খাদ্য ও জ্বালানি হুমকি আর কত দিন চলবে

Uncategorized আন্তর্জাতিক

অর্থনৈতিক বিশ্লেষক ঃ ২০ টি ইউরোপীয় কোম্পানি গ্যাজপ্রম ব্যংক জেএসসি তে রুবল একাউন্ট খুলেছে। আরো প্রায় ১৪ টি কোম্পানি পেপারওয়ার্ক সম্পন্ন করেছে রুবলে একাউন্ট খোলার জন্য। ফিনল্যান্ডে গ্যাস সরবরা বন্ধ করা এবং ইউক্রেনের গ্যাস সরবরাহ লাইন বন্ধ করা সহ বিভিন্ন সিদ্ধান্তে ইউরোপের জ্বালানি নিরাপত্তা চরম হুমকিতে পড়েছে।
বাধ্য হয়ে ইউরোপ এখন রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপর অবরোধ পাশ কাটিয়ে, সেই সাথে পুতিনকে খুশি করতে রুবলে লেনদেনের উপায় নিয়ে ভাবছে। আমেরিকা চায় যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদী হোক। এতে রাশিয়ার ঘুরে দাড়াতে কয়েক যুগ লাগবে। বিশ্ব ক্ষমতার দৌড়ে রাশিয়ে ছিটকে পড়ুক এটাই মার্কিনদের জন্য জয়। রাশিয়ার সম্ভাব্য রিয়েকশন জেনে বুঝেই রাশিয়ার প্রতিবেশি দেশগুলিকে ন্যাটোতে যোগদানের টোপ দিয়েছে আমেরিকা। এক্ষেত্রে আমেরিকা সফল। কারন পোল্যান্ড, সুইডেনের এর মত দেশ এখন ন্যাটোতে যোগ দেয়ার পক্রিয়া শুরু করেছে।


বিজ্ঞাপন

অন্যায্য এই পরিস্থিতির ভুক্তভোগী এখন সারাবিশ্ব।

রাশিয়া বিষয়টি বুঝতে পেরেই গোল্ড রিজার্ভ বাড়াতে থাকে। যুদ্ধ শুরুর সময় রাশিয়ার গোল্ড রিজার্ভ দাঁড়ায় তাদের মোট রিজার্ভের ২২%। ৫০০০ রুবলে গ্রাম স্বর্নের গ্যারান্টি দিয়ে রাশিয়ার ঘোষনা রুবলের পতনকে শুধু ঠেকায়নি সেই সাথে ডলারের বিপরীতে রুবলকে এত শক্তিশালী করেছে যে এখন $১ এ ৬৪ রুবল পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্বের এরুপ পরিস্থিতিতে সাধারনত স্বর্নের দাম বাড়ার কথা। কিন্তু স্বর্নের দাম কমার সঠিক কারন বোঝা বেশ কঠিন। হয়ত রাশিয়া যাতে সুবিধা না করতে পারে জন্য স্বর্নের দাম কমানো হতে পারে। বলছিনা এটা সত্য। কিন্তু ম্যানুপুলেডেড প্রাইসের কথাটা উড়িয়ে দেয়া যায় না।
গমের ক্ষেত্রে ভারত মনে করেছিল তারা রাশিয়ার বাজার ধরবে এবং বিশ্বে গমের বাজার নিজেদের দখলে আনবে। কিন্তু উৎপাদন আশানুরূপ না হবার জন্য ভারত গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ভারতের গমের প্রধান আমদানিকারক বাংলাদেশ। প্রায় ৫৫% গম আমদানি হয় ভারত থেকে। বাংলাদেশের গমের বাজার নিশ্চিত ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গমের সাথে জড়িত বেকারি, বিস্কিট, থেকে শুরু করে খাদ্যের সাথে যুক্ত প্রায় সব শিল্প।

খুব বিশ্রী রকম বিশ্ব পরিস্থিতি চলছে বিশ্বে। এদিকে চীনের কোম্পানিগুলি পাকিস্তানের সাথে বৈঠকে দাবি করেছে যে তাদের বকেয়া ৩০০ বিলিয়ন রুপি পরিশোধ না করলে তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ বন্ধ রাখবে দেশটিতে। এরুপ পরিস্থিতি পাকিস্তানের উঠতি গার্মেন্টস শিল্প থেকে শুরু করে প্রায় সব খাতে বাজে প্রভাব ফেলবে। আশঙ্কা হল, বিশ্ব পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকলে উপ মহাদেশে দেউলিয়া হিসাবে পাকিস্তানের নাম আসম্ভব নয়। দেশটি সামরিক বাহিনীর বাজেট কর্তনের সাহস এখনো রাখেনা।
জ্বালানি নিয়ে ইউরোপে যেটা হচ্ছে অর্থাৎ যদি ইউরোপ রুবলে পেমেন্ট করতে রাজি হয় তবে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি আশা করা যায়। যুদ্ধ মানবতার সবথেকে বড় শত্রু।

এই উপলব্ধি যদি বিশ্বনেতাদের থাকত তবে হয়ত আমরা এই বিশ্বে কিছুটা হলেও শান্তি আনতে পারতাম। অস্থির বিশ্বকে শান্ত করতে পারতাম।