রপ্তানি বৃদ্ধিতে পণ্যের হালাল সার্টিফিকেশন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে বিএসটিআই : শিল্পমন্ত্রী

জাতীয়

নিজস্ব প্রতিনিধি : শিল্পখাতে উন্নয়নের চলমান ধারা অব্যাহত রাখতে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দেশিয় পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষে মানসম্মত পণ্যের উৎপাদনে সকল ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করার তাগিদ দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এমপি। তিনি বলেন মানসম্মত পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধিতে আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বিশ্বব্যাপী পণ্যের হালাল সনদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দেশিয় রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষে পণ্যের হালাল সার্টিফিকেশন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে পণ্যের মান প্রণয়ন ও নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)।


বিজ্ঞাপন

বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস-২০২১ উপলক্ষে বিএসটিআই আয়োজিত “শিল্পোন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর ভাবনা : পণ্য ও স্বাস্থ্য সেবায় পরিমাপের গুরুত্ব” শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

রাজধানীর তেজগাঁওস্থ বিএসটিআই প্রধান কার্যালয়ের মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএসটিআই মহাপরিচালক (গ্রেড-১) ড. মোঃ নজরুল আনোয়ার। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পরিচালক (মেট্রোলজি) শামীম আরা বেগম। এছাড়াও অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিএসটিআই’র কাউন্সিলের সদস্যবৃন্দ, মান প্রণয়নে বিশেষজ্ঞগণ, শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, স্টেকহোল্ডার ও সাংবাদিকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৬ সালে তৎকালীন কোয়ালিশন সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি তৃণমূল পর্যায়ে শিল্পায়ানের ধারা বেগবান করতে চেয়েছিলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে আজ শিল্পায়ানসহ সকল ক্ষেত্রে অপ্রতিরোধ্য গতিতে উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিএসটিআইকে একটি শক্তিশালী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। সে অনুযায়ী বিএসটিআই’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করে উহার কার্যক্রমকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সম্প্রসারণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি করোনাকালীন সময়ে বিগত ১০মাসে জরুরি সেবা অব্যাহত রেখে শিল্পায়নের চাকা গতিশীল রাখতে বিএসটিআই’র কার্যক্রমের প্রশংসা করেন।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৬ সালে তৎকালীন কোয়ালিশন সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলো বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত শিল্প সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলা। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। জাতির পিতার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তৎকালিন মান সংস্থা-বাংলাদেশ স্টান্ডার্ডস ইনস্টিটিউশন (বিডিএসআই) বর্তমান বিএসটিআই ১৯৭৪ সালে আন্তর্জাতিক মান সংস্থা (আইএসও)’র সদস্য পদ লাভ করে। আন্তর্জাতিক মানের সাথে সংগতি রেখে শিল্পোন্ননের বর্তমান ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। তিনি আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতে মানসম্মত পণ্য উৎপাদন ও সঠিক ওজন ও পরিমাপের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। শিল্প পণ্য উৎপাদনসহ ক্রয় বিক্রয়ে সকল ক্ষেত্রে সঠিক ওজন ও পরিমাপ নিশ্চিকরণে ভোক্তা, স্টেকহোল্ডার, শিল্পোদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী এবং বিএসটিআই’র প্রতি আহ্বান জানান।

শিল্প সচিব বলেন পণ্যের সঠিক ওজন ও পরিমাপ নিশ্চিতকরণে বিএসটিআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিশ^ মেট্রোলজি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচির মাধ্যমে ভোক্তা সাধারণ, পণ্য উৎপাদনকারি, ব্যবসায়ী, শিল্পোদোক্তা, আমদানিকারক ও বিপনণের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে সঠিক ওজন ও পরিমাপের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। একই সাথে তিনি সঠিক ওজন ও পরিমাপ নিশ্চিতকরণে বিএসটিআই’র কার্যক্রম জোরদার করতে আহ্বান জানান।

মানসম্পন্ন পণ্য এবং সঠিক ওজন ও পরিমাপ নিশ্চিককরণে মাঠ পর্যায়ে বিএসটিআই’র প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও ল্যাবরেটরি সম্প্রসারণ, মান চিহ্ন নকল প্রতিরোধে অনলাইন কিউআর কোড সম্বলিত লাইসেন্স/ সার্টিফিকেট প্রদান, পণ্যের হালাল সনদ প্রদান, স্বর্ণের বিশুদ্ধতা যাচাইপূর্বক সনদ প্রদান, কর্মকর্তা/কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাগসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন বিএসটিআই মহাপরিচালক। তিনি জানান, পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ এবং ওজন ও পরিমাপে কারচুপিরোধে বিগত ১০ মাসে (জুলাই ২০২০-এপ্রিল ২০২১) মোট ৮৯০টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে ১৪৮৯টি মামলা দায়ের এবং ৬কোটি ২৪ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময়ে ১৫০৪টি সার্ভিল্যান্স পরিচালনার মাধ্যমে ৫০৯টি মামলা দায়ের করা হয়।