম্য ভাবনা ।আজ সোমবার বিকাল ৪ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত”” ধর্মীয় বহুত্ববাদ প্রাক -উপনিবেশিক বাংলায়”” শীর্ষক বক্তৃতায় এসব মন্তব্য করেন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির ফেলো ড.আব্দুল মমিন চৌধুরি ।জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশন আয়োজিত গুণীজন বক্তৃতার দ্বিতীয় পর্বের প্রথম বক্তৃতা।


বিজ্ঞাপন

দীর্ঘ বক্তৃতায় বলেন উপমহাদেশে “ধর্মীয় বহুত্ববাদ” ও সমন্বয় এর ইতিহাস অনেক পুরনো। আর্যদের আগমনের ফলে স্থায়ী এবং বহিরাগত সংস্কৃতি ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার শুরু হয়েছিল ।এবং তার ফলে সমন্বয় মধ্য দিয়ে আর্য ও অনার্য ধর্মে পরিবর্তন আসতে শুরু করে। এখান থেকে বাংলা ধর্মীয় সামাজিক সাংস্কৃতিক সমন্বয় প্রক্রিয়া বিশেষ স্থান অধিকার করে নেয়। এই সমন্বয় কালক্রমে পরিণত হয় বাংলার ধর্মীয় সামাজিক সংস্কৃতি বিশেষ ঐতিহ্য।

তিনি আরো বলেন বৈদিক ব্রাহ্মন্য ধর্মকে বাংলা গড়ে তুলছে নিজের মত করে ফলে বৈদিক ধর্ম অনুপ্রবেশ ঘটে ছিল বহু লৌকিক দেবদেবীর ।বৌদ্ধ ধর্মের সঙ্গে স্থানীয় সংস্কৃতি সমন্বয় এর ফলে সৃষ্টি হয়েছিল তান্ত্রিক বৌদ্ধ ধর্মের। বাংলার সংস্কৃতিতে যে উদারতা সাম্য ভাবনা আর মানবতার আদর্শ প্রাচীন যুগে সৃষ্টি হয়েছিল তা ইসলামের প্রতি বাংলার মানুষের আকর্ষণের একটি বিশেষ কারণ বলে বিবেচনা করা যেতে পারে বাংলার শাসক ছিলেন ধর্মীয় উদারতা ও বহুত্ববাদের পৃষ্ঠপোষক। অধুনা আবিষ্কৃত বন্য গুপ্তের তাম্রশাসন এ দেখা যায় শৈব রাজাগণ ব্রাহ্মণ্য বিরোধী ভূমিদান করেছিলেন। বাংলার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ব্রাহ্মণ্য ধর্মের এবং ইসলাম ধর্মাবলম্বী সুলতান হিন্দু ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন এমনকি ব্রাহ্মণদের বিরোধী তথ্য চৈতন্য কে নব‌্য বিষ্ণুব্য প্রচারে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দান করেছিলেন। সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ (১৪৯৪-১৫১৯)

বর্তমান দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস রাজনৈতিক অপব্যবহার এর সম্পর্কে বক্তা বলেন বর্তমান শুধু বাংলাদেশ নয় বরং সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াতে একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে ,অতীতকে সাক্ষ্য হিসেবে উপস্থাপনার প্রচেষ্টা চলছে ।ধারণা প্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে।রাজনৈতিক প্রচারণার জন্য বর্তমানে ধ্যান-ধারণা অতিতের উপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন অর্থনীতিবিদ ও ইতিহাসবিদ ড. আকবর আলী খান । স্বাগত বক্তৃতা করেন জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. আহরার আহমেদ। উল্লেখ্য গুণীজন বক্তৃতায় এর আগে বক্তৃতা করেছেন অধ্যাপক রেহমান, সোবহান বদরুদ্দিন ওমর, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী,ড. রওনক জাহান কথা সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক প্রমুখ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *