লোকসানের মুখে উত্তরের আলুচাষিরা

সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঠাকুরগাঁওয়ে গম ও আমন ধানের লোকসানের ধকল না কাটতেই এবার আগাম জাতের আলু চাষ করেও বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন জেলার চাষিরা। মওসুম শুরুর দিকে কিছুটা দাম পেলেও ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে দাম পড়ে যায়। এতে আলু চাষ করে বড় অঙ্কের লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষিদের। বর্তমানে বাজারে পুরনো আলুর সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকায় নতুন আলুতে চাহিদা কম দেখাচ্ছেন ক্রেতারা। আর এ কারণেই ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে দাবি এলাকার চাষীদের।
উত্তরের জেলাগুলোর লাভজনক ফসল হিসেবে আলু বেশ পরিচিত। ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গি, পীরগঞ্জ, রানীশংকৈল, হরিপুর ও সদর উপজেলার মাটি আলু চাষের উপযোগী হওয়ায় প্রতি বছর বেশি লাভের আশায় দুই ধাপে আলু চাষ করেন এ এলাকার চাষীরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ বছর ২৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। যার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৮ হাজার ৫০০ হেক্টর। মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টিতে অনেক জমির আলু নষ্ট হলেও আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে বলে দাবি করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
সদর উপজেলার আলুচাষী এসহাক মিয়া জানান, দুই একর জমিতে ২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে আগাম জাতের এক একর জমির আলু বিক্রি করেছেন ৭০ হাজার টাকায়। দিন দিন আলুর দাম কমতে শুরু করেছে। শেষ পর্যন্ত পুঁজি উঠবে কি না, সেই ভয় পাচ্ছি।
পীরগঞ্জের কৃষক সিরাজুল ইসলাম জানান, এবার পাঁচ একর জমিতে আলু চাষ করেছি। একরপ্রতি খরচ হয়েছে দেড় লাখ টাকা। আশা করেছিলাম একরপ্রতি ২ লাখ টাকার বেশি বিক্রি করতে পারব। এখন বাজারে আলু ১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় একরপ্রতি দাম মিলতে পারে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমরা যা খরচ করেছি তার তিন ভাগের এক ভাগও আসবে না।
আরেক চাষি মোতালেব জানান, বাজারে এখনো পুরনো আলুর সরবরাহ পর্যাপ্ত রয়েছে। পুরনো আলুর দাম কম হওয়ায় ক্রেতারা পুরনো আলুর দিকেই বেশি ঝুঁকছেন। সে কারণে নতুন আলুর চাহিদা কমেছে। এ জন্য আলুচাষিদের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে।


বিজ্ঞাপন