দেশে রাজনৈতিক হিংস্রতা দেখিয়েছে বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী

জাতীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : অতীতে বাংলাদেশে বিএনপি অনেক হিংস্রতা দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বিশেষ করে ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে মানুষকে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে হত্যা করা হয়েছে। বহু মানুষকে ঝলসে দেওয়া হয়েছে, অনেকেই পঙ্গু হয়ে গেছেন। এই হিংস্রতার রাজনীতি বাংলাদেশ এর আগে কখনও দেখেনি। পৃথিবীতে সমসাময়িককালে রাজনীতির কারণে মানুষকে এভাবে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়, এটি কেউ দেখেনি।


বিজ্ঞাপন

‘জনমত উপেক্ষা করে একটা একগুঁয়েমি সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার দিন দিন হিংস্র হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে জনগণের ভোগান্তি বেড়েছে’—বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে সোমবার (২৬ জুলাই) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

‘সরকার একদলীয় শাসন কায়েমের অভিপ্রায় নিয়ে দেশ শাসন করছে। এজন্য বিএনপি ও অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে’—বিএনপির এমন মন্তব্যের বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, এখন যদি লকডাউনের মধ্যে কেউ ফৌজদারি অপরাধে গ্রেফতার হয়, তাহলে তিনি যদি কোনও দল করেন এবং তিনি যদি ফৌজদারি মামলার আসামি হন, তাকে কি গ্রেফতার করা যাবে না? আমার প্রশ্ন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা ফৌজদারি আসামির পক্ষ কেন নেন?’

হাছান মাহমুদ বলেন, যেকোনও রাজনীতিবিদ যদি ফৌজদারি মামলার আসামি হন, আইন এবং আদালত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। আইন এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের ফৌজদারি অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুতরাং এখানে রাজনীতির কোনও সংশ্লেষ নেই।

হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে ১৫৮ দিন হরতাল অবরোধ ডেকেছিল তারা। তখন জনগণের অসুবিধা হয়েছিল, সেটা মাথায় ছিল না? ১৫৮ দিন তারা মানুষজনকে ঘরে বন্দি করে রেখেছিল। আজকে তো মানুষের জীবন রক্ষা করার জন্য লকডাউন দিতে হচ্ছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর সব দেশে এ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘লকডাউন দেওয়ার আগে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল দেশে কঠোর লকডাউন দেওয়া দরকার। আবার লকডাউন দেওয়ার পর বলছে, এই লকডাউন অপরিকল্পিত। তাহলে তাদের মতে পরিকল্পিতটা, সেই প্রেসক্রিপশনটা কী? একটু দিক না।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আজ প্রায় দেড় বছর করোনা। এ সময়ে দেশের খেটে খাওয়া একজন মানুষও অনাহারে মৃত্যুবরণ করেনি এবং দেশে কোনও হাহাকার নেই। তবে অনেকের সাময়িক অসুবিধা হয়েছে। সবাই যদি স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে মেনে চলেন, তাহলে লকডাউন প্রলম্বিত করতে হবে না বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী।

 

মানবিক প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা, যাকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ‘মাদার অব হিউমিনিটি’ আখ্যা দিয়েছেন, তিনি ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছেন। অথচ এটার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কোন জোরালো দাবি ছিল না।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট সাংবাদিকদের জন্য ভরসার জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কোনও সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবার ৩ লাখ টাকা পাচ্ছে, কেউ অসুস্থ হলেও টাকা পাচ্ছে।

সাম্প্রতিক সময়ে কল্যাণ ট্রাস্টে সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের পড়ালেখার ক্ষেত্রেও অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে নীতিমালাও চূড়ান্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশেই শুধুমাত্র সাংবাদিকদের করোনাকালীন এককালীন সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

সেটা আশপাশের ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও ভুটানসহ কোনও দেশে করেনি।

প্রধানমন্ত্রী ১০ কোটি টাকা দিয়েছেন করোনাকালীন সহায়তার জন্য। ঈদুল আজহার আগেই সেগুলো বিতরণ শুরু হয়েছে।

আমাদের সম্মিলিত লক্ষ্য হচ্ছে দেশটাকে গড়া, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায় দেশটাকে নিয়ে যাওয়া এবং একটি মানবিক রাষ্ট্রে রূপান্তর করা।

বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে করোনাকালীন (দ্বিতীয় পর্যায়) ক্ষতিগ্রস্ত নড়াইল জেলার সাংবাদিকদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আর্থিক সহায়তার চেক প্রদান অনুষ্ঠানে অনলাইনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাজা মিয়া, সচিব, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, জেলা প্রশাসক, নড়াইল। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জাফর ওয়াজেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাংলাদেশ সাংবাদিকল্যাণ ট্রাস্ট।

জেলার তিন উপজেলার ৬৯ জন সাংবাদিকের প্রত্যেকের হাতে ১০ হাজার টাকা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেয়া হয়।