নিজস্ব প্রতিবেদক : সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলাচলের সরকারি নির্দেশনা থাকলেও যাত্রী ও চালকদের মাঝে মাস্ক পরার প্রবণতা কম। যাত্রীদের যেমন রয়েছে অসচেতনতা, চালক-হেলপারদের মধ্যেও নেই স্বাস্থ্যবিধি মানার আগ্রহ। বরং উল্টো নানা অজুহাত দিচ্ছেন তারা। যদিও গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং ঘরের বাইরে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করছে সরকার।
সোমবার সকাল থেকে রাজধানীর মিরপুর, ফার্মগেট ও গাবতলী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাসগুলোতে যাত্রীদের চাপ কম। এক সারিতে একটি আসন ফাঁকা রেখে যাত্রীরা বসছেন। যদিও কোনও কোনও বাসে দুই সিটেই পাশাপাশি বসিয়ে যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি উদাসীনতা দেখা যায় মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে। কেউ পকেটে, কেউবা থুতনির নিচে ঝুলিয়ে রেখেছেন মাস্ক। একটি আসন ফাঁকা রাখার কারণে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির করা হয়েছে। তবে কোনও কোনও বাস কোম্পানির বিরুদ্ধে বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে যাত্রীদের।
রাজধানীর চিড়িয়াখানা থেকে ছেড়ে এসেছে দিশারী পরিবহন। শ্যামলীতে দেখা গেলো এই প্রতিষ্ঠানের একটি বাসের হেলপারের মুখে মাস্ক নেই। বাসের ভেতরে থাকা কয়েকজন যাত্রীও মাস্ক পরেননি। বাসটির হেলপার জামাল মিয়া বলেন, ‘যাত্রী ডাকার সময় মাস্ক খুলেছি। মাস্ক পরে ডাকলে অনেকেই বোঝেন না। অন্য সময় মাস্ক পরি, যাত্রীদেরও পরতে বলি। যাত্রীরা যদি মাস্ক না পরে, আমরা তো আর জোর করতে পারি না।’
সকালে অফিস সময়ে যাত্রীর চাপ থাকলেও সারাদিন যাত্রী কম থাকে বলে জানান বাস চালকরা। যাত্রীর চাপ কম থাকায় এমনিতেই বাসে কম যাত্রী থাকে। গাবতলী থেকে ছেড়ে আসা ৮ নম্বর বাসের চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অফিসের সময়ে যাত্রী থাকে। তখন যাত্রীরাও বাসে ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি করেন। আর সারা দিনে যাত্রী এমনিতেই কম। চাইলেও বাড়তি নেবো কীভাবে।’
বাসের ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ— ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করায় যাতায়াত খরচ বেড়েছে। কোনও কোনও বাসে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ করেন যাত্রীরা। রাজধানীর কাজিপাড়া থেকে মতিঝিলে গিয়ে অফিস করেন আমান উল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমাদের বেতন তো বাড়েনি। কিন্তু সরকার ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে। কোনও কোনও সময় বাসগুলো সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়েও বেশি রাখছে। অফিসেতো যেতে হবেই, তাই বাড়তি ভাড়া নিলেও বাসে উঠতে হয়।’
যাত্রা শুরু ও শেষে যানবাহন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা ও জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করার বিধান থাকলেও বাসগুলো তা মানছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চালক ও হেলপার জানিয়েছেন, এমনিতে আমরা রাতে গাড়ি রাখার সময় পরিষ্কার করি। কিন্তু যাত্রা শুরু ও শেষে এটা করা সম্ভব হয় না। আর জীবাণুনাশক যদি বাসের মালিক আমাদের না দেন, আমরা কীভাবে এটা দেবো। আমাদের পক্ষে তো নিজের পকেটের টাকা দিয়ে করা সম্ভব না।’