সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি : জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে মৌখিক ভাবে মসজিদের নামে জমি দেয়ার স্বীকৃতি ভঙ্গ করে জমি বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বারইপটল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকার ধর্মপ্রান মুসুল্লীদের মাঝে নানা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয় ও মসজিদ কমিটি সুত্রে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী উপজেলার ৫ নং পিংনা ইউনিয়নের বারই পটল মৌজার বারই পটল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদটি ১৫ শতাংশ ওয়াকফো জমির উপর অবস্থিত। মসজিদটি মানসম্মত হিসেবে গড়ে তোলার জন্য স্থানীয় দানশীলদের অনুদানে উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। উক্ত মসজিদটির সন্মুখে ঈদগাহ মাঠ ও জানাযা নামাজের জন্য নির্ধারিত স্থান হিসেবে দীর্ঘ দিন ধরে এলাকাবাসী ও বারইপটল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ম্যানেজিং কমিটির পরিকল্পনায় রেখেছেন। সে মতে ভ’মি মালিকের মৌখিক ভাবে মসজিদের সন্মুখে ঈদগাহ মাঠ ও জানাযা নামাজের জন্য স্বীকারোক্তি দিলেও মসজিদের নামে জমিটি বার বার লিখে চাইলে তারা দেই দিচ্ছি বলে কালক্ষেপন করে আসছিল। কালক্ষেপনের এক পর্যায়ে সম্প্রতি মসজিদ কমিটির অজান্তে স্থানীয় প্রবাসী মাহবুবুল আলম লিটন এর নিকট সুজাত আলী গোপন আতাত করে সরিষাবাড়ী সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে গিয়ে দলিল করে দিয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
এ ব্যাপারে বারইপটল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব শেখ নুর মোহাম্মদ ও সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আমান আলী জানান, বারইপটল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের অধীন ঈদগাহ মাঠ ও মুসুল্লীদের জানাযা নামাজের জন্য কোন জায়গা নেই। তাই বারইপটল মৌজার যার খতিয়ান নং-৪৬৩, দাগ নং-৫২৭ এর মধ্যে ৩৫ শতাংশের কাতে ১০ শতাংশ বিক্রিত জমি ফেরতসহ অবশিষ্ট জমি মসজিদের নামে ওয়াকফো সাবকওলা দেয়ার জন্য ভূমি মালিক ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাদানে আশুদৃষ্টি কামনা করেছেন। তারা আরও জানান, উক্ত জমিটির মুল্য পরিশোধ স্বাপেক্ষে ক্রয়মুল্য ফেরত প্রাদান করতে মসজিদ কমিটি ও এলাকার মুসুল্লীগন একমত পোষন করেছেন। অন্যথায় এলাকাবাসী ওই জমি ফেরত পেতে ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহন করবে।
এলাকাবাসীরা আরোও জানান, অত্র এলাকার মানুষ সৃজনশীল হওয়ায় এলাকার দানশীলদের নিজস্ব জমি-জমা দিয়ে বারইপটল সাপ্তাহিক হাট (প্রতি মঙ্গলবার) ও বারইপটল নূরানী তামিমুল মাদরাসা ও কোরআন হেফজখানা গড়ে তুলেছেন এলাকাবাসী। তারা মসজিদের সাথে জমি ক্রয় করে হলেও সকলের সহযোগীতা নিয়ে ঈদগাহ মাঠ ও মুসুল্লীদের জানাযা নামাজের জন্য মাঠ তৈরী করবেন।
এলাকার জনগন ও মুক্তিযোদ্ধারা জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্থানী দালাল সাদ্দাতুল ইসলাম (মস্তান) স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধীতা করে পাকহানাদার বাহিনীকে খবর দিয়ে বারই পটল গ্রামে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদেরকে আক্রমন করে অন্ততঃ ১০ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ ৫০ জনকেকে হত্যা করে এবং ঘর-বাড়ী জ্বালিয়ে দেয়ার ফলে অসংখ্য গরু-বাছুর-ছাগল মারা যায়। তারই ছেলে এই সে ভূমি মালিক সুজাত আলী মসজিদের উন্নয়নেও বিরোধীতা করে মসজিদের একান্ত প্রয়োজনীয় জমি না দিয়ে গোপনে বিক্রি করে দিয়েছে। আমরা ওই বিক্রিত ১০ শতাংশ জমি ফেরত চাই বলে জানান।