করোনাকালে সাংবাদিকতা

জাতীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২০ সালের মার্চ মাসে করোনা সংক্রমণের কবলে পড়ে বাংলাদেশ। লকডাউন ও কঠোর বিধিনিষেধে নানা পেশার মানুষকে ঘরে থাকার কথা বলা হলেও অতি জরুরি কয়েকটি পেশার মানুষকে ঘোষণা করা হয় ‘ফ্রন্টলাইনার।


বিজ্ঞাপন

চিকিৎসক ও সাংবাদিক এর মধ্যে অন্যতম। হোম অফিসের যুগে গত এক বছর চার মাস কীভাবে টিকে আছে সাংবাদিকতা?

দেশের শীর্ষ সাংবাদিকরা বলছেন, সাংবাদিকরা ঠিক পথেই আছেন। তবে সাংবাদিকতার ধরণে পরিবর্তন এসেছে।

আর সাংবাদিক নেতারা বলছেন, মহামারিকালে যতটা প্রশিক্ষণ দরকার তার ব্যবস্থা করা হয়নি।

এটিএন নিউজের বার্তা প্রধান মুন্নী সাহা বলেন, করোনাকালের সাংবাদিকতার কথা বলি বা অন্য যেকোনও সময়ের সাংবাদিকতাই বলি; যেটা আমরা শিখেছি তা হলো, প্রিন্ট বা ইলেকট্রনিক যে মাধ্যমই হোক সাংবাদিককে স্পটে যেতে হবে।

সেটা না গেলে গুজব ছড়ানো সহজ হয়। করোনাকালের শুরু থেকেই ভয়ের কারণে স্পটে যাবে কি যাবে না, প্রটেকশন নিয়ে যাবে কিনা, সেসব ভাবতে গিয়ে গুজব বেড়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে যার যেটা বলার বলে যায়, কিন্তু গণমাধ্যমের সাইড থেকে কোনও পাল্টা প্রশ্ন করার সুযোগ নেই। ফলে সেটি প্রেসরিলিজ হয়ে দাঁড়ায়।

পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সেটাও মেনে নিয়েছে দর্শক। হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে কি নেই সেটি সরেজমিনে গিয়ে প্রতিবেদক দেখবেন এটি দর্শক আশাও করে না।

না গিয়েই যে যা বললো সেটা জানানো সাংবাদিকতার মধ্যে পড়ে না। এমনটি হলে সাংবাদিকতাকে নতুন করে সংজ্ঞায়ন করতে হবে।

এই প্রথম এ রকম বড় ইভেন্টে এখন পর্যন্ত বড়ধরনের প্রশ্ন ছাড়া সাংবাদিকরা তাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে বলে মনে করেন একাত্তর টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ফারজানা রুপা।

তিনি বলেন, এ সময়ে সাংবাদিকতা বা সাংবাদিকদের কর্মকাণ্ড নিয়ে তেমন কোনও প্রশ্ন ওঠেনি।

আমার মনে হয় সাংবাদিকরা বাস্তবতা বুঝতে পেরেছে এবং মেনে নিয়ে কাজ করছে। যে তথ্য সাধারণ মানুষের দরকার সাংবাদিক সেটা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

যার কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই, যার পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই কিংবা স্বাস্থ্যকর্মীরা যে অমানসিক চাপের মধ্যে মহামারিতে কাজ করছে—পুরোটা সাংবাদিকরা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে তুলে ধরতে পারছে।

তিনি বলেন, হয়তো অবাধ তথ্য পথ খোলা থাকলে ভালো হতো। কিন্তু এটাও বিবেচনায় নেওয়া দরকার যে, মহামারির বাস্তবতায় স্পর্শকাতর তথ্যপ্রকাশের ক্ষেত্রে সংযম দরকার হতে পারে।

মানুষ এ সময় বিক্ষিপ্ত থাকে, সব তথ্য নেওয়ার মতো বাস্তবতা তার থাকে না। সব মিলিয়ে আমরা ঠিক পথে আছি বলেই মনে হয়।

এখনতো মহামারি, আমি পরিস্থিতিকে ধীরস্থিরভাবে দেখছি। এখন হাতে হাত ধরার সময়।

পেশাদার সাংবাদিকদের মহামারিকালে সাংবাদিকতার প্রস্তুতিতে সহযোগিতার ঘাটতি ছিল উল্লেখ করে সাংবাদিক নেতা ও প্রশিক্ষক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, করোনাকাল শুরু হওয়ার পরে চিকিৎসকরা ফ্রন্টলাইনার হিসেবে প্রটেকশন পেলেন, কিন্তু সাংবাদিকরা কোনও প্রটেকশন, প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে নেমে গেলেন??