নতুন করে বেড়েছে ১০ পণ্যের দাম

অর্থনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রতি সপ্তাহেই কোনও না কোনও পণ্যের দাম বাড়ছে। এ সপ্তাহে নতুন করে বেড়েছে আরও দশটি পণ্যের দাম। পণ্যগুলো হলো: আটা, ময়দা, ডাল, পেঁয়াজ, আদা, হলুদ, এলাচ, সয়াবিন, মুরগি ও চিনি। এছাড়া বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি, মাংস ও ডিম। রাজধানীর বাজারগুলোতে ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে। আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে আবারও। তবে দেশি পেঁয়াজ আগের মতোই ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহে যে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ছিল ৪৫ টাকা, এখন সেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। আর যে পেঁয়াজের দাম ছিল ৪০ টাকা, এখন সেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজি দরে। লকডাউন কড়াকড়ি হওয়ার খবরে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি।
গত সপ্তাহে মসুর ডালের দাম ছিল ৮৫ টাকা কেজি। এই সপ্তাহে সেই মসুরের ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি দরে। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে মসুর ডালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা। টিসিবির হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে মসুর ডালের দাম বেড়েছে তিন শতাংশের মতো।
বেশ কিছু দিন ধরে স্বাভাবিক ছিল আটা-ময়দার দাম। কিন্তু হঠাৎ করেই বেড়েছে এই দুটি পণ্যের দাম। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্যাকেট আটার দাম বেড়েছে কেজিতে এক থেকে দুই টাকা, আর খোলা ময়দার দাম বেড়েছে কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা।
রাজধানীর মানিকনগর এলাকার বাসিন্দা আবু হাসান শাহীন বলেন, ‘গত সপ্তাহে যে ময়দার দাম ছিল প্রতি কেজি ৩৬ টাকা, এখন সেই ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি।’ টিসিবির হিসাবে গত এক সপ্তাহে এই ময়দার দাম বেড়েছে প্রায় ৬ শতাংশ। আর আটার দাম বেড়েছে প্রায় ২ শতাংশ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত কয়েক মাস ধরেই অব্যাহতভাবে বেড়েই চলেছে সয়াবিন তেলের দাম। ৫ লিটার বোতল সয়াবিন তেলের দাম বাড়ছে কয়েক দফায়। এই সপ্তাহে নতুন করে আবারও বেড়েছে। গত সপ্তাহে ৬৬০ টাকায় বিক্রি হওয়া ৫ লিটার বোতল এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ২০ টাকা।
গত সপ্তাহে দাম বেড়ে যাওয়া ব্রয়লার মুরগির দাম আরও বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকার মতো। অপরিবর্তিত রয়েছে পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগি এবং লাল লেয়ার মুরগির দাম। টিসিবির হিসাবে গত এক সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে প্রায় চার শতাংশ।
ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। লাল লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা। আর সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা।
রাজধানীর বাজারগুলোতে আদার দাম কেজিতে ৬০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আমদানি করা আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে। আর এক সপ্তাহ আগে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া দেশি আদার দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা।
রাজধানীর গোপিবাগ এলাকার ব্যবসায়ী আওলাদ হোসেন বলেন, ‘কোরবানির ঈদের আগে আদাসহ বিভিন্ন মসলার দাম বাড়ে। তারই অংশ হিসেবে এখন আদার দাম বেড়েছে।’
শুধু আদা নয়, দেশি হলুদের দামও বেড়ে গেছে। গত সপ্তাহে যে হলুদ ২০০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যেত, এখন সেই হলুদের দাম ২২০ টাকা কেজি। টিসিবির হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে এই হলুদের দাম বেড়েছে প্রায় ৬ শতাংশ।
কোরবানির ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে এলাচের দাম ততই বাড়ছে। এই সপ্তাহে নতুন করে বেড়েছে এই পণ্যটির দাম। গত এক সপ্তাহে কেজিতে ১০০ টাকা বেড়েছে এলাচের দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহে তারা যে এলাচ ৩ হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। এই সপ্তাহে সেই এলাচের দাম বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৩৫০ টাকা।
গত সপ্তাহে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয়েছিল ৭০ টাকা কেজি দরে। এখন সেই চিনি কেজিতে দুই টাকা বেড়ে ৭২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে গত সপ্তাহে দাম বাড়া আলু ও ডিমের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা। আর ফার্মের মুরগির ডিম ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা। আগের মতোই দাম অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা। আর খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা।
এদিকে সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের মতো বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা। শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ঢ়েঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বরবটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, গাজর ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পাকা টমেটো ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঝিঙে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এক কেজি কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।


বিজ্ঞাপন