বিশেষ প্রতিবেদক : সারা দেশে সর্বাত্মক লকডাউনের চতুর্থ দিন শনিবার। গত তিন দিনের তুলনায় ঢাকার রাস্তায় মানুষের ভিড় কিছুটা বেশি দেখা গেছে। কর্মস্থলে যেতে বেশ ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেকে। গাড়ি না পেয়ে অনেকেই হেঁটে বা রিকশায় কর্মস্থলে গেছেন।
আসাদগেটে আল আমিন ইসলাম প্রাইভেট কার এলেই হাত নেড়ে থামার জন্য ইশারা করছিলেন। তিনি ডেভেলপারের কাজ করেন। যাবেন উত্তরায়। রিকশায় করে মোহাম্মদপুর থেকে সকাল সাড়ে আটটায় বের হয়ে আল আমিন ইসলাম আসেন আসাদগেটে। সকাল ১০টায়ও তিনি উত্তরায় যাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘প্রাইভেট কার, সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ভেঙে ভেঙে যেতে হচ্ছে। কিছু কিছু প্রাইভেট কারের চালক তাঁদের মালিককে রেখে যাওয়ার সময় ভাড়ায় নিয়ে যায়। সে জন্য অপেক্ষা করছি।’
মোহাম্মদপুরের রাস্তায় জোরে হাঁটছিলেন ইফতেখার বাপ্পী। তিনি এসিআইয়ের টেরিটরি অফিসার। সরবরাহ করেন নিত্যপ্রয়োজনীয় মেডিকেল ও অন্যান্য সামগ্রী। তিনি বলেন, আমিনবাজার থেকে হেঁটে যাচ্ছি টাউন হল পর্যন্ত। অনেক ভাড়া চায় রিকশা। তাই হেঁটেই যেতে হচ্ছে। আমাদের অফিসে যেতেই হয়। আবদুল হামিদ মিরপুরের হাইভ্যালি ফ্যান কোম্পানিতে কাজ করেন। তিনি বলেন, যেদিন একেবারেই কোনো যানবাহন পাই না, সেদিন যাই না।
জীবিকার তাগিদে মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় বের হয়েছেন কবির হোসেন। তিনি বলেন, পেটের দায়ে নেমেছি। করোনায় চাকরি নেই। তাই রাইড (অ্যাপসভিত্তিক মোটরসাইকেল সেবা) দিচ্ছিলাম। কিন্তু এখন বন্ধ। অন্য সময় দিনে এক হাজার টাকা করে লাভ থাকে। সেই আয়ে টানা পাঁচ থেকে সাত দিন বসে খাওয়া সম্ভব না। কবির হোসেন জানান, পুলিশি ঝামেলা এড়াতে অলিগলি দিয়ে বাইক চালান।
ফার্মগেটে চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করছিলেন ট্রাফিক পুলিশ সার্জেন্ট মো. আরিফ। তিনি বলেন, মানুষ একটু বেশি বের হচ্ছে। রাস্তায় বের হওয়ার বাস্তবিক কারণ দেখাচ্ছেন তাঁরা। কেউ টিকা নেওয়ার কথা বলছেন, কেউ হাসপাতালের কথা বলে, কেউ ফ্লাইটের কথা বলছেন। আরিফ জানান, অনেকেই মুভমেন্ট পাস নেননি। কীভাবে নিতে হয়, তা জানেন না। জরুরি কিছু হলে সে ক্ষেত্রে তাঁরা যেতে দিচ্ছেন।