পদ্মায় বিকল পিকনিকের নৌযান, ৯৯৯ এ ফোন কলে উদ্ধার শিশুসহ ৪৫ যাত্রী

অপরাধ

নিজস্ব প্রতিনিধি : জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে পদ্মা নদীতে বিকল নৌযানের এক যাত্রীর ফোন কলে শিশু সহ পঁয়তাল্লিশ জন যাত্রীকে উদ্ধার করেছে পাবনা ঈশ্বরদীর লক্ষীকুণ্ডা ফাঁড়ির নৌ পুলিশ।


বিজ্ঞাপন

২১ আগষ্ট, শনিবার রাত সাড়ে দশটায় ৯৯৯ কলটেকার কনষ্টেবল লোকমান হাকিম একটি কল রিসিভ করেন।

আলিমুজ্জামান নামে একজন কলটি করেছিলেন, কলার জানান তারা পনের জন শিশু সহ পঁয়তাল্লিশ জন একটি নৌযান যোগে (বাল্কহেড) পাবনার ঈশ্বরদীর গড়গড়িয়া শাহপুর থেকে দুপুর বারোটায় রাজশাহীর বাঘা মসজিদ পরিদর্শন ও পিকনিকের জন্য রওনা দিয়েছিলেন।

পথিমধ্যে দুপুর দুইটায় পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রীজের কাছে তারা যাত্রা বিরতি ও পিকনিক করেন। সেখানে সারাদিন অবস্থানের পর রাত সাড়ে নয়টায় তারা বাঘার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন।

কিন্তু কিছুদূর চলার পর তাদের নৌযানের প্রপেলারে মাছ ধরার জাল পেঁচিয়ে প্রপেলার ভেঙ্গে যায়। কলার জানান নদীতে তখন তীব্র স্রোত, তারা তাদের নৌযান তীরে ভেড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু পারেননি, আশে পাশে আর কোন নৌযানও তাদের চোখে পড়েনি।

বিকল নৌযান নিয়ে প্রায় ঘন্টাখানেক নদীতে ভাসার পর কলার উদ্ধার সহায়তা চেয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন।

৯৯৯ তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি পাবনা জেলা পুলিশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ এবং রাজশাহী নৌ পুলিশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে জানিয় দ্রুত উদ্ধারের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ জানায়।

৯৯৯ ডিসপাচার এএসআই (সহকারী সাব ইন্সপেক্টর) মুজাহিদ এবং ৯৯৯ ডিউটি টীম সুপারভাইজার ইন্সপেক্টর জনাব আব্দুল মজিদ বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট নৌ পুলিশ এবং কলারের সাথে যোগাযোগ করে উদ্ধার তৎপরতার আপডেট নিতে শুরু করেন।

৯৯৯ থেকে সংবাদ পেয়ে লক্ষীকুণ্ডা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির একটি উদ্ধারকারী পুলিশ দল রওনা দেয়ার প্রস্তুতি নেয়।

কিন্তু এত লোককে উদ্ধারের জন্য একটি বড় নৌযানের ব্যবস্থা করা নৌ পুলিশের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।

নৌ পুলিশের ছোট টহল নৌযানে করে এত লোক উদ্ধার করা বা বিকল নৌযানটিকে টেনে নিয়ে আসা সম্ভব নয়।

পরে লক্ষীকুণ্ডা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই (সাব ইন্সপেক্টর) রিয়াদ হাসান ৯৯৯ কে ফোনে জানান অবশেষে তারা একটি বড় নৌযানের ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছেন এবং বিকল নৌযান সহ যাত্রীদের নিরাপদে উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে এসেছেন।

ততক্ষনে মধ্যরাত পার হয়ে রাত দেড়টা বেজে গেছে এবং ক্যালেন্ডারের তারিখ পরিবর্তিত হয়ে গেছে ২২ আগষ্ট, রবিবার।

উদ্ধারকৃত যাত্রীদের ফাঁড়িতে রাত্রি যাপনের ব্যবস্থা করা হয় এবং খাবার ও পানীয় পরিবেশন করা হয়।

পরে ২২ আগষ্ট সকালে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মান্যগণ্য ব্যক্তিদের কাছে উদ্ধারকৃতদের হস্তান্তর করা হয়।

৯৯৯ দেশের যে কোন প্রান্তে চব্বিশ ঘন্টা নাগরিকের জরুরী মুহুর্তে ও প্রয়োজনে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও এম্ব্যুল্যান্স সেবা প্রদানে বদ্ধপরিকর।