আবাদ কমায় ব্যাহত হচ্ছে চিনি উৎপাদন

Uncategorized

বিশেষ প্রতিবেদক : কৃষিবিজ্ঞানীদের মতে দুটি কারণে দেশে আখের উৎপাদন কমছে। রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকল ‘মিলজোন’ এলাকায় আখ আবাদ করলে কৃষকদের বাধ্যতামূলক চিনিকলগুলোতে আখ সরবরাহ করতে হয়। না করলে জেল জরিমানার বিধানও আছে। অথচ কৃষকরা মিলে আখ সরবরাহ করার এক বছর পর মূল্য পায়। ফলে টাকা বিনিয়োগের দুই বছর পর তারা তা ফেরত পায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক। আবার আখ আবাদের শুরু থেকে ফসল তুলতে একবছর সময় লেগে যায়। অথচ এই সময়ে কৃষক ডাল, আলু, মসলাসহ একাধিক ফসল আবাদ করতে পারে। আখ দীর্ঘ সময় মাঠে থাকে। এসব কারণে কৃষকরা আখ আবাদে আগ্রহী হচ্ছে না। কৃষকরা বলছেন, আখ চাষ করে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আবার চাহিদা অনুযায়ী আখ না পাওয়ায় বছরের বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকে চিনিকলগুলো। তবে মিলজোন এলাকা বাদে দেশের অন্যান্য এলাকায় আখের আবাদ বাড়ছে। এর কারণ ওসব এলাকায় আবাদ করা হলেও কৃষকরা নিজেদের ইচ্ছেমতো তা বিক্রি করতে পারে। চিবিয়ে খাওয়ার জন্য বাজারে বিক্রিতে আখ চাষ কৃষকের জন্য লাভজনক।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ১০ বছর আগে আখের আবাদ হতো ৩ লাখ ১২ হাজার একর জমিতে। কিন্তু বর্তমানে আবাদ হচ্ছে ২ লাখ ২৩ হাজার একরে। এই সময়ে ১ লাখ একর জমি কমেছে। আর আখ উৎপাদনের চিত্রও একই রকম। ২০০৮-০৯ সালে আখের উৎপাদন ছিল ৫২ লাখ ৩২ হাজার টন। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে উৎপাদন কমে নেমে আসে ৩৬ লাখ ৩৯ হাজার টনে। উৎপাদন কমেছে ১৬ লাখ টন।
সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে সরকার আখের পরিবর্তে সুগারবিট আবাদে নতুন করে গুরুত্ব দিচ্ছে। গবেষণা ইনস্টিটিউট এ পর্যন্ত সুগারবিটের নতুন দুটি জাত উদ্ভাবন করেছে। এ লক্ষ্যে ঠাকুরগাঁও সুগারমিলকে সুগারবিট মিলে পরিবর্তন করার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিভাগ এখনো ওই মিলে সুগারবিট থেকে চিনি উৎপাদন এখনো শুরু করতে পারেনি। এ কারণে কৃষকদের সুগারবিট আবাদের তাগাদা দেয়া হচ্ছে না। তবে আখ আবাদ লাভজনক করতে হলে সাথী ফসল হিসাবে অন্যান্য ফসল আবাদেরও পরামর্শ কৃষিবিজ্ঞানীদের।
এদিকে এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. সমজিৎ কুমার পাল জানান, এখন পর্যন্ত ৪৬টি উচ্চ ফলনশীল আখের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫/১৬টি জাত ভালো ফলন দিচ্ছে। আখের নতুন জাত উদ্ভাবনের লক্ষ্যে আরো গবেষণা চালানো হচ্ছে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *