নিজস্ব প্রতিনিধি : ছোটবেলায় বিভিন্ন কিশোর উপন্যাস, বিশেষ করে তিন গোয়েন্দা, মাসুদ রানা অথবা দস্যু বনহুর এর বইগুলো পড়ে অ্যাডভেঞ্চারের প্রতি আকৃষ্ট হয়নি এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। গোয়েন্দাগিরি, গোপন তথ্য অনুসন্ধান কিংবা প্রয়োজনে অস্ত্র চালনায় তাদের দক্ষতা আমাদের মুগ্ধ করে। বড় হয়ে আমরাও তাদের মত হতে চাই মনে মনে।
আর এই দুর্বলতাকে কাজে লাগাতে চায় কিছু সুযোগ সন্ধানী লোক। অ্যাডভেঞ্চারের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য হেন কোন কাজ নেই যা তারা করবে না। বিদেশ ভ্রমণ, অস্ত্র চালনা, গেরিলা আক্রমণ অথবা সামরিক কায়দায় শারীরিক এবং মানসিক প্রশিক্ষণ সহ সবকিছুই আছে তাদের এই প্রলোভনের সিলেবাসে।
এরা কারা!!??
আপনার আমার মতোই মানুষ হয়তোবা। কিন্তু তাদের নাম ঠিকানা অথবা কোন দেশের নাগরিক তা কখনোই জানা যায় না। হতে পারে পার্শ্ববর্তী কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের কোন দেশ। আমাদের পক্ষে তার পরিচয় বের করা দুঃসাধ্য।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সর্বত্র তাদের বিচরণ।
উদ্দেশ্য একটি। অ্যাডভেঞ্চারের প্রলোভন দেখিয়ে উগ্রবাদ/ সন্ত্রাসবাদ প্রচার করা। আত্মঘাতী জঙ্গী কার্যক্রমে প্ররোচিত করা।
আর এই ফাঁদে পা ফেলছে আমাদের কিশোর এবং যুব সমাজ। জেনে অথবা না বুঝে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণ করে আমরা এমন কিছু ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হই।
এরই ধারাবাহিকতায়, গত ২৯ জুলাই ২০২১ তারিখ দিবাগত রাতে, র্যাব-১৩ এর একটি চৌকষ আভিযানিক দল সুনির্দিষ্ট তথ্যের উপর ভিত্তি করে কুড়িগ্রামের সদর এবং উলিপুর থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে দুইজন ব্যক্তি কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
“মিনহাজুল ইসলাম@ মোল্লা মিনহাজ” দেশের বিভিন্ন জেলার মাদ্রাসায় পাঠরত অবস্থায় অনলাইনে এবং অফলাইনে জঙ্গী সংগঠনের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে। বর্তমানে মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় সে তার নিজ জেলার উলিপুরে গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছিল।
“আব্দুল কাদের@ সালমান আহমেদ” পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে পরবর্তীতে বরিশালের একটি মাদ্রাসায় শিক্ষা গ্রহণ করে। বর্তমানে সে একটি কাপড়ের দোকানে সেলস ম্যানের চাকরি করলেও কুড়িগ্রাম জেলায় জঙ্গী সংগঠনের প্রচার এবং সদস্য সংগ্রহের কাজটি দেখভাল করত। এছাড়াও সে অনলাইনে নিজেকে জঙ্গী সংগঠনের জেলা আমীর বলে দাবি করত।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে জঙ্গী সংগঠনের বিভিন্ন আলামত আভিযানিক দল কর্তৃক জব্দ করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত দুই জন, সংগঠন “আনসার-আল-ইসলাম” এর সাথে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্বীকার করেছে।
তাদের অন্যান্য সহযোগীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।