ইনবক্সে রোগীর বার্তা, অননুমোদিত ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিল পুলিশ

অপরাধ

বিশেষ প্রতিনিধি : রাজধানীর দক্ষিণখানে এক গৃহবধু গিয়েছেন দাঁতের ডাক্তারের কাছে। হাজী সি‌দ্দিক মা‌র্কেটে চেম্বার। চেম্বা‌রের নাম মীর ডেন্ট। দামী আসবাব ও সুন্দর ডেকোরেশনে সাজানো চেম্বারটি। কয়েকবার এ‌ ডাক্তার‌কে দাঁতও দেখিয়েছেন। খরচ করেছেন হাজার হাজার টাকা।


বিজ্ঞাপন

কিন্তু, চিকিৎসায় তার খটকা লাগে। তার মনে হচ্ছিল তিনি সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তাই, তিনি গিয়েছেন অন্য একজন ডাক্তারের কাছে। সেই ডাক্তার পূর্বের ডাক্তারের চিকিৎসা সঠিক নয় এবং সন্দেহজনক বলে মত ব্যক্ত করেন।

রোগী ভদ্রমহিলা তার স্বামীকে জানালে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যেতে পরামর্শ দেন। কেননা, সেই ডাক্তার ও তার পরিবার এলাকায় প্রভাবশালী। এখানে তাদের বাড়ি, সম্পত্তি ও অনেক আত্মীয়-স্বজন রয়েছে। তাদের সাথে ঝামেলায় গিয়ে এলাকায় টিকে থাকতে পারবেন না। কিন্তু, স্ত্রী ভদ্রমহিলা বিষয়টি মেনে নিতে পারছিলেন না। মঙ্গলবার তিনি বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং পরিচালিত বাংলাদেশ পুলিশ ফেইসবুক পেইজের ইনবক্সে বিষয়টি জানিয়ে বার্তা পাঠান। তিনি অনুরোধ করেন যেনো উক্ত ডাক্তারের বিষয়টি একটু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হয়। তবে, ভদ্রমহিলা কোনোভাবেই থানায় কোনো নিয়মিত অভিযোগ বা মামলা করতে অস্বীকার করেন।

ভদ্রমহিলার বার্তাটি দক্ষিণখান থানার ওসি সিকদার মো. শামীম হোসেনকে পাঠিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয় মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং। পাশাপাশি, দক্ষিণখান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার গোস্বামীকে পরামর্শ দেন বিষয়টি সুপারভাইজ করতে। এর প্রেক্ষিতে, ইন্সপেক্টর অপারেশন্স মো. আফতাব উদ্দন শেখ এর নেতৃত্বে সাব-ইন্সপেক্টর মো. মোশাররফ হোসেনসহ পুলিশের একটি টিম সাদা পোশাকে বিষয়টি তদন্তে নামে।

তদন্তে তারা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হন অভিযুক্ত ডাক্তার পাস করা কোনো ডাক্তার নন। দাঁতের ডাক্তার হিসেবে তার কোনো প্রোফেশনাল সার্টিফিকেটও নেই। এই ব্যক্তি এভাবে দীর্ঘদিন ধরে নিরীহ রোগীদের সাথে প্রতারণা করে আসছিলেন। উক্ত ডাক্তারের দাবী, তিনি তার ডাক্তার বন্ধুদেরকে চিকিৎসায় সহায়তা করে থাকেন মাত্র। কিন্তু, সরেজমিনে দেখা গেছে, অনুমোদিত ডাক্তার না হয়েও তিনি দাঁতের চিকিৎসা করছেন। চেম্বার‌টি তাৎক্ষ‌নিকভা‌বে বন্ধ ক‌রে দেয়া হ‌য়ে‌ছে। এ বিষয়ে উপযুক্ত আইনী ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।