পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনা
নিজস্ব প্রতিবেদক : কুমিল্লা নগরীর একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় অভিযুক্ত ইকবাল হোসেনকে পরিবারের পক্ষ থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি করা হলেও তা নাকচ করে দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। সংস্থাটি জানিয়েছে, ইকবাল হোসেন একজন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ এবং তিনি সুচতুর।
মঙ্গলবার দ্বিতীয় দফা রিমান্ডের পঞ্চম দিনে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ রেজোয়ান সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন।
খান মুহাম্মদ রেজোয়ান বলেন, ‘ইকবাল মানসিক ভারসাম্যহীন নন। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ ও সুচতুর। কোনো কিছুর প্রতি তার প্রবল বিশ্বাস আছে। ১১ দিনের রিমান্ডে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ, স্বাভাবিক আচরণ করেছেন।’
সিআইডি পুলিশ সুপার বলেন, এ ঘটনায় স্থানীয়, জাতীয় বা আন্তর্জাতিক রাজনীতি সংশ্লিষ্ট কি না সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি একাধিক ব্যক্তির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ সুপার বলেন, ইকবাল হোসেন নানুয়াদিঘির পাড়ে পূজাম-পে কোরআন রাখার আগে পুরো এলাকাটি রেকি করেন। এরপর দারোগাবাড়ি মাজার মসজিদ থেকে কোরআন নিয়ে সেখানে রাখেন। পরে আত্মগোপনের জন্য প্রথমে চট্টগ্রাম পরে কক্সবাজার চলে যান।
গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা নগরীর নানুয়ারদীঘির পাড় পূজাম-পে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এতে কুমিল্লা ছাড়াও চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, নোয়াখালীর চৌমুহনী, রংপুরের পীরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় ২১ অক্টোবর ইকবালকে কক্সবাজার সৈকত থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
একটি সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, নানুয়ার দীঘির পাড়ের অদূরে দারোগাবাড়ি মাজারের মসজিদ থেকেই কোরআন শরিফটি সংগ্রহ করে ম-পে রাখেন ইকবাল। ঘটনার দিন রাতে কয়েক দফায় ইকবাল হোসেন মাজার সংলগ্ন মসজিদে প্রবেশ করেন। রাত ১০টা ৫৮ মিনিটে তিনি মসজিদে যান। পরে বের হয়ে আসেন। এ সময় মসজিদে দুজন মুসল্লি ছিলেন। পরে আবার রাত ২টা ১২ মিনিটে মসজিদের একটি বক্স থেকে কোরআন নামিয়ে ফ্লোরে রেখে বের হয়ে যান। সর্বশেষ রাত ২টা ১৭ মিনিটে আবারও মসজিদে গিয়ে কোরআন হাতে বের হয়ে যান।
ঘটনাস্থলের আশেপাশের অন্তত ১২টি সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে ম-পে কোরআন রাখা যুবক ইকবাল হোসেন বলে নিশ্চিত হলেও এর নেপথ্যে কে বা কারা- সে বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।