হেলেনার জয়যাত্রায় ‘জিনের বাদশা’র প্রচার ও প্রসার

অপরাধ

আজকের দেশ রিপোর্ট : হেলেনার জয়যাত্রায় ‘জিনের বাদশা’র প্রচার ও প্রসার ঘটে, প্রতারক চক্রটি চট্রগ্রামের এক নারীর কাছ থেকে কয়েক ধাপে ২২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। জয়যাত্রা আইপি টিভিসহ বিভিন্ন অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে আসছিল চক্রটি।


বিজ্ঞাপন

প্রতারণার দায়ে সিআইডি গ্রেপ্তার করেছে ‘জিনের বাদশা’ পরিচয় দেয়া আল আমিন ও তার দুই সহযোগীকে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা দাবি করেছে, হেলেনা জাহাঙ্গীরের আইপি টিভি জয়যাত্রায় প্রতারণায় সহায়ক বিজ্ঞাপন দিতেন।

রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদরদপ্তরে বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয় কথিত জিনের বাদশার প্রতারণার কৌশলসহ নানা তথ্য। প্রতারক চক্রটি চট্রগ্রামের এক নারীর কাছ থেকে কয়েক ধাপে ২২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, ‘জয়যাত্রা আইপি টিভিসহ বিভিন্ন অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে আসছিল প্রতারক চক্রটি। তাদের বিজ্ঞাপনে মোবাইল নম্বর দেয়া হয়। তার মাধ্যমেই যোগাযোগ ও প্রতারণা।’

সিআইডি জানায়, মঙ্গলবার ভোলায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় প্রতারক চক্রের হোতা আল আমিনকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী বুধবার ভোররাতে অভিযান চলে রাজধানীর ডেমরা এলাকায়। সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তার দুই সহযোগী রাসেল ও সোহাগকে।

গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে মোবাইল ফোনসেট, তিনটি সিমকার্ড, পাসপোর্ট, চেক বইসহ নানা উপকরণ জব্দ করা হয়েছে।

প্রতারণার অভিযোগে সিআইডি গ্রেপ্তার করেছে তিনজনকে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রতারক চক্রটির বিরুদ্ধে ছয় মাসে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ৬০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতারকদের জব্দ করা ব্যাংক হিসাবে ১২ লাখ টাকা পাওয়া গেছে।

সিআইডি জানায়, চট্টগ্রামের এক নারীর স্বামী থাকেন বিদেশে। তিনি জটিল রোগ থেকে মুক্তির আশায় টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন দেখে ফোন নম্বর সংগ্রহ করেন। যোগাযোগ করলে জিনের বাদশার মাধ্যমে তার রোগ সারানোর কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেয়া শুরু হয়।

বিশ্বাস তৈরির জন্য প্রতারকরা প্রথমে ৯৯৯ টাকা নেয় গরিব মানুষদের খাওয়ানো হবে জানিয়ে। এরপর ধাপে ধাপে প্রায় ২২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে প্রিয়জনের ক্ষতি করা ভয় দেখাত কথিত জিনের বাদশা।

প্রতারণার শিকার নারী চট্টগ্রামের খুলশি থানায় মামলা করলে সিঅআইডি তদন্তে নামে। এক পর্যায়ে গ্রেপ্তার করা হয় প্রতারক চক্রের হোতা আল আমিনসহ তিনজনকে।

প্রায় অভিন্ন কৌশলে চক্রটি গত ছয় মাসে বিভিন্নজনের কাছ থেকে ৬০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে সিআইডি জানতে পেরেছে।

সিআইডি কর্মকর্তারা জানান, প্রতারকরা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে নানা রকম সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিত।

এর মধ্যে রয়েছে জটিল রোগে আক্রান্ত মানুষকে সুস্থ করা, বিদেশে যাওয়ার সুব্যবস্থা করা, মামলা-মোকাদ্দমা থেকে মুক্তি, দাম্পত্যকলহ দূর করা, বিয়ের বাধা দূর করা, অবাধ্যকে বাধ্য করা ও চাকরিতে পদোন্নতি। সাধারণ মানুষ একবার তাদের ফাঁদে পা দিলে আর বের হতে পারতেন না।