মাদকের চেয়েও ভয়াবহ ভেজাল ও নকল ওষুধ

অপরাধ এইমাত্র স্বাস্থ্য

নকল ওষুধ তৈরির সরঞ্জামসহ গ্রেফতার সাত

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল ওষুধ এবং ওষুধ তৈরির সরঞ্জামসহ সাত জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। গত বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানীর কাজলা, আরামবাগ ও মিটফোর্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।


বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- তরিকুল ইসলাম, সৈয়দ আল মামুন, সাইদুল ইসলাম, মনোয়ার, আবদুল লতিফ, নাজমুল ঢালী ও সাগর আহমেদ মিলন।

অভিযানে তাদের কাছ থেকে একমি কোম্পানির মোনাস-৭০০ বক্স, স্কয়ার কোম্পানির সেকলো- ৫০ বক্স, জেনিথ কোম্পানির ন্যাপ্রোক্সেন প্লাস-৭৪৮ বক্সসহ অন্যান্য কোম্পানির বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ, ওষুধ তৈরির মেশিন, ডায়াস ও ওষুধের খালি বক্স উদ্ধার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, একটি অসাধু চক্র নকল ওষুধ বানিয়ে তা বাজারজাত করছে। এ চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। গ্রেফতারকৃত তরিকুল ইসলাম ও সৈয়দ আল মামুন কারখানা স্থাপন করে জীবন রক্ষাকারী এসব নকল ওষুধ তৈরি করে। সাইদুল ইসলাম এ নকল ওষুধ তৈরির প্রধান কারিগর, মনোয়ার ‘অ্যালো ফয়েল’ ও আবদুল লতিফ ওষুধের পাতায় ছাপ দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ উপাদানসহ সিলিন্ডার সরবরাহ করতেন।

গ্রেফতারকৃত নাজমুল ঢালী ওষুধের বক্সে ছাপ দেওয়ার পর তৈরিকৃত এ সব নকল ওষুধ গ্রেফতারকৃত সাগর আহমেদ মিলনের নেতৃত্বে মিটফোর্ডের কয়েকটি গ্রুপের মাধ্যমে বাজারজাত করা হতো।

এসব নকল ওষুধ সাধারণ মানুষের জন্য ‘মরণ ফাঁদ’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব ওষুধের ইনগ্রিডিয়েন্টসে (উপকরণ) মূলত প্রয়োজনীয় কোনও সক্রিয় উপাদান থাকে না। এছাড়া মেইন স্টার্চ নিম্ন গ্রেডের ব্যবহৃত হয়। এমনকি স্টেরয়েড ও ডাই ব্যবহৃত হতে পারে। নন ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রেডের এসব কেমিক্যাল সেবনের ফলে মানুষের কিডনি, লিভার এবং হৃদযন্ত্রের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববাজারে ১৪৫টি দেশে বাংলাদেশের ওষুধ রফতানি হচ্ছে। ভেজাল এবং নকল ওষুধ এই সুনাম এবং আস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। মফস্বলের ওষুধ ফার্মেসিগুলোকে টার্গেট করে একটি অসাধু সংঘবদ্ধ চক্র সারাদেশে ভেজাল ও নকল ওষুধ ছড়িয়ে দিচ্ছে। এ ধরনের ওষুধ মাদকের চেয়েও ভয়াবহ।

কেউ নকল ওষুধ কারখানার সন্ধান জানলে তা জানানোর অনুরোধ জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, নকল ওষুধ কারখানা সম্পর্কে অবগত করলে আমরা কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

গ্রেফতারকৃতদেরকে বংশাল থানার মামলায় আদালতে পাঠিয়ে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে।