পলিথিন থেকে জ্বালানি তেল উৎপাদন

অন্যান্য অর্থনীতি এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন বানিজ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সারাদেশ

বিশেষ প্রতিবেদক : ব্যবহৃত পলিথিন থেকে জ্বালানি তেলসহ বেশ কিছু কেমিকেল উৎপাদন শুরু করেছে জামালপুরের উদ্ভাবক তৌহিদুল ইসলাম। তার দাবি, এর মাধ্যমে পলিথিনের ক্ষতি থেকে পরিবেশ বাঁচানো সম্ভব। উৎপাদিত তেলের মান ভালো হওয়ায় এ পদ্ধতি মহানগর ও জেলা পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এ পদ্ধতিতে পলিথিন ধ্বংস হলেও এর ব্যবহার কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।
হাজার বছর মাটি বা পানিতে পড়ে থাকলেও ধ্বংস হয় না পলিথিন। পরিবেশ বাঁচাতে প্রায় দুই বছর ধরে পলিথিন নিঃশেষ করে শক্তিশালী জ্বালানি উৎপাদন করছেন জামালপুরের উদ্ভাবক তৌহিদুল ইসলাম।
গবেষণা তার নেশা। শখের বাগানের গোলাপ গাছ মরে যাওয়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে তিনি গাছের গোড়ায় পান পলিথিন। তাই পলিথিন নিঃশেষ করতে মরিয়া হন তৌহিদ। দুইবার বাড়িতে বিস্ফোরণের শিকার হলেও থেমে যাননি। ২০১১ সালে সফল হন পরিশোধিত তেল উৎপাদনে। জাতীয় পরিবেশ পদক, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে উদ্ভাবকের স্বীকৃতি, মালয়েশিয়ার আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান মেলার স্বীকৃতি এখন তার ঝুলিতে।
তৌহিদ বলেন, রিঅ্যাক্টর চেম্বারে ১০০ কেজি পলিথিন দিয়ে সাড়ে ছয় ঘণ্টা ৩৫০ থেকে ৮৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপ দিতে হয়। এতে জ্বালানি তেলের বাষ্প বের হয়ে আসে। বাষ্পকে ঠান্ডা করলে পাওয়া যায় তেল ও গ্যাস। রিঅ্যাক্টর চেম্বারে ছাপার কালি ও সেপারেটর দিয়ে গ্যাস ও তেল আলাদা করা হয়।
উৎপাদিত তেল মানের দিক থেকে খনির তেলের মতোই হওয়ায় আশাবাদী প্রশাসন। সারা দেশে স্বল্প খরচের এ প্রযুক্তি ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিচ্ছেন তারা।
ঢাকা আইসিটি বিভাগের এটুআই প্রকল্প পরিচালক মো. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, সমস্ত জিনিসপত্র লোকালি তৈরি করেছে খুবই কম খরচে। প্রত্যেকটা জেলায় একটা ডাম্পিং স্টেশন আছে। শুধুমাত্র সেখানের পলিথিনগুলো কালেক্ট করে রিসাইকেল করলে অনেক লাভ।
এ পদ্ধতিতে পলিথিন ধ্বংস করে পরিবেশকে রক্ষা করলেও এতেও ক্ষতিকর কার্বন নিঃসরণ হয় বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।
তাপ বিক্রিয়ার মাধ্যমে উৎপাদিত হচ্ছে বর্জ্য পলিথিন থেকে তেল ও গ্যাস। উৎপাদিত মিথেন গ্যাস সংরক্ষণের অভাবে জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে। অপরদিকে অপরিশোধিত তেল থেকে পেট্রোল ও ডিজেল উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। পরিবেশবিদদের দাবি, এ পদ্ধতি সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়া গেলে পলিথিনের ভয়াবহতা থেকে দেশের পরিবেশকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *