নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে অর্গানিক পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে দেশব্যাপী উদ্যোক্তা তৈরির তাগিদ দিয়েছে বাংলাদেশ অর্গানিক প্রডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যাসোসিয়েশন (বোপমা)। সেইসঙ্গে উদ্যোক্তা তৈরিতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানায় সংগঠনটি। শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত অর্গানিক পণ্যের চাহিদা সমস্যা ও সম্ভাবনা শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ আহ্বান জানান।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, সুস্থ থাকতে নিরাপদ খাদ্যের বিকল্প নেই। সেই জায়গা থেকে শরীর-স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অর্গানিক পণ্যের বিকল্প নেই। বিশ্বব্যাপী অর্গানিক পণ্যের গুরুত্ব রয়েছে।
বক্তারা বলেন, অর্গানিক পণ্য নিয়ে আমাদের কোনো নীতিমালা নেই। আমরা আশাবাদী, নীতিমালা হবে। আমরা সঠিক মূল্যায়ন পাচ্ছি না। আমরা দেশের সচেতন মানুষের কাছে যখন অর্গানিক পণ্য নিয়ে যাই, তখন তেমন মূল্যায়ন পাই না। কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন দেশ ব্যাপকভাবে অর্গানিক পণ্য আমদানি ও রপ্তানি করছে।
তারা আরও বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতও আন্তর্জাতিক বাজারে অর্গানিক পণ্যের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে কোনো উদ্যোগ নেই। বলা হয়, আমাদের দেশে আবাদযোগ্য জায়গার অভাব। কিন্তু অনেক জায়গা পড়ে আছে, নদীর চর পড়ে আছে, আমরা তো সেটাকে কাজে লাগাতে পারি।
ভোগ্যপণ্যের বাজারে বিষাক্ত ও অস্বাস্থ্যকর পণ্যে ভরে গেছে মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, শস্য উৎপাদনে ব্যবহৃত মাত্রাতিরিক্ত কৃত্রিম সার, ক্ষতিকর কীটনাশন, রাসায়নিক পদার্থের মিশ্রণ খাদ্যশস্যকে বিষাক্ত করে চলেছে। তারসঙ্গে যুক্ত হয়েছে দীর্ঘদিন শস্য সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত কেমিক্যাল বা প্রিজারভেটিভ, ক্ষতিকর রঙ, কৃত্রিমভাবে ফল পাকানোর বিষাক্ত ওষুধ ইত্যাদি। এইসব ক্ষতিকর উপাদান প্রতিনিয়ত খাদ্যের মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে। এগুলো ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, মানসিক অবসাদ, শারীরিক দুর্বলতার মত অসংখ্য জটিল রোগের কারণ হচ্ছে। এমনকি প্রজনন স্বাস্থ্য পড়ছে তীব্র সংকটে। জনসাধারণকে এইসব মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে নিরাপদ রাখতে ভেজালমুক্ত অর্গানিক খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতে হবে।
সেমিনারে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. সোহেলা আক্তার, সার্ক এগ্রিকালচারাল সেন্টারের পরিচালক মো. বখতিয়ার হোসেন, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, সবুজ ছায়া গ্রুপের চেয়ারম্যান বাসেদ সীমন, বোপমার সহসভাপতি মিজানুর রহমান বিজয়, বিএসটিআইয়ের সাবেক ডিজি সাইফুল হাসিব, বারির প্রধান সাইনটিস্ট ড. মো. খোরশেদ আলম, বোপমার নির্বাহী সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান প্রমুখ।