বিনোদন রিপোর্টার : গতকাল ১০ জুন ছিল বাংলা চলচ্চিত্রের আধুনিকতার সূতিকাগার খ্যাত জুটি মৌসুমী – সালমানের ক্লাসিক, রোমান্টিক অন্তরে অন্তরে সিনেমার ২৭ বছর পূর্তি। নন্দিত নির্মাতা শিবলী সাদিকের এক জাদুকরী নির্মাণ সুপার ডুপার হিট অন্তরে অন্তরে ছিল উক্ত জুটির ২য় সিনেমা যা মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালের এ দিনে।
অভিষেকে জনপ্রিয়তায় সর্বোচ্চ শিখরে গিয়ে ঢালিউডের নজির গড়েন মৌসুমী – সালমান। তারপর বাকিটা ইতিহাস।
নায়ক নায়িকার কেমিস্ট্রি, খুনসুটি,পাগলামি,মান অভিমান বা ক্ষ্যাপাটে তরুন তরুনীর এক নির্মল প্রেমকাব্য রচিত হয় এবং সর্বোচ্চ জনপ্রিয়তায় অনবদ্য নির্মাণগুণে আজও দর্শকদের মুখে মুখে ফেরে সিনেমার গান,গল্প বা সংলাপ।
মনে হয় এই তো সেদিনের সান – ঝিনুকের খুনসুটি আর উন্মাতাল প্রেমের দ্বীপ সেন্টমার্টিন ও সাক্ষী হয়ে রইল বহু উপকাব্যের স্মৃতি নিয়ে।
বাংলাদেশে প্রথম কোন সিনেমার সম্পূর্ণ চিত্রায়ণ প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে। আর এখানে দুজনে নিরজনে গানের ১ঃ৪০ মি. ব্যাপ্তির একটি দৃশ্যে মৌসুমী যে পাথরের উপর শট দিয়েছিলেন তা মৌসুমী পাথর হয়ে রইল এপিক হিসেবে। আরো জনশ্রুতি সেখানকার কোন এক আদিবাসী তার সদ্যোজাত কন্যার নামও রাখেন মৌসুমী!
কাল তো ছিলাম ভাল, আজ আমার কি হল! এমন জাদুকরী সুমিষ্টি গানের চিত্রায়ণ ও গ্লামার কুইন মৌসুমীর চঞ্চল হরিণীর উদ্দ্যামতা সাথে রুনা লায়লার গায়কী যেন প্রাণের সঞ্চার ঘটে সিকোয়েন্সের ভাজে ভাজে। এই গানে রুনা লায়লার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আসরে সেরা গায়িকার পুরস্কার অর্জন গানটাকে আরো মহিমান্বিত করেছে।
অন্তরে অন্তরে পিরিতি বাসা বান্ধেরে! স্যাড ভার্সনের এ গানে কলিজা এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যায় সদ্যো প্রস্ফুটিত তারুন্যের ক্রেজ সালমান মৌসুমীর বিষাদময় আবেশে!
ভালবাসিয়া গেলাম ফাঁসিয়া, এ যেন কাহিনীর মধ্যে উপকাহিনী,গানে গানে পরস্পরের দেমাগ,আবেগ,দাম্ভিকতা সাথে ভিন্ন কস্টিউমস এ মৌসুমী-সালমান যেন আরো এক নব অধ্যায়!
এখানে দুজনে নিরজনে সাবলিল, ন্যাচরাল প্রেমিক যুগল স্বপ্ন সারথী হয়ে স্বপ্নের জালবুনে জনমানবহীন সাগর কিনারে প্রাণের আকুতি প্রকাশ সেটাও অনন্য। মৌসুমী তো ৯৬ র এক ইন্টারভিউতে বলেছেন এটা তাঁর প্রিয় গান।
পারিবারিক দাম্ভিকতা,আভিজাত্যময় জীবন,সম্পর্কের বেড়াজাল আর জেলেদের জীবনের আত্ন অহংকার সবকিছুরই একটা নিজস্ব সম্মিলন ঘটিয়ে প্রত্যেকটি চরিত্রকে এক একটি দৃঢ় স্তম্ভের ভীতে দাঁড় করিয়েছেন পরিচালক।
প্রেম যেন পূর্ণতার জন্য! শত চোখ রাঙানো, অবিভাবকদের শাসন কিংবা দুটি ভিন্ন অবস্থানের কপোত-কপোতী, তবু ভালবাসার ছেদ পড়েনি ঝিনুক সানের শ্বাসত প্রেমের কাছে।
মৌসুমী, সালমানের তুঙ্গসম ইমেজ আর দুর্ভেদ্য প্রেম, রাজীব, আনোয়ারা’র গাম্ভীর্যময় অভিনয়, বাংলা চলচ্চিত্রে যেন রোমান্টিক সিনেমার এক নতুন উপাখ্যান!