২৪ ঘন্টার মধ্যে পিবিআই কর্তৃক ময়মনসিংহ’র চাঞ্চল্যকর শরীফ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন আটক ৩

Uncategorized অপরাধ

নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ এক দিনের মধ্যে ময়মনসিংহ’র কোতোয়ালী থানা এলাকায় চাঁদা ভাগাভাগি ও দলীয় অন্তকোন্দলের জেরে সংঘঠিত চাঞ্চল্যকর শরীফ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও ঘটনার সহিত জড়িত ৩ আসামীকে গত ৮ এপ্রিল ভোর অনুমান সাড় ৪ টার সময় নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলা। গত ৬ এপ্রিল রাত অনুমান ১১ টা ৫৫ মিনিটের সময় কোতোয়ালী থানাধীন ২১০ মন্ডল প্লাজা চরপাড়ায় চৌধুরী ক্লিনিকের গলিতে শরীফ চৌধুরী @ শান্ত (২১) এর বুক, পেট, মুখ, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চাকু দিয়ে আঘাত করা রক্তাক্ত মৃতদেহ পাওয়া যায়। সংবাদ প্রাপ্তির পর পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলা চৌকস টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং উক্ত হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন সহ জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ছায়া তদন্ত শুরু করে। উক্ত ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে ময়মনসিংহ’র কোতোয়ালী থানার মামলা নম্বর—২৭, তাং,৭ এপ্রিল ধারা, ১৪৩/৩৪১/৩০২/৩৪ দঃ বিঃ দায়ের করলে পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলা স্বউদ্যেগে মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে।
পিবিআই প্রধান, অ্যাডিশনাল আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস এর দিক নির্দেশনায় মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আরিফুর রহমান এর নেতৃত্বে পিবিআই ময়মনসিংহ এর একটি চৌকস টিম ঘটনাস্থল সংলগ্ন বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। তারপর সিসিটিভি ফুটেজ নিবিড় পর্যালোচনায় ঘটনায় জড়িত আসামীদেরকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। আসামী সনাক্তের পর পিবিআই এর ময়মনসিংহ জেলার চৌকস একটি তদন্ত টিম গত ৮ এমপি ভোর অনুমান সাড়ে ৪ টার সময় নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানা এলাকার ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামী মোঃ রাকিবুল হাসান তপু (২৫), পিতা—মোঃ নূর মোহাম্মদ, সাং—কাশিগঞ্জসহ অপর দুই জন আসামী মোঃ শান্ত ইসলাম (২০), পিতা—মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, সাং—সানকিপাড়া, মোঃ আরিফুজ্জামান আরিফ (২২), পিতা—মোঃ কেরামত আলী, সাং—পরানগঞ্জ ভাটিপাড়া; সর্ব—থানা—কোতোয়ালী, জেলা—ময়মনসিংহদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, নিহত শরীফ চৌধুরী @ শান্ত এবং হত্যাকান্ডে জড়িত আসামীরা পরস্পর বন্ধু এবং এলাকায় একত্রে চলাফেরা করত। এছাড়াও তারা চরপাড়া এলাকার ফুটপথে অস্থায়ী দোকান হতে সাপ্তাহিক চাঁদা সংগ্রহ করত। গত ১০/১৫ দিন আগে নিহত শরীফ উক্ত বন্ধুবান্ধব ত্যাগ করে আলাদা গ্রুপ তৈরি করে এবং চাঁদা আদায়ে নিজের আধিপত্য বজায় রাখে। চাঁদার ভাগ পেতে অন্যদেরকেও তার সাথে যোগ দিতে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। ফলে আসামীগণও তার উপর প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে ওঠে। বিগত কয়েক দিন তাদের মধ্যে চরম উত্তেজনা চলমান থাকাবস্থায় ঘটনার দিন ৬ এপ্রিল রাত অনুমান ১১ টা ৫৫ মিনিটের সময় পূর্ব হতে ওৎ পেতে থাকা উক্ত আসামীগণ মন্ডল প্লাজা, চরপাড়া চৌধুরী ক্লিনিকের গলিতে ডিসিস্ট শরীফকে একা পেয়ে অতর্কিতে তার উপর হামলা করে এবং উপযুর্পুরি ছুরিকাঘাত করে গুরুত্বর জখম করে। তাকে স্থানীয় জনগণ দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। গ্রেফতার কৃত আসামী আরিফুজ্জামান আরিফ এর দেখানো ও সনাক্তমতে কোতোয়ালী থানাধীন পরানগঞ্জ ভাটিপাড়া গ্রামস্থ তার বাড়ীর পিছনের খড়ের পুঞ্জির ভিতর হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দু’টি চাকু উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সকল আসামী তাদের অত্র ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে।
এ বিষয়ে পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান, হত্যাকান্ডের সংবাদ প্রাপ্তির পর পিবিআই উক্ত হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন সহ জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ছায়া তদন্ত শুরু করে। নিহতের পিতা বাদী হয়ে ময়মনসিংহ’র কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করলে পিবিআই স্বউদ্যোগে মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে গত ৮ এপ্রিল ভোর অনুমান সাড়ে ৪ সময় নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানা এলাকার ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে মামলার ঘটনার সহিত জড়িত ৩ (তিন) গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তারপর বিধি মোতাবেক তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হলে ২ (জন) আসামী স্বেচ্ছায় মামলার ঘটনার সহিত জড়িত মর্মে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।


বিজ্ঞাপন