নিজাম উদ্দিন : মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার বেড়ীবাঁধ থেকে বুড়িগঙ্গা নদী পর্যন্ত খালের পুরো অংশ ভাগই ময়লা-আবর্জনায় ভরা। খালপাড়ে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ঘরবাড়ি, দোকানপাট, গরুর খামার। বর্জ্যে পানির প্রবাহ বন্ধ হওয়ায় খালটি জলাবদ্ধতার কারণ হয়ে উঠেছে এবং মশার প্রজননক্ষেত্রও এখন এ খাল।
রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধসংলগ্ন হাইক্কার খালের অবস্থান বেড়িবাঁধের প্রায় আধা কিলোমিটার পশ্চিমে। শহীদ স্মৃতি সেতুর কাছে বুড়িগঙ্গা নদীর মূলধারা থেকে রায়েরবাজার বধ্যভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত এই খালটি। এবং এই খালের পাশে রয়েছে বসিলা র্যাব-২ এর অফিস। দখল-দূষণের কারণে মরতে বসেছে এই হাইক্কার খাল টি।
অন্য এক সূত্রে জানা যায় বিআইডব্লিউটিএ, এ খালটি বুঝে নেওয়ার কিছুদিনের মধ্যে ২০১১ সালে জেলা প্রশাসনের এক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ‘রায়েরবাজার-সংলগ্ন হাইক্কার খালে সঞ্চিত বর্জ্য অপসারণ’ শীর্ষক প্রকল্পের কাজ শুরু করে বিআইডব্লিউটিএ, তিন বছর কার্যক্রম চলে।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা যায়, এই খালটি ১৩ ফুট পর্যন্ত গভীর, ২০০ ফুট চওড়া এবং এক পাড়ে ১০ ফুট চওড়া হাঁটার পথ তৈরি করা হয়। এ ছাড়া রায়েরবাজার থেকে বছিলা অংশে সহজে যাতায়াতের জন্য খালের দুই পাড়ে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হয় দুটি ঘাট।
বুড়িগঙ্গা এবং এর সঙ্গে সংযুক্ত খাল দখলমুক্ত করতে প্রায়ই উচ্ছেদ অভিযানে চালায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। কিছুদিন পর নদী ও খাল আবার দখল হতে শুরু করে, দখল ও দূষণের কারণে মরতে বসেছে খালটি। খালের অনেক অংশ ভরাট করে ফেলা হয়েছে। বিভিন্ন অংশ শুকিয়ে গেছে। কিছু অংশে আছে কুচকুচে কালো পানি।
প্রবাহমান শতাধিক খালের মধ্য থেকে এখন এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬টিতে। দখলদারদের কবল থেকে রাজধানীর খালগুলো রক্ষা করতে একাধিক উদ্যোগ নেয়া হলেও সুফল আসেনি। ভূমিদস্যুদের বলয়গ্রাসে বিলীন হতে চলেছে নগরীর পানি নিষ্কাশনের এ মাধ্যমগুলো। ফলে বাড়ছে জলাবদ্ধতা। কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর দখলদারদের দৌরাত্ম্যে অস্তিত্ব বিলীনের পথে ঐতিহ্যবাহী এ হাইক্কার খালটি। খালটি রায়ের বাজার, বছিলা, ঝাউচর, মোহাম্মদপুর, ত্রিমুহনী হয়ে গুদারাঘাটে মিলিত হয়েছে। ফলে ঢাকা শহরের বড় খালগুলোর অন্যতম এ খালটি এখন আর দৃশ্যমান নেই।
অথচ এ খালটি ছিল ঢাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য অন্যতম অবলম্বন। দীর্ঘদিন ধরে খালটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করায় খালের পুরো অংশে কচুরিপানা, শ্যাওলাসহ ময়লা-অবর্জনা জমে উর্বর হয়ে পরেছে।
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এম সাইদুর রহমান, আজকের দেশ নিউজ কে বলেন, বিষয়টি আমি জানতাম না অতি শিগ্রহী পর্যপেক্ষণ করে ব্যবস্তা নেয়া হবে।
৩৪ নং ওয়াড’ কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন বলেন, গত ২ তারিখে সরজমিনে মেয়র মহাদয় খালটি পরিদর্শন করেছে, আশাকরি খুব শীগ্রিই বর্জ্য অপসরণ করা হবে, এবং যথাযত ব্যবস্তা গ্রহণ করা হবে।
এলাকাবাসীর দাবি খুব শীগ্রিই এই খালটি পরিস্কার না করলে তৈরি হবে জন দুর্ভোগ। স্থানীয় জনগণ মনে করেন এই খালটি কর্তৃপক্ষের এখুনি বর্জ্য অপসরণ করা দরকার,কারণ বিকাল ও সন্ধ্যা হতে না হতেই মশার অত্যচারে অতিষ্ট খালের দুই ধারের বাসিন্দাদের।