নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনার কারণে দীর্ঘ এক বছর ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে করোনার প্রাদুর্ভাব কিছুটা কমে যাওয়ায় সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে বেশ কিছু কারণে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। যেখানে বারবার হল খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এমন পরিস্থিতিতে সোমবার দুপুর দুইটায় অনলাইনে জরুরী সংবাদ সম্মেলনে আসেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তারিখ ঘোষণা করেন তিনি।
মন্ত্রী জানান, দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ২৪ মে থেকে শুরু হবে এবং হল খুলবে ১৭ মে। এর আগে সকল ধরণের পাঠদান ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। ১৭ মে এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আবাসিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারিদের করোনা টিকা প্রদান করা হবে।
এছাড়া, বিসিএস পরীক্ষার আবেদন ও পরীক্ষার তারিখ বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নির্ধারণ করা হবে। স্কুল কলেজ খোলার বিষয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলমান ছুটির পর জানানো হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
এর আগে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, করোনাকালে উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সোমবার দুপুর ২টায় শিক্ষামন্ত্রী অনলাইন সংবাদ সম্মেলন করবেন।
গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কয়েক ধাপে বাড়ানোর পর ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
গত ২২ জানুয়ারি করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে গাইডলাইন প্রকাশ করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর। এ গাইডলাইন অনুসরণ করে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নিতে বলা হয়। স্কুল-কলেজগুলোতে ৩৯ পাতার গাইডলাইন পাঠিয়ে বলা হয়, ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে স্কুলগুলো প্রস্তুত করে রাখতে, যাতে যে কোনো মুহূর্তে সেগুলো খুলে দেয়া যেতে পারে।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে গোটা বিশ্বকে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের এই প্রতিকূল স্রোতের মুখোমুখি বাংলাদেশও। অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মতো বাংলাদেশের জন্য আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষাখাত। প্রায় ১২ মাস ধরে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। কিছু ক্ষেত্রে অনলাইনে কার্যক্রম চলমান। তবে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম কতটা ফলপ্রসূ হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
পরিস্থিতি বিবেচনায় চলতি বছর উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় অটো প্রমোশন বা অটোপাস ঘোষণা করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষাও। এবার করোনার ঢেউয়ের মুখে ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা।
দেশে করোনা পরিস্থিতি বলা যায় আগের মতোই। প্রতিদিন মৃত্যু ও শনাক্তের শঙ্কা উঠা-নামা করছে। অন্যদিকে দরজায় কড়া নাড়ছে এসএসসি’ ২১ ব্যাচের পরীক্ষার সময়। গত বছর এসএসসি ২০২০ ব্যাচের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ফেব্রুয়ারিতে। এ বছর ফেব্রুয়ারি চলছে। কিন্তু এর মধ্যে পরীক্ষা নেওয়ার বা দেওয়ার মতো কোনো প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে করোনার ভয় রয়েছে। ফলে তড়িঘড়ি পরীক্ষা দিতে অনাগ্রহী শিক্ষার্থীরা।