র‌্যাব পরিচয়ে প্রতারণা র‌্যাবের হাতেই ধরা

অপরাধ

নিজস্ব প্রতিবেদক : অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নৌ-বাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন নাজমুল হোসেন ও নাহিদ হাসান। পরে নিজেরা গড়ে তুলেছিলেন র‌্যাবের একটি ভুয়া দল। প্রতারণা করতে নিজেরা বানিয়ে নেন র‌্যাবের পোশাক। সঙ্গে রাখতেন খেলনা পিস্তল ও নৌবাহিনীর পোশাক। র‌্যাব পরিচয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল চক্রটি। বিশেষ করে রাজধানীতে জমি নিয়ে বিরোধ মীমাংসা, বাড়ি দখল ও ঠিকাদারি পাইয়ে দেওয়ার নামে সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে অর্থ হাতিয়েছে নিচ্ছিল তারা। গাজীপুরের কুনিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রটির হোতাসহ পাঁচজনকে আটকের পর এসব বিষয় জানতে পারে র‌্যাব।
মঙ্গলবার ভোরে চালানো ওই অভিযানে আটকদের কাছ থেকে দুটি খেলনা পিস্তল, পিস্তলের কভার, র‌্যাব লেখা দুটি জ্যাকেট, র‌্যাবের চারটি ভুয়া আইডি কার্ড, নৌবাহিনীর একটি পোশাক, একটি চাকু ও পাঁচ লাখ টাকার একটি চেকও উদ্ধার করা হয়।
আটকেরা হলেন নৌবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত ও এই দলের মূলহোতা নাজমুল হোসেন, নাহিদ হাসান এবং দলের সদস্য তাজুল ইসলাম, সুমন মিয়া ও সুচিত্র রবিদাস।
দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে আটক ব্যক্তিদের বিষয়ে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।
তিনি জানান, চক্রের সদস্যরা নিজেদের র‌্যাব পরিচয়ে সাধারণ মানুষকে ভয়-ভীতি দেখাতো। বিশেষ করে টাকার বিনিময়ে সাধারণ মানুষকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন বিচার সালিশের রায় নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসতো। চক্রটি জমি ও টাকা উদ্ধার, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি খাতের টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করছিল। তাছাড়া র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার সদস্য পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের জমি জায়গা, আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত অভিযোগের সমাধানের নাম করে ভুয়া স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিতো।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, সকালে আটক করায় তাদের সেভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি। প্রতারক চক্রটির দুইজন নৌবাহিনী থেকে গত বছর চাকরিচ্যুত হয়েছেন। এই দলের বাকি সদস্যরা আগে থেকেই বিভিন্ন প্রতারণার সঙ্গে জড়িত ছিল। তাদের কাছ থেকে যে টেন্ডারের কাগজ পেয়েছি সে বিষয়ে জানতে পেরেছি- সাধারণ মানুষকে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার নামে আশ্বস্ত করছিল এবং টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছিল। এছাড়া প্রতিনিয়ত র‌্যাব পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছিল বলে আমরা জানতে পেরেছি।


বিজ্ঞাপন