বিজয়ের ৫০ বছর

জাতীয়

আজকের দেশ রিপোর্ট : ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একচেটিয়া বিজয়ের পর থেকেই বাঙালি নিধনের পরিকল্পনা শুরু করে পাকিস্তানিরা। কিন্তু গণমানুষের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তা বুঝতে পারেন। এরপর সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তত করতে থাকেন জনগণকে। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে, ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের মধ্যেই পাকিস্তানি প্রশাসনকে কোণঠাসা করে ফেলে জনতা। সাত কোটি বাঙালিকে সঙ্গে নিয়ে, বাংলার মাটিতে বিকল্প সরকার পরিচালনা করতে শুরু করেন বঙ্গবন্ধু। ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দশ লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশে ঘোষণা করেন স্বাধীনতাযুদ্ধের চূড়ান্ত রণ-পরিকল্পনা। মূলত বর্বর পাকিস্তানি শোষকদের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিরোধের দামামা বেড়ে ওঠে সেদিনই।


বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দেশের প্রতিটি গ্রাম-গঞ্জ-মহল্লার সাধারণ মানুষ পর্যন্ত সংগঠিত হতে থাকেন। উত্তাল মার্চজুড়ে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলেন স্বাধীনতাকামী বাঙালি জাতি। মোক্ষম সময়ে, ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে, বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু। দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে তাড়ানোর আগ পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেন। এরপরই যার যা আছে, তাই নিয়ে- দেশজুড়ে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমে পড়ে আপামর বাঙালি, প৪্রতিটি ঘরকে দুর্গে পরিণত করেন তারা। শুরু হয় মহান স্বাধীনতার জন্য এক মরণপণ যুদ্ধ।

তবে মুক্তিযুদ্ধকে নস্যাৎ করার জন্য, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিক নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানিরা। পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি করে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে তারা। কিন্তু ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে রণাঙ্গণকে মুখরিত করে তোলে বাংলার দামাল সন্তানরা। আকাশে-বাতাসে-নদীতে-অরণ্যে- থ্রি নট থ্রি রাইফেলের ট্রিগারের স্পর্শে- প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে সদা দৃশ্যমান হয়ে ওঠে বঙ্গবন্ধুর মুখাবয়ব ও উদ্ধত তর্জণী, তার নামের ওপর জীবন বাজি রেখে লড়তে থাকেন মুক্তিযোদ্ধারা। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর, অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর, বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ।