নিজস্ব প্রতিনিধি : সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব জানতে পারে যে, কতিপয় ব্যক্তি বাংলাদেশে অনলাইনে নিষিদ্ধ ভার্চুয়াল মুদ্রা BitCoin ক্রয় বিক্রয় করে আসছে এবং এর মাধ্যমে অর্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করে আসছে। এরই ধারাহিকতায় র্যাবের সাইবার মনিটরিং সেল এর মাধ্যমে অনলাইন পেট্রোলিং এ সক্রিয় হয় এবং গোয়েন্দা নজরদারী ও ছায়া তদন্ত অব্যাহত রাখে। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব অনলাইনে নিষিদ্ধ মুদ্রা BitCoin ক্রয়-বিক্রয় ও প্রতারণার মাধ্যমে অবৈধ অর্থ উপার্জনকারী কতিপয় চক্রকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। অধিকতর নজরদারীর মাধ্যমে র্যাবের নিকট অনলাইনে নিষিদ্ধ মুদ্রা BitCoin ক্রয়-বিক্রয়ের মূল হোতা হিসেবে মোঃ রায়হান হোসেন এর নাম উঠে আসে। ফলে র্যাব তার উপর গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। র্যাবের প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, মোঃ রায়হান হোসেন অনলাইনে ভার্চুয়াল মুদ্রা BitCoin এর মাধ্যমে সাধারণ লোকজনের টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারনাসহ মানি লন্ডারিং, ক্রেডিট কার্ড হ্যাকিং ও বিপুল অংকের নিষিদ্ধ অনলাইন মুদ্রা BitCoin লেনদেন করেছে।
এরই প্রেক্ষিতে অদ্য ১৩ জানুয়ারি ২০২১ তারিখ অনুমানিক ০১৫০ ঘটিকায় র্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার সফিপুর দক্ষিণপাড়াস্থ আতর আলী এর ৩য় তলা বাসার নিচ তলায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে অনলাইনে নিষিদ্ধ মুদ্রা BitCoin ক্রয়-বিক্রয়সহ মানি লন্ডারিং, ক্রেডিট কার্ড হ্যাকিং এর মাস্টারমাইন্ড মোঃ রায়হান হোসেন @ রায়হান (২৯) কে গ্রেফতার করে। উক্ত অভিযান পরিচালনাকালে তার নিকট হতে ১৯টি ভূয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, ২২ টি সিমকার্ড, নগদ ২৫ ইউএস ডলারসহ নগদ ১,২৭৫/- টাকা, ০১ টি কম্পিউটার, ০৩ টি মোবাইল ফোন, ০১ টি অডি গাড়ী ক্রয়-বিক্রয়ের সনদপত্র, ০৩ টি ভূয়া চালান বই, ০১ টি ট্রেড লাইসেন্স, ০১ টি TIN সার্টিফিকেট, ০১ টি রেকর্ডিং মাইক্রোফোন, ০১ টি ক্যামেরা, ০১ টি রাউটার, ০১ টি হেডফোন, ০১ টি মডেম, বিভিন্ন ব্যাংকের ০৪ টি চেক বই উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে ২০০৬ সালে ব্যক্তিগত আগ্রহে কম্পিউটারের উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার পর সে ২০১১ সাল হতে Web Developing, Graphic Degining , youtube Channel ইত্যাদি পরিচালনা করে আসছিল। সে ২০২০ সালের জুন মাস হতে পাকিস্তানি নাগরিক জনৈক সাইদ (২২) এর সহায়তায় সরকার কর্তৃক অননুমোদিত/অবৈধ BitCoin নামক ভার্চুয়াল মুদ্রা এর মাধ্যমে প্রতারনা করে অবৈধ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছে। ধৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে আরোও জানা যায় যে, সে ২০২০ সালের জুন হতে Online Activist হিসেবে বিভিন্ন দেশের Clients এর সাথে অননুমোদিত/ অবৈধ BitCoin ভার্চুয়াল মুদ্রা এর মাধ্যমে প্রতারনামূলকভাবে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছে। সে পাকিস্তান, নাইজেরিয়া এবং রাশিয়ান স্মাগলার, ক্রেডিট কার্ড হ্যাকার ও অননুমোদিত/অবৈধ BitCoin (ভার্চুয়াল মুদ্রা) এর মাধ্যমে অবৈধ পাচারকারীদের সাথে যোগসাজসে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারনা ও জালিয়াতি করে আসছে। সে ক্রেডিট কার্ড হ্যাকিং এর মাধ্যমে ভার্চুয়াল মুদ্রা BitCoin ক্রয় করে। ধৃত আসামী রায়হান হোসেন স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহার করে নামে-বেনামে দেশী এবং বিদেশী অনলাইন ব্যাংক হিসাব তদারকি করতঃ এখন পর্যন্ত ৩৫,০০০/- ইউএস ডলার হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা যায়। প্রতারক রায়হান হোসেন M.R.H SOFTWARE DEVELOPMENT নামক কোম্পানির পরিচয় দিয়ে দেশে অননুমোদিত/অবৈধ Bit Coin (ভার্চুয়াল মুদ্রা) এর মাধ্যমে একাধিক ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়। ধৃত আসামী দেশে অননুমোদিত/অবৈধ BitCoin (ভার্চুয়াল মুদ্রা) এর মাধ্যমে প্রতারনা ও জালিয়াতি করে থাকে যাতে কোন ধরণের প্রমাণ থাকে না। তার নিকট হতে উদ্ধারকৃত বিভিন্ন কোম্পানির ২২ টি সিম কার্ড, তার নিজ নামীয় ১৯ টি জাল জাতীয় পরিচয়পত্র এবং Bangladesh Postal Service এর চালান পত্র বইগুলি সে প্রতারনা ও জালিয়াতির কাজে ব্যবহার করে এবং জাল পরিচয়পত্র সে নিজেই তৈরী করত বলে জানায়। সে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ৫/৬ মাস পূর্বে ১ কোটি ৭ লক্ষ টাকা দিয়ে তেজগাঁও গুলশান লিংক রোডের শোরুম হতে AUDI গাড়ী ক্রয় করে। সে গত ২০২০ সালের জুন মাস হতে তার বিভিন্ন দেশের সহযোগীদের সহায়তায় অদ্যবধি BitCoin (ভার্চুয়াল মুদ্রা) এর মাধ্যমে প্রতারনা ও জালিয়াতি করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থের মালিক হয় মর্মে স্বীকার করে।