জুতার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৫

রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক : নানা অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার মধ্যেই মৃত্যুঝুঁকি নিয়েই বসবাস পুরান ঢাকার মানুষের। একেকটি আগুন ট্র্যাজেডি কেড়ে নেয় মানুষের জানমাল সর্বস্ব। আর বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলেই নড়াচড়া শুরু হয় সংশ্লিষ্টদের।
অব্যবস্থাপনা রুখতে নানা উদ্যোগের কথা বলা হলেও বাস্তবে এসবের কোনো ব্যবস্থা হয় না। ফলে কয়েক বছর পরপর ঘটছে আগুন ট্র্যাজেডির পুনরাবৃত্তি। এ অবস্থায় পুরান ঢাকার বাসিন্দারা বলছেন, আমরা এখন আর আশ্বাসে বিশ্বাস করতে চাই না, উদ্যোগের বাস্তবায়ন দেখতে চাই। নিরাপদে বসবাসের নিশ্চয়তা চাই। প্রতিবার প্রতিশ্রুতি পূরণ না হলেও বারবার ট্র্যাজেডি থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার তা বাস্তবায়নের পথে আশার আলো দেখছেন নগর বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, কয়েক বছর পরপর একেকটি আগুন ট্র্যাজেডি ঘটে। মানুষ পুড়ে অঙ্গার হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় জানমাল। এরপর সব অব্যবস্থাপনা দূর করার আশ্বাস দেয়া হয়, কিন্তু কিছুই বাস্তবায়ন হয় না। ২০১০ সালের ৩ জুন রাসায়নিকের আগুনে ধ্বংস স্তূপে পরিণত হয়েছিল পুরান ঢাকার নিমতলী। সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল চকবাজারের চুড়িহাট্টায়। নিমতলীতে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার থেকে লাগা আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল রাসায়নিকের গুদামে। আগুনের লেলিহান শিখা সেদিন কেড়ে নিয়েছিল ১২৪ প্রাণ। আর ২০ ফেব্রুয়ারি চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানশনে লাগা আগুন কেড়ে নিয়েছে এ পর্যন্ত ৬৯ প্রাণ। আরও অনেকেই রয়েছেন নিখোঁজের তালিকায়। ভুক্তভোগী ও ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বলছেন, এমন বড় দুর্ঘটনার পর সংশ্লিষ্টদের নড়াচড়া শুরু হয়। পরে কোনো কার্যক্রম না থাকায় বারবার ঘটছে এমন দুর্ঘটনা।
আর এবার রাজধানীর সোয়ারীঘাট এলাকায় একটি জুতার কারখানায় অগ্নিকা-ে অন্তত পাঁচজন মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার রাত ১টা ১৫ মিনিটের দিকে এ অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। চকবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবদুল কাইউম বলেন, এ ঘটনায় পাঁচ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আর কেউ হতাহত হয়নি। নিহতদের নাম পরিচয় এখনো যানা যায়নি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার সকাল পৌনে সাতটার দিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ বলেন, সোয়ারীঘাট এলাকার একটি জুতার কারখানায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা কাজ করে রাত ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে এখনো উদ্ধার কাজ চলছে। ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ বলেন, কারখানাটিতে মূলত জুতার সোল তৈরি হতো। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। অগ্নিকাণ্ডে কারখানাটিতে প্রচুর ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়। ধারণা করা হচ্ছে, নিহত পাঁচজন প্রচুর ধোঁয়ার কারণে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। নিহতরা কারখানাটির শ্রমিক ছিলেন বলে এখন পর্যন্ত জানা গেছে।


বিজ্ঞাপন