ফের ভাড়া বৃদ্ধি ক্ষুব্ধ যাত্রীরা

অর্থনীতি এইমাত্র

৫০ শতাংশ সিট ফাঁকা রেখে ভাড়া বাড়ছে ৬০ শতাংশ


বিজ্ঞাপন

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও বাড়তে থাকায় সরকার ১৮টি জরুরি নির্দেশনা জারি করেছে। এর মধ্যে গণপরিবহনে ৫০ শতাংশ সিট ফাঁকা রাখার কথা বলা হয়েছে। সেই নির্দেশনার আলোকে আগামী দুই সপ্তাহের জন্য গণপরিবহনের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
বুধবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে এবং পরবর্তী দুই সপ্তাহ তা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
এর আগে গত সোমবার গণপরিবহনে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা জারি করে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ কথা বলা হয়।
সরকারের এমন নির্দেশনার পর ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওই সিদ্ধান্তের কথা তিনি জানতে পেরেছেন। তবে এখন পর্যন্ত এ নিয়ে বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হয়নি। এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হলে গত বছরের মতো নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়াতে হবে।
সোমবারের ওই নির্দেশনায় আরো বলা হয়, সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাতে আন্তঃজেলা যান চলাচল সীমিত করতে হবে। প্রয়োজনে বন্ধ রাখতে হবে। বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিন পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক (হোটেলে নিজ খরচে) কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে।
এর আগে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে ২০২০সালের ৩১ মে থেকে গণপরিবহনে অর্ধেক আসন খালি রাখতে বলে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। তখন বাস মালিকদের দাবির মুখে বাস ভাড়া ৬০ ভাগ বাড়ায় সরকার। এর আগে দীর্ঘদিন গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকে।
তবে করোনার সংক্রমণ কিছুটা কমে আসায় গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে আবারও বাসের সব সিটে যাত্রী পরিবহন শুরু হয়।
ভাড়া বৃদ্ধিতে যাত্রীরা ক্ষুব্ধ : করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে সরকারের নির্দেশনা মানার অজুহাতে গণপরিবহনে ফের বাড়ানো হলো ভাড়া। বুধবার থেকে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের বিপরীতে ৬০ ভাগ ভাড়া বেশি নেওয়া হবে। এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ জানিয়েছেন যাত্রীরা। আগের বারের অভিজ্ঞতায় তাদের অভিযোগ, ভাড়া বেশি নিলেও বাসভর্তি যাত্রী ওঠানো চলে অহরহই। এদিকে, আগের ভাড়াতেই এক আসন ফাঁকা রেখে বিক্রি হচ্ছে ট্রেনের টিকিট।
করোনা প্রতিরোধে গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী বহনের সরকারি নির্দেশনা আসার সঙ্গে সঙ্গে ঘোষণা আসে ৬০ ভাগ ভাড়া বৃদ্ধির। বাড়তি এই ভাড়া কার্যকর হবে বুধবার থেকে। তবে এক সিট খালি রেখে যাত্রী বসানোর প্রবণতা একেবারেই অনুপস্থিত।
করোনাকালে ভাড়াবৃদ্ধিতে বাড়তি চাপ উল্লেখ করে এমন সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন যাত্রীরা। এক সিট ফাঁকা রাখার নির্দেশনা না মেনেই পরিবহনগুলো বাড়তি ভাড়া নিবে বলেও শঙ্কা তাদের।
যাত্রীরা জানান, ওনারা যদি একজন করে নিত তাহলে আমরা সেভাবে যেতাম। তারা সেই নিয়ম মানবে না। উল্টো পুরো সিটে যাত্রী নিয়ে ভাড়া বেশি নেবে।
গণপরিবহনে গাদাগাদি করে যাত্রী তোলার পাশাপাশি উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধিও। ছুটির দিনেও ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ বেশির ভাগ জায়গায় দেখা যায় একই চিত্র। যাত্রীদের অভিযোগ, বাসের হেলপার সুপার ভাইজাররা সিট না থাকলেও জোর করে যাত্রী তোলেন।
বাসের স্টাফরা জানান, অর্ধেক যাত্রী তোলার নির্দেশনা তারা এখনো পান নি। আসলে যেভাবে আমরা নির্দেশনা মেনে চলবো।
এদিকে, এক আসন ফাঁকা রেখে সব আন্তঃনগর, মেইল ও কমিউটার ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মঙ্গলবার আগের ভাড়া অনুযায়ী বিক্রি হয় অর্ধেক টিকিট। আগাম টিকিট বিক্রি করা ট্রেন চলবে আগের নিয়মে।