মধ্যরাতে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে গ্রামের পথে ছুটে চলা

জীবন-যাপন

নিজস্ব প্রতিনিধি : কখনো কোডিভ রোগীদের বাড়িতে আবার কখনো হাসপাতালের বারান্দায় ব্যস্ততায় ছুটাছুটি একদল যুবকের। আবার কখনো রাতের নীরবতা ভেঙে মরদেহ দাফন-কাফনে ব্যস্ত ওরা।


বিজ্ঞাপন

করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসাসেবা ও করোনায় আক্রান্তদের মরদেহ দাফনে যারা ব্যয় করছেন চব্বিশ ঘণ্টা সময়।

বুধবার ঈদের (২১ জুলাই) দিন ভোরে দুই জনের দাফন-কাফন করতে গিয়ে কখন ঈদের জামাত আর কখন কোরবানি তা ভুলেই গিয়েছিলেন যুবকরা।

রোগীর সেবা আর মরদেহ দাফনে করোনা আক্রান্ত রোগীর পরিবারের পাশে দাঁড়ানো ঈদ-কোরবানি উপভোগের চেয়েও বড় মানবিক দায়িত্ব বলে মনে করছেন এসব যুবকরা।

ছাত্রলীগের মেহেরপুর জেলা কোভিড-১৯ স্বেচ্ছাসেবক ইউনিটের এক-ঝাঁক তরুণ-যুবক দিন রাত নিয়োজিত রয়েছেন এ কাজে।

ঈদের আগের মধ্যরাতে গাংনী উপজেলার শানঘাট গ্রামের আব্দুল মালেক (৬৭) ও আজান গ্রামের আনারুল ইসলাম (৪৫) মরদেহ দাফন-কাফন করতে গিয়ে কিছু খেয়ালই ছিল না বলে প্রতিক্রিয়া জানালেন স্বেচ্ছাসেবক ইউনিটের সদস্য সাবেক ছাত্রনেতা জুবায়ের হোসেন উজ্জল।

স্বেচ্ছাসেবক ইউনিটের আহবায়ক জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুনতাছির জামান মৃদুল বলেন, করোনা আক্রান্ত আব্দুল মালেক ও আনারুল ইসলাম বুধবার ভোরের দিকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন।

তাদের মরদেহ ছাত্রলীগের ফ্রি অ্যাম্বুলেন্সে বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়। আশেপাশের লোকজন কেউ দাফন-কাফনে এগিয়ে আসেনি।

গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল জাহান শিশির, গাংনী পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিরুল ইসলাম মোহন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জুবায়ের হোসেন উজ্জল, জেলা মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগের সভাপতি ইউসুফ আলী, ছাত্রলীগ নেতা ফাহিমকে নিয়ে আমরা দাফন-কাফন সম্পন্ন করি। দু’টি মরদেহ দাফন সম্পন্ন করতে গিয়ে কখন যে সময় পার হয়ে গেছে টের পাইনি।

জানা গেছে, কোভিড আক্রান্ত কেউ মারা গেলে ভয়ে আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যরাও এগিয়ে আসেন না।

এমন অমানবিক পরিস্থিতিতে ওই পরিবারের পাশে ছাত্রলীগের মানবিক নেতাকর্মীরা।

ইতোমধ্যে ১৫/১৬টি মরদেহ দাফন ও অর্ধ শতাধিক কোভিড রোগীর বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা দিয়েছেন ছাত্রলীগের স্বেচ্ছাসেবক ইউনিটের সদস্যরা।

স্বেচ্ছাসেবক ইউনিটের সদস্যরা জানান, রাত গভীর হলেই করোনা আক্রান্ত রোগীর পরিবার থেকে ফোন আসে। কারও অক্সিজেন সংকট আবার কারও জরুরি ওষুধ।

উপজেলা ও জেলা পর্যায় থেকে তা সংগ্রহ করে দূরের গ্রামেও তা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।

ছাত্রলীগের এ কর্মকাণ্ড অত্যন্ত মানবিক দায়িত্ব উল্লেখ করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের প্রশংসা করছেন।