করোনা প্রণোদনার ৬ কোটি টাকা লুট

অপরাধ

নিজস্ব প্রতিনিধি : বগুড়ার কাহালু উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোশাররফ হোসেন ও ইউনিয়ন মাঠ কর্মী জাহাঙ্গীর আলম এর বিরুদ্ধে করোনা কালে সরকার প্রদত্ত প্রনদোনার ৬ কোটি টাকা প্রকৃত খামারিদের প্রণোদনা সহায়তা না দিয়ে দুর্নীতি আর স্বজন প্রিতির মাধ্যমে প্রনদোনার টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ২২ আগস্ট রবিবার ইনডিপেনডেন টেলিভিশনে সরেজমিন তদন্ত রিপোর্ট ও হয়েছে। উক্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় দুর্নীতি আর স্বজন প্রিতির মাধ্যমে বিজিবিতে চাকুরী করে এমন লোক কে প্রনোদনার টাকা দিয়েছে। অথচ বিজিবি সদস্যের পরিবার পরিজন সরেজমিনে কোন প্রকার খামার দেখাতে পারেন নি।


বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে প্রকৃত খামারিদের করোনাকালীন আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে দিয়ে হাঁস-মুরগি ও গবাদিপশুর খামার সচল রাখতে সরকার প্রণোদনা ঘোষণা করে।

তারই অংশ হিসেবে কাহালু উপজেলার ৯ ইউনিয়ন, একটি পৌরসভায় এলএসপি (এলডিডিপি) প্রকল্পের অধীনে খামারিদের জন্য ছয় কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। যার অধিকাংশ লুট হয়েছে বলে জানা যায়।

এতে বঞ্চিত হয়েছে প্রকৃত খামারিরা। এ নিয়ে কাহালু প্রাণিসম্পদ অফিসে বিক্ষোভ করেন খামারিরা। এলএসপি (এলডিডিপি) প্রকল্পের নিয়োগপ্রাপ্ত ইউনিয়ন ও পৌরসভা মাঠকর্মীরা মহল্লায় মহল্লায় গিয়ে প্রকৃত খামারিদের তালিকা করার বিধান থাকলেও মাঠকর্মীরা তা না করে গোপনে উৎকোচের বিনিময়ে তালিকা তৈরি করা হয়। এতে অ-খামারিদের খামারি বানিয়ে প্রায় চার হাজার ৩০০ জনের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়। যার অধিকাংশ গবাদিপশু বা হাঁস-মুরগির খামারের সাথে জড়িত নয়।

এ দিকে এসব খামারি তালিকা সঠিক কি না তা দেখভালের দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসারসহ কর্মকর্তারা তা যাচাই-বাছাই না করেই তালিকা কেন্দ্রে প্রেরণ করেন।

ফলে কাহালু উপজেলার সাড়ে তিন হাজার প্রকৃত খামারি হয়েছেন সরকার ঘোষিত প্রণোদনাবঞ্চিত।
এ নিয়ে কাহালু উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে বীরকেদার, নারহট্ট ইউনিয়নসহ উপজেলার প্রায় শতাধিক প্রণোদনাবঞ্চিত প্রকৃত খামারি বিক্ষোভ করেন।

এ সময় দুর্গাপুর ইউনিয়নের চাকদহ গ্রামের আলাউদ্দিন জানান, ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত মাঠকর্মী জাহাঙ্গীর আলম আমার স্ত্রীর নাম তালিকা করে তার আইডিসহ ফিংগার প্রিন্ট নেয়। এর পর আমার কাছ থেকে কিছু টাকা দাবি করেন। আমি টাকা না দেয়ায় আমার স্ত্রীর নামে কোনো টাকাই আসেনি।

অথচ যারা কোনো দিন গবাদিপশু বা হাঁস-মুরগির খামার করেনি তাদের নামেও টাকা এসেছে। নারহট্ট ইউনিয়নের একাধিক খামারি জানান, এলাকার প্রকৃত খামারি নুরুল ইসলাম, বিথী, শাহিনুর রহমান, শহীদুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম আক্কাস আলী, আলহাজ আব্দুর রহিম আব্দুল খালেকসহ ইউনিয়নের ছোট-বড় প্রায় শতাধিক প্রকৃত খামারিকে প্রণোদনা না দিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত মাঠকর্মী ছাইফুল ইসলাম তার আপনজনসহ ফরিদ উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, সানোয়ার হোসেন, শিলা, নয়ন, তুহিন, বাবলু, শিপ্লুসহ অনেকে প্রণোদনা পেয়েছেন।

কাহালু পৌর এলাকার মাঠকর্মী জার্জিস হোসেন ওরফে আলম নিজে ও তার স্ত্রীর নাম তালিকা দিয়ে প্রণোদনার টাকা উত্তোলন করলেও বঞ্চিত হয়েছেন প্রকৃত খামারি।

প্রকৃতপক্ষে সরকারের করোনা প্রণোদনার ছয় কোটি টাকার অধিকাংশই লুট হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে এলাকাবাসী সরকারের প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা: মোশাররফ হোসেন এর বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি জানান, তালিকা বিষয়ে আমার কোনো দায়িত্ব নেই, এটা মাঠকর্মীরা করেছেন যা আমিসহ প্রকল্পের আরো কর্মকর্তা অনুমোদন করে কেন্দ্রে পাঠিয়েছি ।