বেনাপোলে রাজস্ব আয় রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি

অর্থনীতি

মো. সুমন হোসেন, যশোর : স্থলপথে দেশের সবচেয়ে বড় স্থল বন্দর ও কাস্টম হাউস বেনাপোল। করোনাকালীন ২০২০-২১ অর্থবছরে ছাড়িয়ে গেছে অতীতের সকল রাজস্ব আদায়ের রেকর্ড । বিগত সময়ের তুলনায় বেনাপোল কাস্টমস হাউসে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি ৫৭.৫০ শতাংশ অর্জিত হয়েছে, এ খবর বেনাপোল কাস্টম হাউস এর একটি সুত্রের।


বিজ্ঞাপন

২০২০-২১ অর্থবছরে ছয় হাজার ১০০ কোটি টাকা সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও বেনাপোল কাস্টম হাউস বছর শেষে আয় করেছে চার হাজার ১৪৮.২৭ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক হাজার ৯৫১.৭৩ কোটি টাকা কম।


বিজ্ঞাপন

তবে গত অর্থবছরের চেয়ে এ বছর সর্বোচ্চ রাজস্ব আয় করেছে বেনাপোল কাস্টম হাউস।

বেনাপোল কাস্টম হাউস সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে স্থলপথে দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল কাস্টম হাউসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় হাজার ৫০০ কোটি টাকা, যা ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ৫০০ কোটি টাকা বেশি।

তবে অন্য অর্থবছরের মতো রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রায় পিছিয়ে থাকলেও বিগত বছরগুলোর তুলনায় প্রবৃদ্ধিতে সাফল্য লাভ করেছে বেনাপোল কাস্টম হাউস।

বিগত কয়েক বছরের তুলনায় ২০২০-২১ অর্থবছরে এটিই সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের বছর।

তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন বেনাপোল বন্দরে সক্ষমতা বাড়লে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করা কোনো বিষয় না।

গত ২০১৯-২০২১ বছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল পাঁচ হাজার ৫৬৩.৫৯ কোটি টাকা। তার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছিল দুই হাজার ৬৩৫.৭৭ কোটি টাকা।

সে বছর দুই হাজার ৯২৭.৮২ কোটি টাকা রাজস্ব আয় কম হয়েছে। তবে গত বছার তুলনায় এ ছর এক হাজার ৫১২.৫০ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে।

ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডাইরেক্টর মতিয়ার রহমান আজকের দেশ কে জানান, বেনাপোলের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের কালীতলা পার্কিংয়ে পণ্যবোঝাই ট্রাক দিনের পর দিন আটকে রেখে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় করা হতো।

ফলে একটি ট্রাক বাংলাদেশে আসতে ২০-২৫ দিন করে সময় লাগত। মোটা অঙ্কের রোকসান গুনতে হতো আমদানিকারকদের।

বর্তমানে বেনাপোল বন্দর দিয়ে রেলপথে ব্যাপক হারে আমদানি বেড়েছে। ইতোমধ্যে রেলপথের অবকাঠামো উন্নয়ন শুরু করা হয়েছে। রেলের উন্নয়নকাজ শেষে হলে রেলপথে বাড়বে আমদানি।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন আজকের দেশ কে জানান, স্থলপথে শিল্পকারখানা ও গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজের কাঁচামালের ৮০ শতাংশ পণ্য আমদানি হয় বেনাপোল বন্দর দিয়ে। বেনাপোল বন্দরের সক্ষমতা নেই। নানা অব্যবস্থাপনায় চলছে বন্দরের কার্যক্রম।

করোনার কারণে দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল আমদানি-রপ্তানি। বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন হলে দ্বিগুণ পরিমাণ রাজস্ব আদায় করা সম্ভব।

বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো. আজিজুর রহমান আজকের দেশ কে জানান, করোনা মহামারির কঠিন সময়ে যখন সব কিছু স্থবির ছিল— সেই চ্যালেঞ্জের মধ্যে গত বছরের তুলনায় বাড়তি রাজস্ব আয় হয়েছে। ৫৭.৫০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। টি ওয়ার্ক করে সুশাসন নিশ্চিত করা হয়েছে। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আমরা সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি আরও জানান, করোনার মধ্যে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি বাড়লেও উচ্চ শুল্কহারের পণ্য কম এসেছে। তবে তারা ব্যবসায়ীদের বৈধ সুবিধা বাড়ানোর কাজ করছে।