সরকারের টিকাদান কর্মসুচীতে তৃতীয় লিঙ্গের সম্প্রদায় উপেক্ষিত

জাতীয় স্বাস্থ্য

আমিনুর রহমান বাদশা : দেশব্যাপী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসুচীর আওতায় পিছিয়ে পড়া ও সমাজের অবহেলিত তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যের বেলায় কি হবে? ওরা কি টিকা পাবে না? ওরা কি করোনা সংক্রামনের আওতামুক্ত? হিজড়াদের নাগরিকত্বের আওতায় আনা হয়েছে। তারা ভোটাধিকারও লাভ করেছে। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত করোনা টিকার আওতায় আসতে পারেনি যা তাদের প্রতি উপেক্ষার শামিল। তাদের প্রতি অবহেলা মানে মানবতার প্রতি উদাসীনতার স্বাক্ষর। তারাও মানুষ। সমাজের আর দশজন মানুষের মতো হিজড়ারাও সকল সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকারী। গত জানুয়ারি থেকে দেশে টিকা নিবন্ধনের কাজ শুরু হয়েছে। আর ফেব্রুয়ারি থেকে দেশব্যাপী চলছে টিকা কার্যক্রম। এরই মধ্যে কয়েক ধাপ পেরিয়ে ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত সকল নাগরিকের টিকার আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। কিন্তু বিভিন্ন সমস্যার কারণে হিজড়াদের টিকাদানের আওতায় আনা যায়নি। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, হিজড়াদের টিকা দেয়ার বিষয়ে অধিদফতরের এখনই কোনো পরিকল্পনা নেই। কিন্তু কেন? তাদের জন্মই কি আজন্মের পাপ? তাদের টিকার অন্তর্ভুক্ত করতে বিলম্ব কেন? তারাও মানুষ। তাদের জীবনের মূল্যকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। টিকা কর্মসূচির আওতায় অনলাইনে সুরক্ষা অ্যাপে হিজড়া অপশন না থাকা খুবই দুঃখজনক। টিকা নিবন্ধনের অ্যাপে পুরুষ ও নারীর ঘর আছে। কিন্তু হিজড়াদের কোনো ঘর নেই। মানব সমাজে নারী-পুরুষের পাশাপাশিই তাদেরও জন্ম। তারা অন্য গ্রহ বা ভিন্ন প্রজাতির নয়। রাষ্ট্রের হর্তাকর্তা, সমাজের নামি-দামি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই তারা পিছিয়ে পড়া এক জনগোষ্ঠী। মানবতার কাতারে, ধনী-গরিব, নারী-পুরুষ, হিজড়া সবার প্রাণের সমান মূল্য। প্রভাব-প্রতিপত্তি, ধন-সম্পদে কেউ পিছিয়ে থাকতে পারে। কিন্তু জীবনের মূল্যে কেউ কারো পেছনে নয়। করোনা মহামারীর টিকা প্রাপ্তিতে ধনী-গরিব, হিজড়া সবার সমান অধিকার।রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দেশের হিজড়া জনগোষ্ঠীকে দ্রুতই টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনা উচিত। কারণ তারাও মানবসমাজেরই অংশ। তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য তথা হিজড়া সম্প্রদায় কে ও টিকাদান কর্মসুচীর আওতায় আনা হোক।


বিজ্ঞাপন