তনুজা মন্ডল : আমরা বেসিক্যালি ব্যক্তিগত জীবনে চূড়ান্ত অসুখী, হীনমন্যতায় ভোগা চরম হতাশ এবং ইতর এক জাতি।
এবং এটা বংশানুক্রমিক।
আমাদের দাদা-দাদী, ঠাম্মা-ঠাকুরদা, বাপ-মায়েরা আমাদের নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন, আমরা তারকা হব।
ভদ্র হব- এই স্বপ্ন বা চেষ্টা তাদের ছিল না।
PSC, JSC, SSC, HSC, মেডিক্যাল/ইঞ্জিয়ারিং ভর্তি পরীক্ষা থেকে শুরু করে হালের BCS- সকল পরীক্ষা নিয়ে আমাদের অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা এবং পরীক্ষা পরবর্তী আমাদের ব্যর্থতায় তাদের হাহাকার অথবা সফলতায় তাদের উচ্ছ্বাস ও গর্ব আমাদের মনে এই বোধ দৃঢ় করেছে যে, এইসকল সফলতাই মানুষ হিসেবে অর্জনের একমাত্র বিষয়। সুতরাং, এ সকল পরীক্ষায় যারা সফল হয়েছেন, তারা ধরাকে সরা জ্ঞান করে নোংরামি করছেন। আর যারা বিফল, তারা হতাশায়, ক্ষোভে নোংরামি করছেন। কারণ, ছোটবেলায় পরীক্ষার পড়ার ঠেলায় ভদ্রতা শেখার সময় আমরা পাইনি।
রাস্তায় রিক্সাচালক বা মুদি দোকানদারের সাথে দুর্ব্যবহার করে এলে বাপ-মায়েদের এমন কাঁদতে আমি দেখিনি, যেমন তারা কাঁদেন A+ মিস হলে।
ফলশ্রুতিতে আমরা এক নোংরা জাতিতে রূপান্তরিত হয়েছি।
আমি ডাক্তার-পুলিশের বিতর্কের ভিডিও দেখে যত না আতংকিত, তার চেয়ে অনেক বেশি আতংকিত এই বিষয়ে গোটা জাতি’র নোংরা মন্তব্যে।
ঘটনা যখন ঘটেছে, তখন ৩ জনই উত্তেজিত ছিলেন (অবশ্যই তারা দায়িত্বশীল আচরণ করেননি), ধরে নিলাম, উত্তেজনায় তারা নিজেদের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এই বিশ্রী আচরণ করেছেন।
কিন্তু, আমরা যারা নিজের বেডরুমে বা অফিসের এসিতে আরামে বসে ঠান্ডা মাথায় এদের নিয়ে (বিশেষত তাদের বাবাদের পরিচয় নিয়ে) আরও নোংরাতর মন্তব্য করছি, তারাই আসলে এই জাতিকে represent করি।
ডাক্তার, পুলিশ, প্রশাসন কে নিয়ে আলাদা করে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আপনার-আমার মত লোকেরাও যার যার জায়গায় পর্যাপ্ত ইতর। আমরা জাতিগতভাবেই ইতর।